জ্বর, সর্দি, কাশি যাদের তাদের জন্য ডা. অরিন্দমের পরামর্শ

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২০ ১৫:০৫ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২১৬ বার।

জ্বর, সর্দি, কাশি থাকলেই কি আপনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত? নিজেকে গৃহবন্দি করে ফেলবেন? ছুটে যাবেন করোনাভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে কি না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করতে?

দেশে এখনো করোনাভাইরাস পরীক্ষার কীট অপর্যাপ্ত। এখন পরীক্ষা করানোও সুলভ নয়।

এমন পরিস্থিতিতে যারা আছেন তাদের জন্য চিকিৎসকেরা বলছেন, সহজেই পরীক্ষা করানোর প্রয়োজন নেই। কারণ ঋতু বদলের কারণে অনেকের জ্বর, সর্দি, কাশি হয়।

ভারতের কলকাতার এক জন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাস বলছেন ডাক্তারেরর কাছে গেলে তিনি জানতে চাইবেন-

জ্বর হলেই জানতে চাওয়া হবে তা কত দিন হয়েছে?

জ্বর দিনে ক’বার আসছে? সেটা কী ভাবে কতটা ওঠানামা করছে?

জ্বর কি কাঁপুনি দিয়ে আসছে?

প্রথম সাক্ষাতেই আপনার কাছ থেকে এসব কিছু জেনে নেওয়া হবে। যদি দেখা যায় জ্বরটা কাঁপুনি দিয়ে আসছে, তা হলে ম্যালেরিয়ার সম্ভাবনা খুঁজে দেখতে শুরু করবেন চিকিৎসকরা। যদি দেখা যায় জ্বরটা ছেড়ে বা কমে গিয়ে দিন দু’য়েক পর তা আবার প্রবলভাবে ফিরে আসছে, তা হলে ডেঙ্গির সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখবেন ডাক্তাররা।

এর পর ডাক্তার আরও তিনটি জিনিস জানতে চাইবেন-

জ্বরের সঙ্গে কি কাশি হচ্ছে খুব?

সেই কাশিটা কি শুকনো কাশি?

নাকি সেই কফের সঙ্গে ঘন কফও উঠে আসছে?

শুকনো কাশি হলে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনার কথা ভাববেন ডাক্তাররা। তবে নিশ্চিত হতে তাদের আরও কয়েকটি ধাপ যেতে হবে। 

আর যদি শুকনো কাশি না হয়, কাশির সঙ্গে আপনার খুব ঘন কফ উঠে আসে, তখন ডাক্তার আপনার কাছে জানতে চাইবেন-

সেই কফের রংটা কী?

সেটা সাদা নাকি হলুদ অথবা লাল?

অরিন্দম বলেন, ‘কারও কফ যদি সাদা হয়, তা হলেই ডাক্তার বুঝে যাবেন, তিনি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। তখন সেই সংক্রমণ থেকে বের করে আনতে তাকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হবে।’

কফের রং যদি হলুদ বা লাল হয়?

অরিন্দমের বক্তব্য, সেই সময় থেকেই ডাক্তারদের পরবর্তী ধাপগুলির কথা ভাবতে হবে। কফের রং হলুদ হলেই সেটা চিন্তার কারণ হয়ে উঠবে। আর রং লাল হলে তো কথাই নেই।

সে ক্ষেত্রে ডাক্তার কী কী জানতে চাইবেন?

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, তখন ডাক্তাররা রোগীর কাছে জানতে চাইবেন-

বিদেশ থেকে আসা কারও সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়েছে কি না?

হলে কত দিন আগে হয়েছে?

তিনি কোন দেশ থেকে কোন রুট ধরে কলকাতায় এসেছেন?

বিদেশ থেকে ফেরা কতজনের সঙ্গে তিনি গত দু এক সপ্তাহের মধ্যে দেখা করেছেন? তাদের কতটা ঘনিষ্ঠ হয়েছেন?

এই ভাবে রোগীর কাছ থেকে তার কয়েক দিনের জীবনযাপনের ‘হিস্ট্রিটা’ জেনে নেবেন ডাক্তাররা।

তার পর ডাক্তাররা রোগীকে বলবেন বুকের এক্স-রে করাতে।

বিদেশিদের সঙ্গে সাক্ষাতের ‘হিস্ট্রি’ পেলে আর বুকের এক্স-রে রিপোর্টে সন্দেহজনক কিছু পেলেই ডাক্তাররা আপনাকে বলবেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে কি না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে প্রয়োজনীয় রক্তপরীক্ষা করান।

গলা ও নাকের মধ্যে থাকা থুতু পরীক্ষাও করাতে বলবেন চিকিৎসকেরা।

তাই চিকিৎসকদের পরামর্শ, জ্বর, সর্দি, কাশি হলেই অযথা আতঙ্কিত হয়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরীক্ষার জন্য ছুটোছুটি করে লাভ নেই।