রেকর্ড সংখ্যাক মৃত্যুর আশঙ্কা ব্রিটেন-যুক্তরাষ্ট্রে, দাবি গবেষকের

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২০ ১৪:৩৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৬০ বার।

দুই লাখের দিকে এগিয়ে চলেছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। মৃত ৮ হাজার পেরিয়ে যাওয়ার মুখে। ঘরবন্দি হওয়ার পথে বিশ্বের একটা বিরাট অংশ। 

দুনিয়াজুড়ে শিল্প যাতে ধসে না পড়ে তার জন্য লন্ডন এবং ওয়াশিংটনের প্রশাসন বিশাল অঙ্কের আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ কোটি ডলারের আর্থিক প্যাকেজ এবং ব্রিটেনে ৩৫ হাজার কোটি পাউন্ডের প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। 

সংবাদ সংস্থার মতে, ইউরোপে মৃতের সংখ্যা এশিয়াকেও টপকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

 

শুধু ব্রিটেনেই মারা যেতে পারেন ৫ লাখ মানুষ-কিছুদিন আগে একটি গবেষণাপত্রে এমন দাবিই করেছিলেন লন্ডনের ইমপেরিয়াল কলেজের অধ্যাপক নিল ফার্গুসন। ব্রিটেনের সরকারকে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে পরামর্শও দিচ্ছিলেন তিনি। 

তিনি বলেন, তিনি যেসব পদক্ষেপ করার কথা বলছেন, তা অনুসরণ করা না-হলে ব্রিটেনে এই বিপুল মৃত্যু ঘটবে। ফার্গুসনের কাজেই বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে করোনার বলি হতে পারেন অন্তত ২২ লাখ মানুষ। এখানকার ৫০টি প্রদেশে করোনা-আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।

আজ নিল টুইট করে জানিয়েছেন, গতকাল থেকে টানা শুকনো কাশি হচ্ছে তার। জ্বরও রয়েছে। তাই নিজেকে আলাদা রেখেছেন তিনি। নিলের দাবি, প্রথম দিকে শুকনো কাশিতে মনে হচ্ছিল আমি ঠিকই আছি। আজ ভোর চারটে থেকে জ্বর বেড়ে যায়।

ব্রিটেনে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৭৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এখন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও বলছেন, ব্রিটেন ক্রমশ যুদ্ধ পরিস্থিতির দিকে এগোচ্ছে। ১০ ডাউনিং স্ট্রিট থেকে তিনি ঘোষণা করেছেন, আমরা যে সব পদক্ষেপ করা উচিত, করেছি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথাও বলেছি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এমন পদক্ষেপ নজিরবিহীন। সংক্রমণ রুখতে এটাই করতে হবে।

শুক্রবার থেকে স্কুল বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলসে। 

কানাডার সঙ্গে এবার সীমান্ত প্রায় বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে থেকে সেখানে সফরে যেতে পারবেন না কেউ। 

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম দিকে ভাইরাস-হানায় তেমন গুরুত্ব না দিলেও হোয়াইট হাউস থেকে আজ বলেছেন, দেশে এখন যুদ্ধ পরিস্থিতি। আমাদের এই লড়াইটা জিততেই হবে। সেজন্য আইন জারি করে সেনাবাহিনীকে কাজে লাগিয়ে চিকিৎসা সামগ্রী (মাস্ক, গ্লাভস) তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

গোটা ইউরোপে কোভিড-১৯-এ মৃতের সংখ্যা ৩৪০০ পেরিয়েছে। শুধু ইটালিতেই এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩ হাজারের কাছাকাছি। এক দিনে সেখানে মারা গিয়েছেন ৪৭৫ জন। করোনা-প্রকোপের মধ্যে এক দিনে এতো মৃত্যু এই প্রথম। স্পেনেও মৃতের সংখ্যা সাড়ে পাঁচশো পেরিয়েছে। এশিয়ায় মৃতের সংখ্যাটা এখনও পর্যন্ত ৩৩৮৪ বলে দাবি করছে সংবাদ সংস্থা। 

আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে জার্মানি এবং ফ্রান্সও। ফ্রান্সকে ১০ লাখ মাস্ক পাঠাচ্ছে চীন। অস্ট্রেলিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ পেরিয়ে যাওয়ার পরে নাগরিকদের বিদেশ সফরে যেতে নিষেধ করেছে প্রশাসন। নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে ১০০-র বেশি মানুষের জমায়েতেও। 

ইউরোপের মতোই উদ্বেগ রয়ছে এশিয়াতেও। হংকংয়ে করোনা-সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে কয়েকদিন আগে দাবি করা হলেও বুধবারই নতুন করে ১৪টি সংক্রমণের ঘটনা সামনে এসেছে। এদের মধ্যে একজন বাদে সকলেই বিদেশ সফরে গিয়েছিলেন বলে জানানো হয়েছে। আগামী দিনে বিদেশ থেকে আরও অনেকেই হংকংয়ে ঢুকবেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ওয়ং কা-হিং। এদের অনেকেই শিক্ষার্থী। বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধের জেরে ফিরছেন দেশে। 

মঙ্গলবারের পর থেকে অন্তত এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে রিয়ো ডি জেনেইরোয় ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার স্ট্যাচু। ব্রাজিলে কোভিড-১৯-এ ৩০০ জন আক্রান্ত। সাও পাওলো এবং রিয়োতেই আক্রান্তের সংখ্যা সব চেয়ে বেশি।