লুকিয়ে রাখা সেই ডিমেও ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারছে না আমেরিকা

পুন্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২০ ০৭:৩২ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৪৯ বার।

গোপন খামারে যুগের পর যুগ যে লাখ-লাখ ডিম লুকিয়ে রেখে প্রতিবছর নতুন নতুন ভ্যাকসিন তৈরি করে আমেরিকা, সেগুলো নভেল করোনাভাইরাস (কভডি-১৯) মোকাবিলায় কোনো কাজে আসছে না। খবর সিএনএনের।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, আমেরিকা জুড়ে এমন একাধিক মুরগির ফার্ম আছে। কিন্তু সেগুলো কোথায় তা হাতেগোনা কয়েকজন জানেন। জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে ফার্মগুলো পাহারা দেয়া হয়। প্রতিদিন কয়েক হাজার ডিম সংগ্রহ করে ল্যাবে নেয়া হয়। সেগুলো দিয়ে প্রতিবছর সাধারণ ফ্লুর ভ্যাকসিন তৈরি হয়।

সাধারণ ফ্লু প্রতিরোধ করতে প্রতি বছর আলাদা-আলাদা ভ্যাকসিনের দরকার পড়ে। সেই ভ্যাকসিনগুলো ডিমের সাহায্যে তৈরি করা হয়। এক বছরে এভাবে ১৭৪.৫ মিলিয়ন ভ্যাকসিন তৈরি করে দেশটি।

ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধ করতে ৮০ বছর ধরে উন্নত দেশগুলো এভাবে ভ্যাকসিন তৈরি করে আসছে।

আমেরিকার সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) জানিয়েছে, মার্কিন স্বাস্থ্যখাতে যত ভ্যাকসিন আছে তার ৮২ শতাংশ তাদের গোপন খামারের ডিম দিয়ে তৈরি হয়।  একটি ডিম থেকে বানানো হয় একটি ভ্যাকসিন।

কিন্তু নভেল করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে সেটি সম্ভব হচ্ছে না। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য মতে, এই ভাইরাস থেকে সৃষ্ট রোগে এখন পর্যন্ত ১৯ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ২৩ হাজার। এখনো কোনো ভ্যাকসিন তৈরি সম্ভব হয়নি।

গবেষকেরা বলছেন, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস থেকে এই ভাইরাসের ধরন আলাদা। তাই প্রথাগত পদ্ধতি কাজে আসছে না।

হংকং ইউনিভার্সিটির ক্লিনিক্যাল প্রফেসর জন নিকোলস বিষয়টি এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন, ‘নভেল করোনাভাইরাসের আলাদা কিছু রিসেপ্টর আছে। অন্য চরিত্রও আলাদা। ফ্লুর ভ্যাকসিন যেভাবে তৈরি হয়, সেভাবে এই ভাইরাসকে ডিমের ভেতর দেয়া যায় না।’

সিএনএন বলছে, বিজ্ঞানীরা এখন বিকল্প উপায়ে ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা করছেন। এখন পর্যন্ত গোটা বিশ্বে ৩৫টি বায়োফার্মা কোম্পানি এবং ইউনিভার্সিটি নভেল করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চেষ্টা করছে। এদের মধ্যে ৪টি ভ্যাকসিনের প্রাণী-ভিত্তিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে।

মার্কিন কোম্পানি মডেরনা প্রথম মানব শরীরে ট্রায়াল শুরু করে। আরো বেশ কিছু ভ্যাকসিনের ‘হিউম্যান ট্রায়াল’ শুরু হতে যাচ্ছে শ্রীঘ্রই।