করোনায় ‘ব্ল্যাড প্লাজমা থেরাপি’ বাঁচাবে জীবন: গবেষক

পুন্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২০ ০৭:২১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৬৮ বার।

করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় একটি নতুন পদ্ধতির কথা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ইয়ান লিপকিন বলেছেন, ‘ব্লাড-প্লাজমা থেরাপি’ নামের এ পদ্ধতি কোভিড-১৯ চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে। তিনি সম্প্রতি একটি গবেষণা পেয়েছেন, যাতে দেখা যায়, রোগীরা প্লাজমা থেরাপির সুফল পেয়েছেন। ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্কে সম্প্রচারিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা জানান এই গবেষক।

নিউইয়র্কে এরই মধ্যে করোনা রোগীদের ব্লাড প্লাজমা দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চিকিৎসা শুরু হয়েছে। নিউইয়র্ক ব্ল্যাড সেন্টার প্রথম প্রতিষ্ঠান হিসেবে এ চিকিৎসার জন্য কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের কাছ থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করছে।

ইয়ান লিপকিন বলেন, ‘জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে চীন গিয়েছিলাম, তারা করোনার চিকিৎসার জন্য আলাদা কী করছে, তা দেখতে। এরপর এক সপ্তাহ আগে আমি এক বন্ধুর কাছ থেকে একটি গবেষণাপত্র পাই। এতে বলা হয়, প্লাজমা থেরাপি দিয়ে ১০ রোগীর চিকিৎসার জন্য করোনা রোগে সেরে ওঠা ব্যক্তির কাছ থেকে অ্যান্টিবডি নেওয়া হয়। থেরাপির পর ওই ১০ জনই এখন ভালো আছেন।'

‘ব্লাড-প্লাজমা থেরাপি’ নতুন পদ্ধতি নয়। অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের আগে এ পদ্ধতি ব্যবহার করে ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করা হতো।

ইয়ান লিপকিন আরও বলেন, ‘এক্ষেত্রে ভাইরাস থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিদের প্লাজমাদাতা হিসেবে সহায়তার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে আমরা সংক্রমিত অন্যান্য ব্যক্তির চিকিৎসায় এটি ব্যবহার করতে পারব।‘

এক ব্যক্তির কাছ থেকে নেওয়া প্লাজমা দিয়ে তিনজন রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব জানিয়ে এই গবেষক বলেন, ‘এটি সহজ ও ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত কার্যকর সমাধান হতে চলেছে। এর মাধ্যমে অসুস্থতা ও মৃত্যুর ক্ষেত্রে বিশাল পার্থক্য তৈরি করা যাবে।’

করোনা আক্রান্ত যেসব রোগী ইতিমধ্যে সেরে উঠেছেন তাদের রক্ত প্রচুর অ্যান্টিবডির উৎস হতে পারে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যে প্রোটিন তৈরি করে, তা ভাইরাসকে আক্রমণ করতে পারে। যে রক্তে ওই অ্যান্টিবডি থাকে তাকে বলা হয় ‘ক্যানভ্যালসেন্টস প্লাজমা’। এটি কয়েক দশক ধরে ইবোলা, ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো সংক্রামক রোগে ব্যবহৃত হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেভিড এল. রেইচ বলেন, হাসপাতালে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যায় থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে তারা এ পদ্ধতি প্রয়োগ করে দেখবেন। তবে একেবারে রোগের চূড়ান্ত দশায় থাকা কারও ক্ষেত্রে এখন দেখবেন না।

এদিকে মাউন্ট সিনাইয়ের গবেষকেরা যুক্তরাষ্ট্রের রোগীদের পুনরুদ্ধারে অ্যান্টিবডি শনাক্ত করতে পারে এমন একটি পরীক্ষা উদ্ভাবন করেছেন, যা এ চিকিৎসার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। 

প্লাজমার মাধ্যমে সম্ভাব্য এ চিকিৎসা পদ্ধতি ইতিমধ্যে চীনে পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রচলিত ওষুধের আগেই এর ব্যবহার শুরু হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্র: টাইম ও নিউইয়র্ক টাইমস।