মুজিববর্ষ উদযাপন

বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পড়ে পরীক্ষা দিলেন বগুড়া আঃ হক কলেজের শিক্ষার্থীরা

অরূপ রতন শীল
প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২০ ০৯:৪৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৬০২ বার।


বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটির কথা অনেক শুনেছি। তবে আজ কিনবো, কাল কিনবো- এমন করে আর কেনা হয়নি। ফলে বইটি পড়াও হয়ে উঠেনি। কিন্তু এবার যখন কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই বইটির ওপর পরীক্ষা নেওয়ার কথা জানালেন তখন তা ভালভাবে পড়লাম। আর বঙ্গবন্ধুকে নতুন করে জানারও সুযোগ পেলাম। এটা আমার জন্য বড় পাওয়া।’- বলছিলেন বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মাইশা ফারহানা।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্য তাঁর লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইয়ের পাঠ মূল্যায়নের (পরীক্ষা) আয়োজন করেন সরকারি আজিজুল হক কলেজ কর্তৃপক্ষ। রোববার দুপুরে কলেজের নতুন ভবন এবং উচ্চ মাধ্যমিক ভবনে পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত ওই পাঠ মূল্যায়নে উচ্চ মাধ্যমিক থেকে মাস্টার্স পর্যায়ের মোট ৬১৮ শিক্ষার্থী অংশ নেন। 
উচ্চ মাধ্যমিক ভবনে একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির ২৩৮ জন এবং নতুন ভবনে অনার্স ও মাস্টার্সের ৪৮০জন পরীক্ষায় বসেন। এমসিকিউ পদ্ধতির এই পরীক্ষায় মোট ৫০টি প্রশ্ন রাখা হয়। দুপুর ১২টায় উভয় ভবনে একযোগে পরীক্ষা শুরু হয়। প্রতিটি প্রশ্নের জন্য ৩০ সেকেন্ড করে ২৫ মিনিট সময় দেওয়া হয়। আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মদিনে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া ১৭ শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হবে।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শাজাহান আলী জানান, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন এবং পরীক্ষা গ্রহণের জন্য গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মাহাতাব হোসেন মণ্ডলের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। কমিটির অন্য ৬ সদস্য হলেন- রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মতিউর রহমান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা চৌধুরী, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুব্রত কুমার সাহা, বাংলা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ড. মীর ত্বাইফ মামুন মজিদ, মার্কেটিং বিভাগের প্রভাষক ইব্রাহীম হোসেন এবং বাংলা বিভাগের প্রভাষক লাভলু সরকার। 
পরীক্ষা শেষে কথা হয় অর্থনীতির (মাস্টার্স) শেষ পর্বের ছাত্র নাঈম সরকারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি আমি প্রায় ৩ বছর আগে কিনেছি। এ পর্যন্ত কয়েকবার পড়েছি। বইটিতে ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচারে গোপালগঞ্জে যাওয়ার পথে বঙ্গবন্ধুকে একনজর দেখার জন্য শত শত নারীর রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকার বর্ণনা রয়েছে। ওই অংশটুকু পড়ে তাঁকে সত্যিকারেই একজন জননেতা মনে হয়েছে।
মামুনুর রশিদ নামে গণিত বিভাগের অপর এক শিক্ষার্থী জানান, অনেক খুঁজেও বইটি তিনি কিনতে পারেনি নি। যে কারণে মোবাইল ফোনে অ্যাপসের মাধ্যমে আমাকে পড়তে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আত্মজীবনীতে ছোট বেলায় বঙ্গবন্ধুর অসুস্থতার বর্ণনা রয়েছে। কিন্তু সেই অসুস্থতা সত্তে¡ও দেশ নিয়ে তাঁর চিন্তার কোন কমতি ছিল নাÑএটা আমার খুব ভাল লেগেছে।’ অন্য কয়েকজন শিক্ষার্থী  বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী নিয়ে পাঠ মূল্যায়নের প্রশংসা করে বলেছেন, বর্তমানে প্রতিযোগিতামূলক যত পরীক্ষা হয় তাতে মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত বিষয়গুলো কমন থাকে। সে কারণে তারা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী অনেকবার পড়েছেন। কিন্তু তার পাঠ মূল্যায়নের কোন সুযোগ তারা পাচ্ছিলেন না। বহু কাক্সিক্ষত সেই সুযোগটি তারা পেয়ে খুব খুশি।
সরকার আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শাজাহান আলী জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির জনক। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। তাঁর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না। জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে শিক্ষার্থীরা যাতে তাঁকে জানার সুযোগ পান সেজন্য আমরা কলেজের পক্ষ   থেকে তাদের জন্য এক ‘চলো অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়ি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে জানি’ শীর্ষক কর্মসূচী গ্রহণ করি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটির পাঠ মূল্যায়নের জন্য আমরা কলেজের প্রত্যেকটি ডিপার্টমেন্টে ২০টি করে বই সরবরাহ করি। তাছাড়া গত এক মাস ধরে আমিসহ শিক্ষকরা প্রত্যেক ডিপার্টমেন্টে গিয়ে প্রচার চালিয়েছি। যেহেতু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ১৭ মার্চ তাই সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত ১৭শিক্ষার্থীকে ওইদিন পুরস্কৃত করা হবে।’