পাপিয়ার দুই সহযোগী ফের রিমান্ডে

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২০ ১৫:০২ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৯১ বার।

নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউয়ের দুই সহযোগীকে ফের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।

বিমানবন্দর থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় রোববার পাপিয়ার দুই সহযোগীর ফের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ দিদার হোসাইন আসামিদের রিমান্ডের এ আদেশ দেন। রিমান্ডে যাওয়া দুই সহযোগী হলেন- সাব্বির খন্দকার ও শেখ তাইবা নূর।

আসামিদের ৫ দিনের রিমান্ড শেষে রোববার আদালতে হাজির করে ফের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো.সাইফুল ইসলাম আসামিদের রিমান্ডের এ আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা চাঞ্চল্যকর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের সংঘবদ্ধ অপরাধের সঙ্গে জড়িত। আসামিরা অবৈধ মাদক, অস্ত্র, চোরাচালান, অর্থের বিনিময়ে জমি দখল-বেদখল ও অনৈতিক ব্যবসাসহ নানাবিধ অপরাধের সঙ্গে জড়িত বলে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

এ ছাড়া আসামিরা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিকও হয়েছে। আসামিরা পাপিয়া ও তার স্বামী মো. মফিজুর রহমানের সহযোগিতায় প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল ও স্বল্প শিক্ষিত নারীদের প্রলোভনের মাধ্যমে সংগ্রহ করত এবং তাদের দিয়ে বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত ও ব্যবহার করে তদবির বাণিজ্য করত। এ সব করে আসামিরা আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যায়।

গুলশান থানাধীন পাঁচতারকা হোটেল ওয়েস্টিনে গত বছরের ১২ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ২০ দিন এবং চলতি বছরে ৫ জানুয়ারি থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ৫১ দিন ওই হোটেলের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটসহ আরও দুটি রুম ভাড়া নিয়ে তারা সবাই অবস্থান করেন। ওই রুমের প্রতিদিনের ভাড়া প্রায় আড়াই লাখ টাকা। ভাড়া বাবদ আসামিরা গত বছর মোট ৮১ লাখ ৪২ হাজার ৮৮৭ টাকা ও চলতি বছর ১ কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করেন। ১ কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা বারের বিলসহ আসামিরা ওই হোটেলের ভাড়া বাবদ মোট ২ কোটি ৮ লাখ ৯২ হাজার ৮৮৭ টাকা ব্যয় করেন। মামলার ঘটনার বিষয়ে আসামিদের আরও নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

রাষ্ট্রপক্ষে আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই মাহবুবুর রহমান আসামিদের রিমান্ডের শুনানি করেন। অপরদিকে আসামিপক্ষে মো. সারোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামিদের রিমান্ডের ওই আদেশ দেন।

এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পাপিয়া ও তার স্বামীসহ এ দুই সহযোগীর এই মামলায় পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এ মামলায় পাপিয়া ও তার স্বামীর রিমান্ড শেষ হলেও শেরেবাংলানগর থানার অপর দুই মামলায় তারা রিমান্ডে রয়েছেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি পাপিয়া দম্পতির পৃথক তিন মামলায় মোট ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

আদালত সূত্র জানায়, ২২ ফেব্রুয়ারি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিমানবন্দর গোলচত্বর এলাকায় র্যা বের একটি টহল টিম ম্যাজিস্ট্রেটের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে। দুপুর দেড়টার দিকে বিমানবন্দর থানাধীন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দুই নম্বর বহির্গমন টার্মিনালের ছয় নম্বর স্টাফ গেটের সামনে থেকে পাসপোর্ট, নগদ টাকা ও বিদেশি মুদ্রা এবং জাল নোটসহ পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন, সহযোগী সাব্বির খন্দকার, শেখ তাইবা নূরকে আটক করা হয়।

পরে জিজ্ঞাসাবাদে আসামি শামীমা নূর পাপিয়া ও মো. মফিজুর রহমানের দেয়া তথ্যানুসারে শেরেবাংলানগর থানাধীন ফার্মগেট ইন্দিরা রোডস্থ বাসায় ২৩ ফেব্রুয়ারি ভোর ৫টা ১০ মিনিটের দিকে অভিযান পরিচালনা করে অস্ত্র, মদ, নগদ অর্থ ও ভারতীয় রুপি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শেরেবাংলানগর থানায় দুটি ও বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা করা হয়।