হ্যান্ড স্যানিটাইজার: বড় বাধা রেক্টিফাইট স্পিরিটের ওপর মাদক শুল্ক

পুন্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২০ ০৮:৪৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৮৮ বার।

করোনা ভাইরাস এর ভয়াবহতা মোকবিলায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার সহজলভ্য করতে দেশে উৎপাদিত রেক্টিফাইট স্পিরিটের ওপর লিটার প্রতি ১১১ টাকার মাদক শুল্ক অব্যাহতি দিতে হবে। অপরদিকে উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতিও থাকতে হবে। তা না হলে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের দাম বেড়ে যাবে। খবর যুগান্তর অনলাইন

এ দু’টি বিষয় নিষ্পত্তি করা হলে জরুরিভিত্তিতে স্যানিটাইজার উৎপাদন এবং এর কাঁচামাল সরবরাহে যেসব ডিষ্টিলারি প্রতিষ্ঠান সাময়িক অনাপত্তিপত্র পেয়েছে তারা স্বল্পমূল্যে বাজারজাত করতে পারবে। এজন্য গত ২২ মার্চ এনবিআর থেকে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে আইসো প্রপাইল অ্যালকোহল আমদানিতে সব ধরনের শুল্ক ছাড়ের যে সুবিধা দেয়া হয়েছে তা দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদিত রেক্টিফাইট স্পিরিট উৎপাদন ও বিপননের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে বলে সংশোধিত আদেশ জারি করা প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সূত্রগুলো জানায়, এ নিয়ে বেশি নথি চালাচালির প্রয়োজনও নেই। যেহেতু সব ধরনের আমদানি বন্ধ থাকায় আইসো প্রপাইল অ্যালকোহল আমদানিও বন্ধ রয়েছে, সেহেতু জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে অহেতুক সময়ক্ষেপণ করা ঠিক হবে না।

তারা বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চাহিদা অনুযায়ী হ্যান্ড স্যানিটাইজারের উৎপাদন বাড়াতে এবং সাশ্রয়ী মূল্যে জনসাধারণের হাতে হাতে পৌছে দিতে এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া জরুরি। কেননা, বিদ্যমান উচ্চশুল্ক বহাল থাকলে কারো পক্ষে এটি সাশ্রয়ী মূল্যে সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। যারা জনস্বার্থে বিনামূল্যে দিতে চান তারাও বেশি আগ্রহী হবে না। তাই এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

প্রসঙ্গত, হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদনের অন্যতম কাঁচামাল হলো আমদানিনির্ভর আইসো প্রোপাইল অ্যালকোহল অথবা দেশে উৎপাদিত ইথাইল অ্যালকোহল বা রেক্টিফাইট স্পিরিট। এরমধ্যে হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদনে বেশি কার্যকর হলো রেক্টিফাইট স্পিরিট।

বর্তমানে করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সারা বিশ্ব এক রকম লক ডাউন করা হয়েছে। ফলে প্রায় এক মাস যাবত চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমদানি বন্ধ রয়েছে। এ কারণে এতদিন যেসব ওষুধ কোম্পানী আইসো প্রোফাইল অ্যালকোহল ব্যবহার করে হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদন করত তারাও এখন কাঁচামালের অভাবে উৎপাদন করতে পারছে না।

এরমধ্যে গত ২২ মার্চ এনবিআর থেকে ৯২ নং এসআরও জারি করে আইসো প্রোপাইল অ্যালকোহল আমদানির ওপর সব ধরনের শুল্ক ছাড় দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট স্থানীয় উৎপাদকরা বলছেন, এই শুল্ক ছাড় আগে দরকার ছিল রেক্টিফাইট স্পিরিটের ওপর। কেননা, ফ্যাক্টরি থেকে প্রতি লিটার রেক্টিফাইট স্পিরিট বাজারজাত করার জন্য বের করতে হলে মাদকশুল্ক দিতে হয় লিটার প্রতি ১১১ টাকা। এছাড়া হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদনের ওপর এনবিআরের ভ্যাট তো আছেই।

উল্লেখ্য, আইসো প্রোফাইল অ্যালকোহল সংকটের কারণে ইতিমধ্যে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর থেকে কেরু অ্যান্ড কোম্পানী এবং যমুনা ডিষ্টিলারিজ লিমিডেটসহ রেক্টিফাইট স্পিরিট উৎপাদনে সক্ষম কোম্পানীগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। যমুনা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান যমুনা ডিষ্টিলারিজ লিমিডেট জাতির এই দুর্যোগকালীন মুহূর্তে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের আহবানে সক্রিয়ভাবে সাড়া দিয়েছে। এরপর খুব দ্রুততার সঙ্গে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর সাময়িকভিত্তিতে যমুনা ডিষ্টিলারিজ লিমিডেটের অনুকূলে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক অনাপত্তিপত্র ও অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু স্বল্পমূল্যে জনসাধারণের কাছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিতে চাইলে সব ধরনের শুল্ক ছাড়ের বিষয়টি আগে নিষ্পত্তি করতে হবে। এমনটিই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।