এলি ও নেলি: নারী থেকে পুরুষ-তারপর আবার নারীতে ফেরত আসার গল্প
পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মানুষ লিঙ্গ পরিবর্তন করেন, তারা দ্বিতীয়বার আর সে নিয়ে চিন্তা করেন না। কিন্তু এলি আর লুসির ক্ষেত্রে বিষয়টি ছিল অন্যরকম।
বেলজিয়ামের নাগরিক এলির বয়স ২১ বছর। তার জার্মান সঙ্গী নেলির বয়স ২৪। তারা দুজনেই পুরুষালি হয়ে ওঠার জন্য টেস্টোস্টেরন গ্রহণ করেন, অপারেশন করে তাদের স্তন কেটে ফেলেন।
কিন্তু এখন আবার তারা তাদের জন্মের সময়কার লিঙ্গ-নারীতে ফিরে এসেছেন।
নেলি বলছেন, ''আমি খুশী যে, আমার জরায়ু কেটে বাদ দিয়ে দেই নি। যার মানে হলো আমি এখন হরমোন গ্রহণ বন্ধ করতে পারবো এবং আমাকে দেখতে অনেক বেশি নারীসুলভ লাগবে।''
গত বছর তারা সিদ্ধান্ত নেন, তারা দুজনেই টেস্টোস্টেরন গ্রহণ বন্ধ করে দেবেন এবং 'হি-র বদলে 'শি' বা 'হার' সম্বোধনে ফিরে যাবেন। আস্তে আস্তে তাদের শরীরে নারীসুলভ অঙ্গগুলো তৈরি হতে শুরু করে।
তাদের চেহারা অনেকটা নমনীয় হয়ে ওঠে, শরীরের বাকগুলো দেখা দেয়। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে টেস্টোস্টেরন গ্রহণ করার ফলে কিছু প্রতিক্রিয়াও দেখা যায়।
''আমার কণ্ঠ আর কখনোই আগের মতো হবে না,'' বলছেন নেলি। ''আমি গান গাইতে পছন্দ করতাম, কিন্তু আমার গলা আর কখনোই গানের মতো হচ্ছে না। যখন আমি কাউকে টেলিফোন করি, তারা আমার গলা শুনে পুরুষ বলে ধরে নেয়।''
এই দুই তরুণীর গল্পটা বেশ জটিল।
শিশু বয়সে একটি মেয়ে হওয়ার কারণে কোন বিব্রত বোধ করতে হয়নি এলিকে। কিন্তু যখন সে প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে ওঠে, তখন সেই অনুভূতি পাল্টাতে শুরু করে।
''আমি উপলব্ধি করতে শুরু করি, আমি ছেলেদের মতো অনেক কাজ করছি-আর সেটি অনেকের কাছেই ভালো লাগছে না, বিশেষ করে শিশুদের কাছে।''
লম্বা এবং খেলোয়াড়সুলভ এলির বাস্কেটবল খেলতে ভালো লাগতো, যা অনেকটা 'ছেলেদের খেলা'। চৌদ্দ বছর বয়সে সে অন্য মেয়েদের প্রতি আকর্ষণ বোধ করতে শুরু করে।
''আমি মেয়েদের সঙ্গে ডেটিং করতাম, সেটাই আমার ভালো লাগতো,'' তিনি বলছেন।
এরপরে এলি তার একজন বোনকে জানান যে, তিনি লেসবিয়ান।
''আমার বোন আমাকে বলে, আমি যেরকমভাবে নারী হয়ে উঠছি, তা নিয়ে সে গর্ববোধ করে। তখন আমার মনে হলো, তাহলে এখন আমি একজন নারী হয়ে উঠেছি? এটা আমার ভালো লাগছিল না।''
''এমন নয় যে আমি ছেলে হতে চেয়েছি, আসলে আমি নারী হতে চাইছিলাম না। আমি মাঝামাঝি কিছু হতে চাইছিলাম এবং ইচ্ছেমত জীবন কাটাতে চাইছিলাম।''
সূত্রঃ বিবিসি বাংলা