রাস্তায় সন্তান প্রসব, ১৫০ কি.মি. হেঁটে ঘরে ফিরলেন শ্রমিক মা

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ মে ২০২০ ১৬:৪১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৮৫ বার।

লকডাউনে আটকে পড়া অন্য রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে ট্রেন চালু করেছে ভারতের রেল মন্ত্রণালয়। এরপরেও অনেক শ্রমিকদের হেঁটেই ঘরে ফিরতে হচ্ছে। ট্রেন চালু হওয়ার আগেই কেউ কেউ নেমে গেছেন রাস্তায়।

তেমনই ছবি ধরা পড়ল মধ্যপ্রদেশের সাতনায়। লকডাউনের মধ্যেই মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে সাতনায়, নিজের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন এক শ্রমিক দম্পতি। পথেই সন্তানের জন্ম দেন ওই নারী। তাতে অবশ্য হাঁটায় ছেদ পড়েনি। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে ফের হাঁটতে শুরু করেন দু’জনে। পরে অবশ্য খবর পেয়ে ওই দম্পতিকে উদ্ধার করে সাতনা প্রশাসন।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে মধ্যপ্রদেশের সাতনা জেলার উচেহারা গ্রাম। পশ্চিম ভারত থেকে মধ্য ভারত। দেশের এই দুই প্রান্ত জুড়ে দিলেন এক শ্রমিক দম্পতি- রাকেশ কল ও শকুন্তলা কল। নাসিকে শ্রমিকের কাজ করতেন উচেহারার ওই দম্পতি। সেই সময়েই সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েন শকুন্তলা। কিন্তু লকডাউনের মধ্যে তাঁরা বাড়ি ফেরার সুবিধাজনক কোনও পথ খুঁজে পাননি। 

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেই অন্তত হাজার কিলোমিটার রাস্তা হেঁটেই পাড়ি দেওয়ার ঝুঁকি নেন এই দম্পতি। অন্যান্য শ্রমিকদের সঙ্গে দল বেঁধে সাতনার উদ্দেশে হাঁটা শুরু করেন তারা। সঙ্গে ছিল তাদের তিন সন্তানও। মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে ধুলের মাঝে একটি গ্রামে থামেন ওই দম্পতি। রাস্তার ধারেই চতুর্থ সন্তানের জন্ম দেন শকুন্তলা। তাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন দলের অন্যান্য সদস্যরাও।

শকুন্তলার স্বামী রাকেশ বলেন, এক শিখ দম্পতি জামাকাপড় ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমাদের দেন। এরপরেও অবশ্য হাঁটায় ছেদ পড়েনি তাদের। তিনি আরও বলেন, ‘এরপর আমরা ঘণ্টা দুয়েক বিশ্রাম নিয়েছিলাম। তারপর অন্তত ১৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিই।’

এদিকে এই দম্পতির খবর পৌঁছে যায় মধ্যপ্রদেশের সাতনা প্রশাসনের কাছে। রাজ্যের সেনধাওয়া থানার কর্মকর্তা ভিএস পারিহার জানান, বিজাসন চেক পোস্ট থেকে শকুন্তলাকে উদ্ধার করা হয়। হেঁটে আসা শ্রমিকদের ওই দলটিকে শেষ পর্যন্ত বাসে চাপিয়ে উচেহারা গ্রামে পাঠায় প্রশাসন।

এর আগে মে মাসের শুরুতে শকুন্তলার মতো এমনই এক ঘটনার সাক্ষী হয়েছিল ভারত। তেলঙ্গানার সঙ্গারেড্ডিতে শ্রমিকের কাজ করতেন ছত্রিশগড়ের রাজনন্দগাঁওয়ের এক নারী। লকডাউনের জেরে সপরিবারে হেঁটেই বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি। পথেই জন্ম দেন সন্তানের।