প্রতি বছরই হতে পারে করোনা মহামারী, বলছেন চীনের বিজ্ঞানীরা

পুন্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২০ ১১:১০ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১২১ বার।

বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসে থমকে দাঁড়িয়েছে সারাবিশ্ব। কোনো কোনো দেশে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমে এসেছে। তবু থামছে না মৃত্যুর মিছিল।

কোভিড-১৯ মহামারীতে বিশ্ব যখন বিধ্বস্ত, তখন চীনা বিজ্ঞানীরা দিলেন আরও এক অশনিসংকেত। দেশটির শীর্ষ চিকিৎসা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব প্যাথোজেন বায়োলজির একদল বিজ্ঞানীর দাবি–পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হবে না নভেল করোনাভাইরাস। ফ্লুর মতো প্রতি বছরই ফিরে আসবে করোনাভাইরাস।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জনপ্রিয় গণমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে চীনের বিজ্ঞানীদের গবেষণার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের সমগোত্রীয় সার্স ভাইরাস যেমন এসেছিল ১৭ বছর আগে, কিন্তু শেষও হয়ে গেছে, তবে কোভিড ১৯-এর ক্ষেত্রে তেমনটি হবে না। সার্স ভাইরাসে আক্রান্ত একজন রোগীকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হলে রোগটি ছড়ানো বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু করোনাভাইরাস অনেক ক্ষেত্রে উপসর্গহীন হওয়ার ফলে তা শনাক্ত করা কঠিন। তাই প্রাদুর্ভাব নির্মূল করাও প্রায় অসম্ভব।

চীনা গবেষকদের দাবি, পৃথিবীর সব প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। যাদের শরীরে ভাইরাসের কোনো উপসর্গ নেই, অর্থাৎ যারা অ্যাসিম্পটম্যাটিক, তারাই এ রোগ বয়ে বেড়াবে। তাই করোনার জীবাণু নির্মূল সম্ভব নয।

চায়নিজ একাডেমি অব মেডিকেল সায়েন্সের অধীনে থাকা ইনস্টিটিউট অব প্যাথোজেন বায়োলজির গবেষকদের গবেষণায় আরও বলা হয়, লকডাউন করে রোগের প্রকোপ কিছুটা কমানো যাবে ঠিকই; তবে অনেক ক্ষেত্রেই বলা হচ্ছে– যাদের শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি, বিশেষ করে যুবসমাজ, তাদের বাইরে যেতে দেয়া হোক। অর্থাৎ করোনা ছড়িয়ে পড়ুক, এমনই চান গবেষকরা। কারণ যত তাড়াতাড়ি এ রোগের মোকাবেলা করা যাবে, তত তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক জীবনে ফেরা যাবে।

গত মাসে একই রকম কথা বলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজের পরিচালক ড. অ্যান্টনি ফসি। তিনি বলেছিলেন, নভেল করোনাভাইরাস মৌসুমি রোগের মতো ফিরে আসতে পারে প্রতি বছর।

পিকিং ইউনিভার্সিটি ফার্স্ট হসপিটালের সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান ওয়াং গুইকিয়াং বলেন, ‘গরমে করোনাভাইরাস বাঁচতে পারে না, তা ঠিক। তবে এর জন্য প্রয়োজন ৫৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং ভাইরাসটিকে ৩০ মিনিট থাকতে হবে তাতে। এতটা গরম সেভাবে কোথাও পড়ে না।

তাই বিশ্বজুড়ে, এমনকি গ্রীষ্ম মৌসুমেও ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে মনে করেন এই বিশেষজ্ঞ। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে প্রাণহানি ও অসুস্থদের পরিসংখ্যান রাখা আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কোভিড ১৯-এ মারা গেছেন দুই লাখ ১৮ হাজার ১০ জন।

করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে বিশ্বের ৩১ লাখ ৩৮ হাজার ৭৮৫ জন। তাদের মধ্যে বর্তমানে ১৯ লাখ ৬৪ হাজার ১২১ চিকিৎসাধীন এবং ৫৬ হাজার ৯৬৫ জন (৩ শতাংশ) আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন।