সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন লাখো করোনা রোগী

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২০ ০৪:২৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৭২ বার।

বিশ্বব্যাপী ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৮৫৯ মানুষের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৬ হাজার ৫১৪ জন। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ২ হাজার ৬৯ জন।

আক্রান্তদের মধ্যে ২ লাখ ৬০ হাজার ২৭৬ জন চিকিৎসাধীন। এদের মধ্যে ২ লাখ ৪৮ হাজার ২১৪ জনের অবস্থা স্থিতিশীল এবং ১২ হাজার ৬২ জন রয়েছেন আশঙ্কাজনক অবস্থায়।

করোনা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১ হাজার ১৭১ জনে। নতুন করে সাত জন মারা যাওয়ায় দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ২৭৭ জন।

চীন উৎপত্তিস্থল হলেও সবচেয়ে বেশি লোক মারা গেছেন ইতালিতে। ইতালিতে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ৬৩ হাজার ৯২৭ জনের শরীরে। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৭৭ জনে। তবে গতকাল ইতালিতে মৃতের সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে কমেছে। সংক্রমণ ঘটার পর দক্ষিণ কোরিয়ায়ও একদিনে সর্বনিম্ন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।

তবে ভিন্ন চিত্র যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে; বাংলাদেশেও একদিনে রোগী বেড়েছে ছয়জন, যা একদিনে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ৩৩ জনের শরীরে। এদের মধ্যে মারা গেছেন তিনজন।

করোনা ভাইরাসের বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে পরিসংখ্যান ভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ডোমিটারস জানাচ্ছে, মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ১৯৫টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এ মরণঘাতী ভাইরাস। বিশ্বের ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৮৫৯ মানুষের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৬ হাজার ৫১৪ জন। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ২ হাজার ৬৯ জন।

ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি চীনে। দেশটিতে ৮১ হাজার ১৭১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে মারা গেছেন ৩ হাজার ২৭৭ জন। মৃত্যুর দিক দিয়ে চীনের ছাপিয়ে গেছে ইতালি। এর পরেই যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান।

গত বছরের ডিসেম্বরের একেবারে শেষ দিকে চীনের উহান শহরে প্রথম নতুন ধরনের এ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। অন্য প্রদেশগুলোতে দ্রুত ছড়িয়ে যাওয়ার পর ভিন্ন দেশেও ভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়।

তখন এ ভাইরাসের নাম দেয়া হয় নভেল করোনা ভাইরাস, আর এর ফলে সৃষ্ট রোগ নাম পায় কভিড-১৯; যার লক্ষণ জ্বর, মাথাব্যথা ও শ্বাসজনিত সমস্যা।

শুরুতে চীনে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকলেও মাস দুয়েকের মধ্যে তারা পরিস্থিতি অনেকটাই সামলে নিতে পেরেছে। চীনের পর প্রথমে দক্ষিণ কোরিয়া এবং এরপর ইতালিতে মৃতের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকে। কোরিয়া পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণ আনতে পারলেও ইতালি বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। গত শনিবার ইতালিতে একদিনে রেকর্ড সংখ্যক ৭৯৩ জনের মৃত্যু হয়। এরপর রোববার তা ৬৫১ জনে নেমে এসেছিল। সোমবার মৃতের সংখ্যা আরও কমে নেমে আসে ৬০২ জনে। নতুন আক্রান্তের সংখ্যাও ৯ শতাংশ থেকে ৮ দশমিক ১ শতাংশে কমে এসেছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৬৪ জন। চীন থেকে দেশটিতে ছড়ানোর পর একদিনে এত কম রোগী আগে দেখা যায়নি। দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৯৬১; মারা গেছেন মোট ১১১ জন।

আক্রান্তের দিক থেকে এখনও শীর্ষে থাকা চীনে ৮১ হাজার ১৭১ জনের মধ্যে প্রায় ৭৩ হাজার জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে ইরান, স্পেন, জার্মানি, যুক্তরাজ্যকে ছাড়িয়ে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা একদিনে ৮ হাজার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ৭০৮ জনে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে পাঁচশ।

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা নিউ ইয়র্কে; সেখানে এখন পর্যন্ত ১৫ হাজারের বেশি মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। বিশ্বে যত করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে তার ৫ শতাংশই নিউইয়র্কে। রাজ্যটিতে মারা গেছেন ৯৮ জন।

যুক্তরাজ্যেও মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩৫ হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৪২৪ জন।

স্পেনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২০৬ জনে, দেশটিতে আক্রান্ত এখন ৩৩ হাজার ৮৯ জন। ইরানের মোট আক্রান্ত এখন ২৩ হাজার ৪৯ জন, মারা গেছেন ১ হাজার ৮১২ জন।

সার্বিক পরিস্থিতি দেখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, করোনা ভাইরাস এখন দ্রুতগতিতে ছড়াচ্ছে।

সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসাস সোমবার জেনেভায় সংবাদ সম্মেলনে বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার পর আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখে পৌঁছতে সময় লেগেছিল ৬৭ দিন, এক লাখ থেকে দুই লাখে যেতে সময় লাগে ১১ দিন। আর চার দিনেই রোগীর সংখ্যা দুই লাখ থেকে তিন লাখে পৌঁছে গেছে।

এ পরিস্থিতি সামলাতে বিশ্বনেতাদের এক হয়ে কাজ করার ওপর জোর দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান।