ছাদের সংস্কার কাজ চলছে

বগুড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকে লোহার সাটারিং পড়ে ৩জন আহত

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২০ ১০:০০ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২৪৮ বার।

বগুড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরে ভবনের ছাদ সংস্কারের জন্য লাগানো সাটারিং (লোহার পাইপ) পড়ে ৩ ব্যক্তি আহত হয়েছেন। রোববার দুপুর প্রায় সাড়ে ১২টার দিকে ওই ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার পর পরই ব্যাংকের লেনদেন প্রায় দেড় ঘন্টা বন্ধ রাখা হয়।
আহতরা হলেন- শহরের কামারগাড়ি এলাকার মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন নয়ন (৪০), রহমাননগর এলাকার চাঁন মিয়ার ছেলে আরমান আলী (৩৮) ও নাটাইপাড়ার বিশু সরকারের ছেলে জীবন কুমার সরকার (৪০)। তারা তিনজই ছেঁড়া-ফাটা নোট বিনিময়ের ব্যবসা করেন। তাদেরকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহত তিনজনই মাথায় আঘাত পেয়েছেন। 
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ঘটনাটি তদন্তের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ২ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়েছে। ওই ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন থেকে মেরামত কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রাহকদের মূল ভবনের ভেতরে প্রবেশ না করিয়ে বিকল্প উপায়ে  কিভাবে লেনদেন কার্যক্রম সম্পন্ন করা যায় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বগুড়ার নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্বে নিয়োজিত মহাব্যবস্থাপক জগন্নাথ ঘোষ জানান, ১৯৮০ সালে নির্মিত ব্যাংক ভবনের ছাদ দুর্বল হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলে ছাদ চুয়ে পানি সরাসরি ব্যাংকের ভেতরে পড়ে। ছাদটি সংস্কারের জন্য প্রধান কার্যালয় থেকে কিছুদিন আগে টেÐার আহবান করা হয়। টেÐারে গেøাবাল এন্টারপ্রাইজ নামে ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ওই ছাদ সংস্কারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে গেল বছরের ১৪ নভেম্বর তারা কার্যাদেশ পেলেও চলতি বচরের মার্চের প্রথম দিকে তারা কাজ শুরু করে। তিনি জানান, সংস্কার কাজের জন্য তারা ৭ মার্চ শনিবার ব্যাংকের মূল ভবনের মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত লোহার তৈরি বিপুল সংখ্যক সাটারিং (পাইপ) স্থাপন করেন। রোববার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে ছেঁড়া-ফাটা টাকা বিনিময়ের কাউন্টারের সামনে স্থাপন করা একটি লোহার পাইপ পড়ে যায়। 
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এর পর পরই ভবনের অভ্যন্তরে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয়। অনেক প্রাণভয়ে ছোটাছুটি শুরু করে। ফলে ব্যাংকের লেনদেন কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যায়। পরে তিজনকে ভবনের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। 
বাংলাদেশ ব্যাংক বগুড়ার মহাব্যবস্থাপক জগন্নাথ ঘোষ বলেন, আমরা শুনেছি কোন এক মহিলা গ্রাহকের ধাক্কায় লোহার পাইপটি স্থানচ্যুত হয়ে পড়ে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর দুপুর ২টার দিকে লেনদেন কার্যক্রম আবারও শুরু হয়।
ব্যাংকের কার্যক্রম চালু রেখে সংস্কার কাজ করা ঠিক হচ্ছে কি’নাÑএমন প্রশ্নের জবাবে জগন্নাথ গোষ বলেন, ‘বিকল্প কোন জায়গা না থাকায় লেনদেন চলা অবস্থায় সংস্কার কাজ চালাতে হচ্ছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দূর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
বগুড়া সদর থানার ওসি এস এম বদিউজ্জামান জানান, আহত ৩জনই ছেঁড়া-ফাটা নোট বিনিময়ের ব্যবসা করেন। বগুড়া পৌরসভার স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরিফুর রহমান জানান, আহত তিনজনের মধ্যে সাজ্জাদ হোসেন নয়নের অবস্থা গুরুতর। তাকে সরাসরি শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর আরমান ও জীবন নামে অপর দু’জনকে প্রথমে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশেই ২৫০ শয্যার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাদেরকে শজিমেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগীয় প্রধান ডা. সুশান্ত কুমার সরকার জানান, সাজ্জাদ হোসেন নয়নের মাথায় বেশ কয়েকটি সেলাই দিতে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘মাথায় সিটিস্ক্যানের পর তার অবস্থা বোঝা যাবে।’