ইউরোপ-আমেরিকান তরুণীদের টার্গেট করে ফাঁদ পাতেন ইমন

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২০ ১২:২৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৮০ বার।

স্ত্রী-সন্তানের তথ্য গোপন করে টানা দু’ই বিদেশিনীকে বিয়ে করেছেন হাবিবুল বাশার ওরফে ইমন (৪০)। ফেসবুকসহ বিভিন্নভাবে ইউরোপ-আমেরিকার সুন্দরী মেয়েদের টার্গেট করে বিয়ের নাটক করেন ইমন। তার আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে ইউরোপ অথবা আমেরিকায় পাড়ি জমানো। চাঁদপুরের সন্তান ইমন কক্সবাজারে একটি হোটেলের ম্যানেজার ছিলেন। বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় একটি হোটেলের ফ্রন্ট-ডেস্ক ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করছেন। কর্মস্থলের পরিচয়কে পুঁজি করে হোটেল কক্ষেই বিয়ের নাটকের আগেই সরল বিশ্বাসী মেয়েদের প্রতারণা ফাঁদে ফেলছেন। কক্সবাজারের হোটেলে ম্যানেজারের চাকরি চলে গেছে ইতালির এক তরুণীকে বিয়ের নাটক সাজানোর পর। সেটি ২০১৬ সালের ঘটনা। সেই তরুনী পলা খান তৃপ্তি ইতালির নাগরিক। পেশায় আইনজীবী। ইমনের কথায় মজে গিয়ে ইতালি থেকে কক্সবাজারে গিয়ে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হবার পর জানতে পারেন, ইমন বিবাহিত। এরপর তৃপ্তি ইমনকে পুলিশে দিয়েছিলেন। এর ফলে হোটেলের চাকরি থেকে বরখাস্ত হন ইমন। ইমনকে তালাক দিয়ে তৃপ্তি পাড়ি দিয়েছেন আপন গন্তব্যে।

এরপর নিউইয়র্কে বসবাসরত শারমিন আকতারকে (২৫) প্রেম নিবেদন করেন ইমন। তার সুদর্শন চেহারায় শারমিন আকৃষ্ট হন। নিউইয়র্কে একটি বহুজাতিক কোম্পানীর কর্মী শারমিন খুব সহজেই ইমনের ডাকে সাড়া দিয়ে ছুটে যান ঢাকায়। ঢাকা থেকে কক্সবাজার। ইমন তাকে জানান, তার স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। তবে তাকে তালাকের প্রক্রিয়ায় রয়েছেন। আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেই বিয়ে করতে আপত্তি থাকবে না। গত বছরের মে মাসে তাদের তালাক সম্পন্ন হয় এবং শারমিন ঢাকায় গিয়ে বান্ধবীর বাসায় ইমনকে বিয়ে করেন। এরপর হানিমুনে যান থাইল্যান্ডে। ৬ দিন কাটান সেখানে। ওই সময়েই স্পন্সর করতে অবিরতভাবে চাপ দিতে থাকেন ইমন। শারমিন ইমনকে বলেন, নিউইয়র্কে ফিরেই সবকিছু জমা দেবেন। কিন্তু ইমন তা মানতে নারাজ।

শারমিন নিউইয়র্কে ফিরে নিশ্চিত হন, তার আগে ইতালির একজনকে বিয়ে করেছিলেন এবং প্রথম স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস লিজার সাথেও তার তালাক হয়নি। সবকিছু সাজানো।

লিজা তাকে টেলিফোনে জানিয়েছেন, ইমনের ভাড়া করা বাড়িতে ৬ বছর বয়সী পুত্রসহ বসবাস করছেন। ইমনও তাদের সঙ্গেই আছেন। তবে মাঝেমধ্যেই ইমন উধাও হয়ে যান। লিজা আরও জানান যে, বিদেশে যাবার লোভেই ইমন ইউরোপ-আমেরিকার তরুনীদের টার্গেট করে। শারমিনকে ছাড়ার পর এখন আরেকজনকে নিয়ে হোটেলে বিয়ের মহড়া দিচ্ছেন ইমন-এমন সন্দেহও পোষণ করেন লিজা। কারণ, কয়েকদিন থেকেই ইমন তার সেলফোন রিসিভ করছেন না।

শারমিন আরও অভিযোগ করেছেন, ইমন তাকে হুমকি দেয় গ্রিনকার্ড বাতিলের। এমনকি বাংলাদেশে গেলে খুনের হুমকিও দিচ্ছে।

শারমিন বলেন, ইমনের সন্তান এসেছিল আমার গর্ভে। কিন্তু সেটি আমি পরিত্যাগ করেছি। এমন ভণ্ড ব্যক্তির কোন চিহ্ন রাখতে চাই না। ইমনের সাথে পরিচয় ঘটার পর আমি অনেক অর্থ ব্যয় করেছি তার জন্যে। বিয়ের সময় সবকিছু করেছি। থাইল্যান্ডে হানিমুনের খরচও আমি বহন করেছি। বুঝতে পারিনি সে এতটা লম্পট। আমি এই প্রতারকের বিরুদ্ধে আদালতে যাচ্ছি। ইতিমধ্যেই ঢাকায় একজন আইনজীবীর সাথে কথা হয়েছে। আমি চাই না, আর কোন মেয়ের জীবন সে নষ্ট করুক। 

ইমনের প্রথম স্ত্রী লিজা জানান, আমি মা-বাবাসহ আত্মীয়-স্বজনকে ঘটনাগুলো অবহিত করেছি। চেষ্টা করছি ওকে সুপথে ফেরাতে। আমার সন্তানের কথা বিবেচনায় রেখে সকল যন্ত্রণা সহ্য করছি। তারপরও যদি সে সংশোধিত না হয়, তাহলে নিজের ভাগ্য অবশ্যই বেছে নেব। তবে আমি চাই না যে, আর কোন মেয়ের জীবন সে নষ্ট করুক।

এ সংবাদদাতাও একাধিকবার চেষ্টা করেছেন ইমনের বক্তব্য জানার জন্যে। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি।