করোনার থাবা ভয়ঙ্কর হচ্ছে ভারতে; বিভিন্ন রাজ্যে 'শাটডাউন'

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২০ ০৭:৫৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৮৮ বার।

করোনার থাবা ক্রমশ ভয়ঙ্কর হচ্ছে ভারতে। দেশটিতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। শনিবার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮৩। বৃহস্পতিবার কর্নাটকে করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। সৌদি থেকে  কয়েক দিন আগে ওই বৃদ্ধ দেশে ফিরেছিলেন বলে জানা গেছে। এদিকে, গতকাল শুক্রবার দেশটিতে করোনাভাইরাসে আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। ভারতে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২-এ । এদিকে, করোনাভাইরাসের কারণে দেশটির কয়েকটি রাজ্যে স্থবিরতা তৈরী হয়েছে। 

জানা গেছে, শুক্রবার পূর্ব দিল্লিতে করোনাভাইরাসে ৬৮ বছর    এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। 

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মৃত নারী আগে থেকেই হাই ব্লাড প্রেসার ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। মৃতার ছেলে গত মাসে সুইজারল্যান্ডে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হন। ছেলের সংস্পর্শে এসেই মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ায় ওই নারীর শরীরে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে, মৃতের ছেলে গত ৭ মার্চ জ্বর, সর্দি-কাশি নিয়ে দিল্লির রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যান। পরীক্ষায় তাঁর দেহে করোনা জীবাণু ধরা পড়ে। ফলে তাঁর পরিবারকেও ডাক্তাররা পরীক্ষা করেন। দেখা যায়, তাঁর মা-ও ওই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। দুজনকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৯ মার্চ থেকে ওই নারীর অবস্থার অবনতি হয়। কোভিড-১৯ এর পাশাপাশি তাঁর নিউমোনিয়া হয়েছিল। তাঁকে আইসিইউ-তে রাখা হয়। ১৩ মার্চ তিনি মারা যান।

করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি অধিকাংশ রাজ্য সরকরাই সতর্কতামূলক নানা পদক্ষেপ করেছে। ভীড় বা জমায়েত এড়াতে সামাজিক মেলামেশা, বিবাহ অনুষ্ঠান, স্কুল, কলেজ, সিনেমা হল, পাব, ক্লাব সাময়িক সময়সীমা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।

ভারতে কর্নাটকেই করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। করোনা ভাইরাস প্রকোপের ফলে কর্নাটকে একসপ্তাহের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল সব বিশ্ববিদ্যালয়, শপিং মল ও ক্লাব। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা জানিয়েছেন, প্রয়োজন ছাড়া কেউ ভ্রমণ করবেন না। সামার ক্যাম্প, বিভিন্ন স্পোটিং ইভেন্টও বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার।

মহারাষ্ট্রেও সিনেমা হল, সুইমিং পুল, জিম, স্টেডিয়াম, অডিটোরিয়াম বন্ধের নির্দেশ জারি হয়েছে। থানে, নভি মুম্বই, নাগপুর, পুনে, পিম্পিতে স্কুল-কলেজ ৩০ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, বিহার, মধ্যপ্রদেশেও নির্দেশ জারি করে স্কুল কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সামাজিক মেলামেশা এড়াতে বেশ কয়েকটি রাজ্যে চিড়িয়াখানা, পার্কও বন্ধ রাখার কথা জানানো হয়েছে। একই পদক্ষেপ করা হয়েছে দিল্লি, কেরালা, জম্মু-কাশ্মীর, মণিপুর ও উত্তরাখণ্ডেও।

এদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় কেরালা, কর্নাটক ও মাহারাষ্ট্রে নতুন ১০ করোনা জীবাণু আক্রান্তের খবর মিলেছে। ভারতে করোনা মহামারির আকার নেয়নি বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব প্রীতি সুদান। করোনা আতঙ্কে গত বুধবার থেকে আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সমস্ত ভিসা স্থগিতের নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। একমাসের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হলো সীমান্তও। ৩৭টির মধ্যে মাত্র ১৯টি চেক পয়েন্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক সড়ক যোগাযোগ রক্ষিত হচ্ছে। বিমান ও স্থলবন্দরে জারি রয়েছে স্ত্রিনিং-এর ব্যবস্থা।