করোনায় পুলিশ সদস্যের মৃত্যু: চকলেটের অপেক্ষায় ছেলে আব্দুল্লাহ
পুন্ড্রকথা ডেস্ক
করোনাভাইরাসে (কভিড-১৯) দেশে প্রথম কোনো পুলিশ সদস্য হিসেবে মৃত্যু জসিম উদ্দিনের (৪০)। তিনি কনস্টেবল হিসেবে ওয়ারী পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন।
তার বাড়ি কুমিল্লার বুড়িচংয়ে। সেখানেই থাকে পরিবার।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি এ পুলিশ কনস্টেবল মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে মারা যান। কিন্তু জানে না তার পাঁচ বছরের সন্তানন আব্দুল্লাহ। সে এখনো অপেক্ষায় আছে বাবা ফিরবে চকলেট নিয়ে।
বুধবার পুলিশ সদস্যরা জসিম উদ্দিনের বাড়ি গেলে আব্দুল্লাহ উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে। সে ভেবেছিল তার বাবাও এসেছেন। এভাবেই হৃদয়বিদারক ঘটনার বিবরণ দেন পুলিশ সদস্য তানভীর সালেহিন ইমন।
তিনি ফেইসবুকে লেখেন, 'অপেক্ষায় আছে ৫ বছরের শিশু আব্দুল্লাহ, বাবা আসবে তার জন্যে চকলেট নিয়ে। পুলিশ চাচ্চুদের দেখে উৎফুল্ল মনে প্রশ্ন "আব্বু কি চলে আসছে?" অবুঝ শিশুটি তার পৃথিবীতে এতক্ষণে কি ঘটে গেছে বুঝতে না পেরে দিব্যি হাসছে, খেলছে, আবার মা, বোন, দাদীর কান্না দেখে বিস্মিতও হচ্ছে! তার এসপি আংকেল এবং অন্য পুলিশ চাচ্চুদের চোখেও অশ্রুধারা! এর মধ্যেই শিশু সুলভ আবদার ছবি তুলে দেয়ার।
প্রিয় আব্দুল্লাহ, বাবা আমরা তোমার চোখে তাকিয়ে তখন বলতে পারিনি জীবনের নির্মম সত্যটি!!
একদিন বড় হয়ে জানতে পারবে তোমার পুলিশ বাবা মহামারি করোনা যুদ্ধে সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে লড়াই করেছে দেশমাতৃকার তরে। মানুষ ও মানবতার তরে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় উৎসর্গ করেছে জীবন। সেদিন এই লাল সবুজের বুকে তুমি মাথা উঁচু করে গর্বে উদ্ভাসিত হবে। ইউনিফর্ম পরিহিত লাখো লাখো পুলিশ চাচ্চুদের মুখাবয়বে ভেসে উঠবে তোমার বাবার মুখ!
মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ যোদ্ধা বাংলাদেশ পুলিশের বীর সদস্যরা প্রাকৃতিক কিংবা মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগে কখনোই দেশপ্রেমের পরীক্ষায় পিছপা হয়নি ভবিষ্যতেও হবেনা। সেবার সুমহান ব্রতে আমরা সবসময়ই আছি আপনাদের পাশে জনগণের পুলিশ হয়ে।
(ডিএমপির ওয়ারী থানায় কর্মরত কুমিল্লার বুড়িচংয়ের সন্তান পুলিশ কনস্টেবল জসিম করোনা আক্রান্ত অবস্থায় গতকাল ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন)'।
তার এ স্ট্যাটাস রাজধানীর ডিএমপির ডিসি তেজগাঁও এর ফেইসবুক পেজ থেকে শেয়ার দেওয়া হয়।