লকডাউন: খালি পেটে ১৩৫ কি.মি. হাঁটলেন দিনমজুর

পুন্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২০ ০৫:৩৫ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৭০ বার।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে ভারতে চলছে ২১ দিনের লকডাউন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় এক জায়গা থেকে অন্যত্র যাওয়া কার্যত অসম্ভব। কিন্তু বিপদের দিনে স্বজনদের পাশে থাকতে কে না চায়? তাই তো খালি পেটে ১৩৫ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে নিজের বাড়িতে পৌঁছলেন এক দিনমজুর।

ভারতের মহারাষ্ট্রে এ ঘটনা ঘটেছে। আপাতত ওই দিনমজুরকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলেছে চিকিৎসকরা।

সংবাদ প্রতিদিন জানায়, নরেন্দ্র শেলকে নামে ওই ব্যক্তি দিনমজুরের কাজ করেন। তিনি মহারাষ্ট্রের পুনেতে থাকতেন। দিনকয়েক করোনা আতঙ্কে চিন্তিত ছিলেন তিনি। একদিন হঠাৎ বাড়ি ফেরার আশায় পুনে থেকে নাগপুর আসার জন্য ট্রেনে চড়ে বসেন।

এরই মধ্যে লকডাউনের কথা ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার। বন্ধ হয় যায় গণপরিবহন। আটকে যায় ট্রেন। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে বাড়ি ফিরবেন তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান নরেন্দ্র।

বহু মানুষকে ফোন করে সাহায্য চান তিনি। কিন্তু মেলেনি সাহায্য। তাই বাধ্য হয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেন হেঁটেই বাড়ি ফিরবেন। যেই ভাবা, সেই কাজ। এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে বাড়ির উদ্দেশে হাঁটতে শুরু করলেন নরেন্দ্র।

একটানা দুদিন ধরে হাঁটতে থাকেন তিনি। হাঁপিয়ে যান। ভেবেছেন একটু খাবার পেলে ভালো হয়। কিন্তু পথে মেলেনি এতটুকু খাবার। এই পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র পানি পান করেই তেষ্টা মেটান ওই দিনমজুর।

বুধবার রাতে রাস্তায় টহল দেওয়া পুলিশ সদস্যরা নরেন্দ্রকে দেখতে পান। লকডাউনের মাঝে কেন রাস্তায় হাঁটছেন জানতে চান তারা। জবাবে গোটা ঘটনা খুলে বলেন ওই দিনমজুর।

তখনই পুলিশ তাকে প্রায় অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা হয় তার। তবে পরীক্ষায় করোনার প্রমাণ মেলেনি। কিন্তু নিরাপত্তার স্বার্থে আপাতত ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেন চিকিৎসকরা।

এরপর খাবার খাইয়ে ওই দিনমজুরকে পুলিশের গাড়িতে করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।

বিবিসি জানায়, লকডাউন ঘোষিত হওয়ার পর ভারতের ভিন্ন রাজ্য থেকে আসা অভিবাসী শ্রমিকরা অনেকেই রুটিরুজি হারিয়ে নিজের গ্রামের দিকে হাঁটতে শুরু করেছেন।

লকডাউনে তাদের কাজকর্ম থেমে গেছে। এর মধ্যে ট্রেন ও বাস আচমকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা অনেকেই শত শত মাইল পথ পায়ে হেঁটেই পাড়ি দিতে শুরু করেছেন।