সিনেমায় ৩৫০ ‘ধর্ষণ’:

ভয় পেতেন নারীরা, এমনকি চিকিৎসার জন্য কাছে আসতেন না নারী চিকিৎসক

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ মে ২০২০ ১৮:০৯ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৩৫ বার।

বড়পর্দায় মোট ৩৫০ বার ‘ধর্ষণ’ করেছেন তিনি। মদ্যপান করেননি, এ রকম ফিল্ম খুঁজে পাওয়া যায় না। অথচ ব্যক্তিগত জীবনে যথাসম্ভব দূরে থাকতেন সব রকম নেশা থেকে, ছিলেন একনিষ্ঠ নিরামিষাশী। এমন বৈপরীত্য ছিল বলিউডের খলনায়ক রঞ্জিতের।

আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে জানা যায়, অভিনেতার পারিবারিক নাম ছিল গোপাল বেদী। আলাপ ছিল রাজস্থানের কোটার বাসিন্দা রঞ্জিত সিং ওরফে রনির সঙ্গে। বলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে রনির ভালো সম্পর্ক ছিল। রনির ভরসায় মুম্বাই আসেন রঞ্জিত। সুযোগ পান মোহন সেহগলের ‘সাওন ভাদো’ ছবিতে। তার পরের বছরই দিলীপ কুমার সুযোগ দেন ‘রেশমা আউর শেরা’ ছবিতে।

দিলীপ কুমার তাকে পরামর্শ দেন নাম পাল্টানোর। নতুন পরিচয়ের জন্য তিনি বেছে নেন রঞ্জিত সিং-এর নামটিই। পরে বলেছিলেন, তিনি কোনোদিন ভাবতেও পারেননি এই চেহারা নিয়ে অভিনয় করবেন! রনি ওরফে রঞ্জিত না থাকলে তার অভিনেতা হওয়া হতো না।

১৯৭১ সালেই মুক্তি পায় ‘শর্মিলি’। এই ছবির প্রিমিয়ারে ছেলেকে মেয়েদের শ্লীলতাহানি করতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন রঞ্জিতের মা। শেষে সহঅভিনেত্রী রাখি এসে মা'কে বোঝান, তার ছেলে আসলে অভিনয় করেছেন!

ধীরে ধীরে রঞ্জিতের মা বুঝে যান, প্রতি ছবির শেষেই তার ছেলেকে পুলিশ বা নায়কের হাতে মার খেতে হবে। তিনি আত্মীয়দের সঙ্গে ছেলের ছবি দেখতে গেলে শেষ অবধি দেখতেন না। বলতেন, ছবির শেষ অংশ অন্য একদিন দেখবেন।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রিতে রঞ্জিতের পরিচয় হয়ে যায় ‘রেপ কিং’ বা ‘ধর্ষণের রাজা’ বলে।

১৯৮৯ সালে ‘প্রেম প্রতিজ্ঞা’ সিনেমায় মাধুরীর সঙ্গে রঞ্জিতের ধর্ষণের দৃশ্য ছিল। শুটিংয়ের পরেও নাকি মাধুরীর আতঙ্কের ঘোর কেটেছিল না ।

সহঅভিনেত্রী ছাড়াও তাকে ভয় পেতেন নারীরা। ১৯৭৭ সালে ‘জামানত’ ছবিতে কেউটে সাপ নিয়ে শট দিতে হয় রঞ্জিতকে। যদিও সাপের দেহ থেকে বিষবার করে নেওয়া হয়েছিল আগেই, তবু শট দেওয়ার পর রঞ্জিতকে পরীক্ষা করার জন্য চিকিৎসককে ডাকা হয়। কারণ শুটিংয়ের মধ্যে সাপটি বেশ কয়েক বার ছোবল দিয়েছিল রঞ্জিতকে।

কিন্তু রঞ্জিতকে দেখতে হবে শুনে নারী চিকিৎসক নাকি ভয়েই আসেননি। এমনকি রঞ্জিতের দৃশ্য এলেই নাকি সেন্সর বোর্ডের এক নারী সদস্য রাগে ও ঘেন্নায় চোখ বন্ধ করে ফেলতেন।

ব্যক্তিগত জীবনে ১২ বছর লিভ ইন করার পরে বিয়ে করেছিলেন বান্ধবী পুষ্পাকে। কিন্তু দেড় বছর যেতে না যেতেই তাকে ছেড়ে পুষ্পা চলে যান।

এর কয়েক বছর পরে রঞ্জিত পরিচালনা করেন ‘কারনামা’। সে ছবিতে নবাগতা নাজনিন ওরফে অলকাকে বাবা-মায়ের পরামর্শ ও সম্মতিতেই ১৯৮৬ সালে বিয়ে করেন রঞ্জিত। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বিয়ের পরে অন্য মহিলাদের সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত হননি বলে দাবি রঞ্জিতের।