জনসমাগম করে মেয়ের বিয়ে দিলেন সিভিল সার্জন!

পুন্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২০ ১৪:৫১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৭২ বার।

সারাদেশে চলছে করোনা আতঙ্ক। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সচেতনতা হিসেবে গণজমায়েত এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। ঠিক সেই মুহূর্তে সরকারি নির্দেশনা আমলে না নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সিভিল সার্জন মো. শাহ আলম ঘটা করে বিয়ে দিয়েছেন নিজের চিকিৎসক মেয়ের।

শুক্রবার জেলা শহরের ফারুকী পার্ক সংলগ্ন জেলার সরকারি কর্মকর্তাদের ডরমিটরিতে থাকা সরকারি বাসভবনে এই বিয়ের আয়োজন করেন সিভিল সার্জন।

বিয়ের আয়োজনে শামিল হয়েছেন জেলার বিভিন্ন স্তরের চিকিৎসকরা। বিয়েতে তিন শতাধিক অতিথিকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সিভিল সার্জন ঘরোয়া আয়োজন উল্লেখ করে বিয়েতে কোনো জনসমাগম করা হয়নি বলে দাবি করেছেন। খবর যুগান্তর অনলাইন।

জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের চিনাইর-চাপুইর গ্রামের বাসিন্দা মোশারফ হোসেন মোল্লার ছেলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী মঈনুল হোসেনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে সিভিল সার্জনের মেয়ে দন্ত চিকিৎসক শাননিন আলম মমোর বিয়ের আয়োজন করা হয়।

শুক্রবার দুপুরে নামাজের পর শুরু হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের ফৌজিয়া আক্তার, সৈয়দ আরিফুল ইসলাম, হবিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক আজহারুর রহমান ও খোকন দেবনাথ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন ক্লিনিকের দন্ত চিকিৎসকদের একটি দল, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারী ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা।

সাংবাদিকদের আনাগোনা দেখে বিকাল পৌনে ৩টার দিকে সিভিল সার্জনের সরকারি বাসভবনে প্রধান ফটকটি বন্ধ করে দেয়া হয়। শুধু আমন্ত্রিত অতিথি ছাড়া বিয়ে বাড়িতে কাউকে আর ঢুকতে দেয়া হয়নি। ফটকের বাইরে সিভিল সার্জন শাহ আলম নিজেই চেয়ার পেতে বসেন।

দুপুরে সরেজমিন বিয়ে বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, প্রধান ফটকের ভেতরে ফুল দিয়ে একটি তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। আর বাড়ির ভেতরে তৈরি করা হয়েছে প্যান্ডেল। ভেতরে একটি জায়গায় ১০টি বড় পাত্রে চলছে রান্নার কাজ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধের জন্য জনসমাগম এড়াতে সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। এই সময়ে ঘটা করে স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল এই কর্মকর্তার মেয়ের বিয়ের আয়োজন করা ঠিক হয়নি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডা. শাহ আলম বলেন, এক মাস আগেই বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার মেয়ের গায়ে হলুদ ছিল। এখন আমি বাবা হয়ে কীভাবে মেয়ের বিয়ে বন্ধ করে দেই? কোনো আয়োজন ছাড়াই স্বল্প পরিসরে বিয়ে হচ্ছে। পরিবারের অনেক সদস্যকেও দাওয়াত দিতে পারিনি।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নেব। করোনাভাইরাসের জন্য জনসমাগম এড়িয়ে চলার জন্য সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। কেউই জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নয়।

এর আগে গত বছর ৩১ ডিসেম্বর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল চত্বরে আতশবাজি আর গান বাজনা করে দেশজুড়ে আলোচিত ও সমলোচিত হয়েছিলেন এই কর্মকর্তা। আবার নতুন করে আবার বির্তকে পড়েছেন এই সরকারি কর্মকর্তা।