কোভিড-১৯’র সার্বিক পরিস্থিতি সংক্রান্ত জেলা কমিটির সিদ্ধান্ত

বগুড়ায় হোম কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম অমান্য করলে জরিমানা

পুণ্ড্রকথা রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২০ ১১:৩০ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১১৩ বার।


বগুড়ায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বিদেশ ফেরতসহ প্রযোজ্য ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে হোম কোয়ারেন্টাইন কঠোরভাবে কার্যকরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রযোজ্য ব্যক্তি যদি হোম কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম-কানুন অমান্য করেন তাহলে ভ্রামণ্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে তাকে জরিমানা করা হবে। বুধবার দুপুরে বগুড়া জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গঠিত কোভিড-১৯ এর সার্বিক পরিস্থিতি সংক্রান্ত জেলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসকের দপ্তরে জরুরী কন্ট্রোল রুম খোলারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ওই সভায় কোয়ারেন্টাইনের ব্যাপারে নজরদারি বাড়ানোর জন্য ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠন এবং কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রয়োজন-এমন ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদেরকে জনপ্রতিনিধদের মাধ্যমে কাউন্সিলিং করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাশাপাশি করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য জেলা জুড়ে মাইকিংয়েরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা, সিভিল সার্জন ডা. গাওসুল আজিম চৌধুরী ও বগুড়া পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট একেএম মাহবুবর রহমানসহ কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বগুড়া এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোন ব্যক্তির সন্ধান মেলেনি। তবে বিদেশফেরত ব্যক্তিদের মধ্যে যাদের দেশে আসার সময়-সীমা ১৪দিন অতিক্রান্ত হয়নি তাদের মধ্যে বুধবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১০৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। অবশ্য অভিযোগ রয়েছে, হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিরা যথাযথ নিয়ম মেনে চলছেন না। মঙ্গলবার শহরের চেলোপাড়া এবং মালতিনগর স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা দুই ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয় লোকদের বাদানুবাদ হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজনা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বগুড়ার সিভিল সার্জন ডা. গাওসুল আজিম চৌধুরী জানান, করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদেরকে নিজের এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের স্বার্থেই কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে-এর কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা কোয়ারেন্টনাইকে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের দপ্তরের কর্মীদেরকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা কাজ করে যাচ্ছেন।’ সাধারণ সর্দি-কাশি আর হাঁচি হলেই আতঙ্কিত না হওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘১৪দিনেরও বেশি সময় ধরে কাশি এবং তার সঙ্গে শ্বাস কষ্ট রয়েছে এমন লক্ষণগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।’
বগুড়া জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে হোম কোয়ারেন্টাইন খুবই কার্যকর পদ্ধতি। যদি এটা কেউ না মানতে চাই তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। তিনি বলেন, ‘কোন ব্যক্তির কোয়ারেন্টাইনে থাকা উচিত কিন্তু তিনি থাকছেন না-এ ধরনের অভিযোগ আমাদের কন্ট্রোল রুমে অথবা আমার সেল ফোনে জানাতে বলা হয়েছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বগুড়া সদরে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য রাজাপুর এলাকার জয়নাল আবেদীন কমার্স কলেজকে মনোনীত করা হয়েছে। এছাড়া বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল ও শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৪টি শয্যাকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’