৪৬ দশমিক ৬৬ শতাংশই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জফেরত

বগুড়ায় প্রতিদিন গড়ে দু’জন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন

অরূপ রতন শীল
প্রকাশ: ১৬ মে ২০২০ ০৯:৪৫ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৮৩৪ বার।

বগুড়ায় প্রতিদিন গড়ে দু’জন মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। আর আক্রান্তদের ৪৬ দশমিক ৬৬ শতাংশই ঢাকা কিংবা নারায়ণগঞ্জফেরত। পরিসংখ্যান বলছে, এ জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যাননি বরং ১৫ শতাংশ বা ৯জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। আর করোনা উপসর্গ নিয়ে যে ৬জনের মৃত্যু হয়েছে মৃত্যুর আগে কিংবা পরে সংগ্রহ করা নমুনা পরীক্ষায় দেখা গেছে তাদের কেউ কোভিড-১৯ পজিটিভ ছিলেন না।
বগুড়ার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলার বাসিন্দা হিসেবে আদমদীঘি উপজেলার পুলিশ কনস্টেবল আহসান হাবিবের শরীরে গত ১৬ এপ্রিল প্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। তার পর থেকে ১৫ মে পর্যন্ত এ জেলায় মোট ৬০জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর আক্রান্তদের মধ্যে প্রথম সেই ব্যক্তিসহ ২৮ জনই ঢাকা কিংবা নারায়ণগঞ্জফেরত। যা মোট আক্রান্তের ৪৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ। জেলায় গত ১৩ মে সর্বোচ্চ ১১জনকে করোনা পজিটিভ বলে ঘোষণা দেয় স্বাস্থ্য বিভাগ। ওই ১১জনের ৭জনই ঢাকাফেরত। 
বগুড়ায় অন্যান্য পেশার তুলনায় পুলিশ সদস্যদের মধ্যে করোনায় আক্রান্তের হার সবেচেয়ে বেশি। গত এক মাসে বগুড়ায় মোট ১১ জন পুলিশ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। নার্সদের মধ্যে ৪ জন এবং আরও দু’জন চিকিৎসক কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন।
বগুড়ায় করোনা উপসর্গ এবং আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য জেলা সদরের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালকে ২৬ মার্চ আইসোলেশন ইউনিট হিসেবে গড়ে তোলা হয়। তখন বগুড়ার করোনা উপসর্গযুক্ত রোগীদের নুমনা রাজশাহী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হতো। মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে গত ৩০ মার্চ প্রথম ভর্তি হন রংপুরের বাসিন্দা শাহ্ আলম। তার নমুনা রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পাঠানোর পর ১ এপ্রিল তাকে পজিটিভ বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। তার ১৫দিন পর ঢাকাফেরত পুলিশ কনস্টেবল বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার শাওইল গ্রামের বাসিন্দা আহসান হাবিবকে করোনা আক্রান্ত বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। তার পর ২১ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জফেরত এক ট্রাক চালক করোনা আক্রান্ত হলে ওইদিনই স্থানীয় প্রশাসন পুরো জেলাকে লকডাউন বা অবরুদ্ধ ঘোষণা দেন।
বগুড়ায় করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি সংগৃহিত নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পেতে বিলম্ব হওয়ায় গত ২১ এপ্রিল এ জেলায় অবস্থিত শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে করোনা সনাক্তকরণ শুরু হয়। বগুড়া জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জেলায় গত ১৫ মে পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৯৩৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
করোনা আইসোলেশন ইউনিট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এটিএম নুরুজ্জামান সঞ্চয় জানান, সেখানে করোনা আক্রান্ত ১০জন ভর্তি রয়েছেন। এছাড়া করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও একজন চিকিৎসাধীন। তিনি বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত একজন নার্সকে আজ (১৬ এপ্রিল) ছুটি দেওয়া হয়েছে।’
বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন সাংবাদিকদের জানান, মূলত ঢাকা ও নারাণগঞ্জফেরত লোকজনের মাধ্যমেই বগুড়ায় করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, আক্রান্তদের মধ্যে যাদের তেমন উপসর্গ নেই তাদেরকে নিজ নিজ বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে রেখেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।