অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে কাঠের পাঠাতনে বসিয়ে ৭০০ কিমি পথ পাড়ি দিলেন শ্রমিক

অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও শিশু কন্যাকে চাকার ওপর কাঠের পাঠাটনে বসিয়ে ৭০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেন ভারতের মধ্যপ্রদেশের এক শ্রমিক। 

আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, হায়দরাবাদে কাজ করতে গিয়ে লকডাউনের জেরে আটকে পড়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা রামু। সেখানে তার সঙ্গে ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ধন্তত্বা ও বাচ্চা মেয়ে অনুরাগিনী। তাদেরই নিয়ে হেঁটে মধ্যপ্রদেশের উদ্দেশে রওনা দেন রামু। পথে কোথাও বাস বা লরিও পাননি। 

এক পর্যায়ে কাঠের পাটায় চাকা লাগিয়ে স্ত্রী-কন্যাকে বসিয়ে ৭০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মঙ্গলবার নিজের গ্রামে ফিরেছেন রামু। সেই ঘটনার ভিডিও এখন ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, চাকা লাগানো কাঠের পাটাতনে মেয়ে অনুরাগিনীকে নিয়ে বসে আছেন স্ত্রী ধন্তত্বা। আর রামু একটি দড়ি দিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন তাদের। এভাবেই মধ্যপ্রদেশের বালাঘাট জেলার গ্রামে পৌঁছেছেন তিনি।

গ্রামে ফিরে আসার যাত্রা নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে রামু বলেন, ‘প্রথমে মেয়েকে কোলে নিয়ে হাঁটছিলাম আমি। কিন্তু পুরো রাস্তা হেঁটে আসা আমার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর পক্ষে সম্ভব ছিল না। আসার পথে জঙ্গল থেকে কাঠ জোগাড় করে ওই পাঠাতন বানাই। তাতেই স্ত্রীকে চাপিয়ে ফিরছিলাম।’

তেলঙ্গানা থেকে মহারাষ্ট্র হয়ে নিজের জেলায় ফেরেন রামু। পথে মহাকুমা শাসক নীতেশ ভার্গভের নেতৃত্বে পুলিশদের একটি দল দেখতে পান তাদের। তারাই খাবার ও পানি দেন রামুদের। রামুর মেয়ের জন্য চটিও কিনে দেন তারা। এ ব্যাপারে নীতেশ ভার্গভ বলেছেন, ‘আমরা ওই পরিবারের শারীরিক পরীক্ষা করাই। তারপর বালাঘাটে গ্রামে যাওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করি।’

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া অপর একটি ভিডিওতে এক শ্রমিককে দেখা যাচ্ছে, বলদ সঙ্গে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন গাড়ি। সেই গাড়িতে বসে রয়েছে তার ভাই ও শাশুড়ি। ২৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে এভাবেই নিজের গ্রামে পৌঁছেন তিনি।