দু‘দকে মামলা হওয়ায় ক্ষিপ্ত সাব-রেজিষ্ট্রার

বগুড়ার আদমদীঘিতে অভিযোগকারির জমি রেজিষ্ট্রীতে হয়রানি, এজলাসে উত্তেজনা

আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি  
প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২০ ১৩:০৭ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১০৯০ বার।

সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করতে দুদকে মামলা হওয়ায় বগুড়ার আদমদীঘি সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে অভিযোগকারি জমির দলিল রেজিষ্ট্রী করতে এসে বিলম্ব করাকে কেন্দ্র করে সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাব-রেজিষ্ট্রারের মধ্যে বাকবিতন্ডা দলিল আটকে রেখে হয়রানি ও এজলাসে উত্তেজনার ঘটনা ঘটেছে।  বুধবার বিকেলে সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসে এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।


জানাযায়, আদমদীঘি উপজেলার কলসা মৌজার ৮নং খতিয়ানে ১৬৭ দাগে .৩৩শতক সম্পত্তিসহ মোট ১,১৮ শতক সম্পত্তি নওগাঁর স্নেহলতা রায়, শমরেন্দ্র রায় ও বিরেন্দ্র নাথ রায় ভারতবাসি হওয়ায় সরকারি গেজেটে ২০১২ সালের ১৫ মার্চ পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসাবে ক তফসিলভুক্ত করা হয়। সেই সরকারি সম্পত্তি আদমদীঘির সাব-রজিষ্ট্রার আবু ইউসুফের সাথে যোগ সাজশে বিগত ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর আদমদীঘি সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে ৩৯০৬ নং দলিলমুলে গ্রহিতারা ৯লাখ ৬৫ হাজার টাকা বিক্রি দেখিয়ে জমি রেজিষ্ট্রী করে। এ ঘটনায় সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত আবেদন করেন। পরে দুদক সরজমিনে তদন্ত শেষে আদমদীঘির সাব-রেজিষ্ট্রার আবু ইউসুছসহ ১২জনের বিরুদ্ধে প্রতারনার ও জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি সম্পত্তি রেজিষ্ট্রী ও ক্রয় সংক্রান্ত মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।


এদিকে সান্তাহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু কলসা মৌজায় মহিউদ্দিন হিরার নিকট,৩শতক জায়গা ক্রয় করে গতকাল বুধবার উক্ত সম্পত্তি দলিল রেজিষ্ট্রী করার জন্য সরকারি সকল নিয়ম মেনে সাব-রেজিষ্ট্রীর আবু ইউসুফের নিকট দলিল লেখক রুহুল আমিন রনজুর মাধ্যমে দাখিল করে। এরপর দলিলে ক্রেতা এরশাদুল হক টুলুর ছবি দেখে দুদকে মামলার অভিযোগকারিকে চিনতে পেরে দলিল রেজিষ্ট্রী না করে আটকে রেখে কালক্ষেপন ও প্রায় আধা ঘন্টা তাকে এজলাসে দাঁড়িয়ে রেখে অন্যান্য দলিল রেজিষ্ট্রী করতে থাকেন। এসময় ক্রেতা প্রতিবাদ করে জানতে চায় তার দলিল রেজিষ্ট্রী করতে বিলম্ব কেন। এসময় সাব-রেজিষ্ট্রার আবু ইউসুফ ক্ষিপ্ত হয়ে তার বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি রেজিষ্ট্রী করা সংক্রান্ত দুদকে অভিযোগ করায় তার দলিল রেজিষ্ট্রী করা যাবেনা বলে জানায়। এসময় সাব-রেজিষ্ট্রার ও ক্রেতা এরশাদুল হক টুলু বাকবিন্ডায় লিপ্ত হলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এরপর উপজেলা নির্বাহি অফিসার একেএম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ, কুন্দগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল হোসেনসহ নেতৃবর্গ বিষয়টি নিস্পত্তি করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। জমি ক্রেতা সান্তাহার ইউপি চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু জানান, সান্তাহার ইউপির সরকারি সম্পত্তি জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল রেজিষ্টী করায় ওই সাব-রেজিষ্ট্রার আবু ইউসুফের বিরুদ্ধে উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ ও পরে দুদকে মামলা হওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার দলিল রেজিষ্ট্রী না করে কালক্ষেপন ও হয়রানি করে। পরে দুদকে মামলার অভিযোগকারি এরশাদুল হক টুলুর ওই দলিল রেজিষ্ট্রী করা হয়।


দলিল লেখক সমিতি সাধারণ সম্পাদক সামছুল হক সাব-রেজিষ্ট্রার সঠিক কাজ করেনি বলে জানান। সাব-রেজিষ্ট্রার আবু ইউসুফ জানায় আমার বিরুদ্ধে অবিযোগ করেছে সেজন্য ক্ষিপ্ত হতেই পারি। উপজেলা নির্বাহি অফিসার একেএম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসাবে রাগ অনুরাগ রাখা ঠিক নয়।