লকডাউনের মধ্যেই প্রকাশিত হলো তসলিমা নাসরিনের ‘লজ্জা’র সিক্যুয়েল

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ মে ২০২০ ১৮:৪৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৩৭ বার।

সিকি শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখক তসলিমা নাসরিনের বেস্টসেলার বই ‘লজ্জা’র সিক্যুয়েল প্রকাশিত হলো করোনাভাইরাস লকডাউনের আবহে। ‘লজ্জা’ প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৯৩ সালে। ঠিক তার আগের বছর ভারতের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভাঙার সাম্প্রদায়িক পটভূমিতে। আর সেই সিরিজের পরবর্তী বইটির (সিক্যুয়েল) আত্মপ্রকাশ হলো প্রায় সাতাশ বছর বাদে, ইংরেজি অনুবাদে যার নাম রাখা হয়েছে ‘শেমলেস’। তসলিমা নাসরিনের এই বইটি প্রকাশ করেছে ভারতের নামী প্রকাশনা সংস্থা হার্পার কলিন্স ইন্ডিয়া। খবর বাংলা ট্রিবিউন  

ইংরেজি অনুবাদে বইটির নাম ‘শেমলেস’ রাখা হলেও মূল বাংলায় কী নামকরণ করা হয়েছে, লেখক বা প্রকাশক তা এখনও প্রকাশ করেননি। তবে ধারণা করা যেতেই পারে, বাংলায় সম্ভবত বইটির নাম হবে ‘নির্লজ্জ’ বা ‘লজ্জাহীন’ গোছের কিছু। আপাতত অবশ্য বইটির ইংরেজি অনুবাদ পড়েই আগ্রহী পাঠককে সন্তুষ্ট থাকতে হবে।

বাংলা থেকে ইংরেজিতে বইটির অনুবাদ করেছেন বিশিষ্ট অনুবাদকার অরুণাভ সিনহা। সেই রচনার সামান্য কিছু অংশ চলতি সপ্তাহে ভারতের একটি প্রথম সারির নিউজ পোর্টালে প্রকাশিতও হয়েছে।
‘লজ্জা’র বিষয়বস্তু রীতিমতো বিতর্কিত হলেও ওই বইটির বিক্রি ছিল দুই বাংলাতেই আকাশছোঁয়া। ভারতে তো ট্রেনে-বাসে, রাস্তার ট্র্যাফিক মোড়েও দেদারসে বিক্রি হয়েছিল ‘লজ্জা’র সস্তা পাইরেটেড কপি। তা থেকে লেখিকা কোনও রয়্যালটি পাননি ঠিকই, কিন্তু ভারতের ঘরে ঘরে তসলিমা নাসরিনকে একটি পরিচিত নাম করে তুলেছিল এই ‘লজ্জা’-ই। পরে পৃথিবীর সবগুলো প্রধান ভাষাসহ অন্তত পঁচিশটি ভাষায় অনূদিত হয়েছে ‘লজ্জা’। বইটি আন্তর্জাতিক পরিচিতি পেয়েছে, এবং আজও তসলিমা নাসরিনের সবচেয়ে বিখ্যাত বই বলতে অনেকেই ‘লজ্জা’র-কেই বোঝেন।

লজ্জার সিক্যুয়েল লিখতে বসে তসলিমা নাসরিন ফিরিয়ে এনেছেন তার পুরনো বইয়ের কেন্দ্রীয় চরিত্রগুলোকেই। জানানো হয়েছে, এই ‘শেমলেসে’র মূল বৈশিষ্ট্য হলো লজ্জার চরিত্রগুলোই। এই বইতে এসে সরাসরি লেখিকাকে ‘কনফ্রন্ট’ করে, তারা কৈফিয়ত চায় কেন তাদের সঙ্গে আগের বইতে ওরকম ব্যবহার করা হয়েছে।

লেখিকা তসলিমা নাসরিন এক সময় কলকাতার রডন স্ট্রীটের একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন। লজ্জার মূল চরিত্র সুরঞ্জন দত্ত কীভাবে একদিন সেই ফ্ল্যাটের দরজায় এসে আচমকা বেল দেয়, লেখিকার সঙ্গে তার কী কথোপকথন হয়—তার বিবরণ রয়েছে 'শেমলেসে'। আমরা আরও জানতে পারি, ঢাকার পাট গুটিয়ে সুরঞ্জন দত্ত এখন কলকাতার পার্ক সার্কাস নিবাসী।

ভারতে করোনাভাইরাসের মোকাবেলায় গত দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে যে লকডাউন চলছে—তাতে বইয়ের দোকানগুলো খোলার অনুমতি পেয়েছে মাত্র দু-তিনদিন হলো। অন্য দিকে ফ্লিপকার্ট বা আমাজনের মতো ই-কমার্স সাইটেও আপাতত বই বিক্রির অনুমতি নেই। ফলে তসলিমা নাসরিনের ‘শেমলেস’ কতটা আলোড়ন ফেলতে পারছে তা জানার জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতেই হবে।