ষষ্ঠ শ্রেণিতে ফেল করা সেই কিশোরটি সামলাচ্ছেন ৪০০ কোটির ব্যবসা!

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২০ ১১:১০ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১২২ বার।

ভারতের কেরালার ওয়ানাডের এক প্রত্যন্ত এলাকায় মুস্তাফার জন্ম। পরিবারের প্রথম সন্তান হিসেবে স্কুলে যাওয়া শুরু করলেও মাত্র ষষ্ঠ শ্রেণিতেই ফেল করে বসে সে। সেই ছেলেই এখন ৪০০ কোটি রুপির মালিক।

ভারতীয় দৈনিক আনন্দবাজারপত্রিকার খবরে জানা গেছে, একটি কারখানায় তাকে মজুরের কাজে লাগিয়ে দিলেন বাবা। সেই বয়সেই নিজের ভবিষ্যতটা দেখে নিয়েছিলেন মুস্তাফা। কিছুদিন কাজ করার পরই তিনি নিজেকে দ্বিতীয় সুযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।

ফের মন দিয়ে পড়ালেখা শুরু করলেন তিনি। স্কুল পাস করে কালিকটের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংও পাস করলেন। চাকরি নিলেন বেঙ্গালুরুর মোটোরোলা কোম্পানিতে।

তারপর সেখান থেকে পদোন্নতি পেয়ে যুক্তরাজ্যে যান। এরই মধ্যে জীবনটা গুছিয়ে ফেলেন। কিন্তু তাতেও মন ভরছিল না তার। কয়েক বছর পর দেশে ফিরে করলেন এমবিএ।

তখনই নিজের ব্যবসা শুরু করার কথা মাথায় আসে তার। বেঙ্গালুরুর থিপাসানদ্রাতে তার আত্মীয়দের একটি দোকান ছিল। প্রায়ই সেখানে বসে গল্পগুজবে কাটিয়ে দিতেন।

খুব অবাক হয়ে দেখতেন, প্রতিদিনই ইডলি এবং দোসার ব্যাটার (চালের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি) দোকান থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন লোকজন।

তখনই প্যাকেজড ফুড ব্যবসার কথা মাথায় আসে তার। প্রথমে মাত্র ৫০ হাজার রুপি দিয়ে শুরু। একটা ছোট দোকান নিয়ে কিছু ব্যাটার বানিয়ে বাড়িতে বাড়িতে বিতরণ শুরু করেন। এরপর আর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

২০০৮ সালে ৫০ বর্গফুটের একটা ছোট রান্নাঘর ভাড়া নেন তিনি। সঙ্গে কেনেন একটা গ্রাইন্ডার। স্কুটারে করে ব্যাটারগুলো বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিতে শুরু করেন। একটু জনপ্রিয় হলে কোম্পানির নাম দেন বেস্ট ফুড প্রাইভেট লিমিটেড।

পরে নাম বদলে রাখেন আইডি স্পেশাল ফুডস প্রাইভেট লিমিটেড।

২০১০ সাল নাগাদ তার ব্যবসা চার কোটি রুপি ছুঁয়ে ফেলে। ততদিনে ৪০ জন কর্মচারীও নিয়োগ করে ফেলেছেন মুস্তাফা।

এখন বেঙ্গালুরু, মাইসুরু, ম্যাঙ্গালুরু, চেন্নাই, মুম্বাই, হায়দরাবাদ, পুনে এবং বিদেশে শারজাতেও রয়েছে তার ব্যবসা। ৫০ কেজি ব্যাটার সরবরাহ করে তার কোম্পানি।

সঙ্গে যোগ হয়েছে ৪০ হাজার চাপাতি, দুই লাখ পরোটা, দুই হাজার টমেটো এবং ধনেপাতার চাটনির প্যাকেট। ডেলিভারির জন্য কোম্পানির নিজস্ব ২০০টি গাড়ি রয়েছে। কর্মচারীর সংখ্যা সাড়ে ছয়শ।

২০১৯-২০ সালে মুস্তাফার কোম্পানিতে বিক্রি হয়েছে ৪০০ কোটি রুপির বেশি।