কানাডাফেরত শুনেই ঢামেকে আতঙ্কে ছুটোছুটি, অতঃপর তরুণীর মৃত্যু

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২০ ১৩:২৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৭০ বার।

কানাডাফেরত নাজমা আমিন (২৪) নামের এক তরুণী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। শনিবার দুপুরে সার্জারি বিভাগের ২১৯ নম্বর ওয়ার্ডে তার মৃত্যু হয়।

তবে ওই তরুণীর মৃত্যুর জন্য চিকিৎসকদের অবহেলাকে দায়ী করেছেন তার বাবা আমিন উল্লাহ। তার দাবি, মেয়ে কানাডা থেকে ফিরেছে শুনে চিকিৎসক ও নার্সরা ‘করোনা’ সন্দেহে তার চিকিৎসা করেনি। খবর যুগান্তর অনলাইন 

আমিন উল্লাহ জানান, নাজমা আমিন ১০ মাস আগে কানাডা গিয়েছিল গ্রাজুয়েশন করতে। বিশ্বব্যাপী করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পরিবারের অনুরোধে সে ৯ মার্চ দেশে ফিরে আসে। ১৩ মার্চ দুপুরে পেটে প্রচণ্ড ব্যথা হলে তাকে ধানমণ্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাকে একটি ইনজেকশন পুশ করার পর বাড়ি নিয়ে আসা হয়।

তিনি বলেন, রাতে মেয়ের আবার পেট ব্যথা অনুভূত হলে তাকে মোহাম্মদপুরের আল মানারাহ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে তাকে তেজগাঁওয়ের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে আইসিইউ খালি না পেয়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু তারা ঢামেকে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

আমিন উল্লাহ বলেন, শনিবার ভোর ৬টায় ঢামেকে আনা হয় নাজমাকে। সার্জারি বিভাগের ২১৯ নম্বর ওয়ার্ডে অধ্যাপক ডা. এ বি এম জামালের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়।

‘ঢামেকে নেয়ার পর তাকে স্যালাইন-অক্সিজেন দেয়া হয়। নাকে পাইপ দিয়ে পেটের ময়লা বের করা হয়। ১২টার সময় তার পেট ব্যথাটাও কিছুটা কমে। ১২টার পর ওয়ার্ডের নার্সদের শিফট পরিবর্তন হয়।’

তিনি বলেন, নতুন শিফটের ডিউটিরত ডাক্তার-নার্সরা এসে আমার মেয়ের কাছে সমস্যা ও রোগের বিষয়ে জানতে চান। আমার মেয়ে প্রথমেই বলে যে, সে কানাডা থেকে এসেছে ৯ মার্চ। এই শুনেই নার্সরা দূরে চলে যান। এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন।

এরপর থেকে আমার মেয়েকে কোনো চিকিৎসা দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

‘একপর্যায়ে আইইডিসিআর থেকে এসে আমার মেয়ের লালাসহ অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। দুপুর ১টার দিকে আমার আমার সামনেই মেয়েট মারা যায়।’

আমিন উল্লাহ বলেন, মেয়ের মৃত্যুর পর আইইডিসিআর থেকে আমার মেয়ের করোনা টেস্টের রেজাল্ট দেয়া হয়। রেজাল্ট ছিল ‘নেগেটিভ’।

এরপর বিকাল ৫টার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ আমাকে বুঝিয়ে দেয়।

এ ব্যাপারে অধ্যাপক ডা. এ বি এম জামাল গণমাধ্যমকে বলেন, মেয়েটি কানাডা থেকে এসেছে শুনে ওয়ার্ডে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নার্সরাও আতঙ্কিত ছিল। পাশাপাশি ওয়ার্ডে অন্য রোগীদের স্বজনরাও সেখানে ছোটাছুটি শুরু করেন। তবে সে করোনা আক্রান্ত ছিলেন না। রেজাল্ট আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বুধবার মেয়েটি ফার্মেসি থেকে একটি ব্যথানাশক ওষুধ কিনে খেয়েছিল। খালি পেটে এসব ওষুধ খেলে অন্ত্র ফুটো হয়ে যায়। আমরা সন্দেহ করছি, তার অন্ত্রে ছিদ্র ছিল বা ফাটল ছিল। তাকে যখন ভর্তি করা হয়, তখন তার শরীর থেকে প্রচুর তরল বের হয়ে গেছে।