বগুড়ায় মেস ভাড়ার জন্য আটকে রাখা ৫ ছাত্রীকে উদ্ধার

পুণ্ড্রকথা রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৭ মে ২০২০ ১৩:৪৮ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৫৩২৩ বার।

দুই মাসের অগ্রিম ভাড়ার জন্য আটকে রাখা বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাঁচ ছাত্রীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার দুপুরে কামারগাড়ী এলাকায় শিউলী ছাত্রীনিবাসে এই ঘটনা ঘটে বলে বগুড়া স্টেডিয়াম ফাঁড়ির এসআই জাহাঙ্গীর আলম জানান।

করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে কর্মহীন অবস্থায় অনেক বাড়ির মালিক ঘর মওকুব করেছেন। ঠাকুরগাঁওয়ের এক মেস মালিক তার দুটি মেসের নিবাসীদের আগামী ছয় মাসের ভাড়া না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের প্রায় দশ হাজার ছাত্রছাত্রী হলে সিট না পেয়ে কলেজের পাশে কামারগাড়ী, জহুরুল নগর, পুরান বগুড়া, জামিলনগরে প্রায় পাঁচশ ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাসে থেকে লেখাপড়া করেন। এসব ছাত্র-ছাত্রীরা বেশিরভাগই অন্য জেলা থেকে এসে লেখাপড়া করেন।

শিউলী ছাত্রীনিবাসের বাসিন্দা ছাত্রী বীথি সাংবাদিকদের বলেন, দুপুরে শিউলী ছাত্রীনিবাসের পাঁচ ছাত্রী বাড়ি যাওয়ার জন্য বই কাপড়-চোপড় বের করার সময় নিবাসের তত্ত্বাবধায়ক রেনু বেগম আগাম দুই মাসের ভাড়া ছাড়া তাদের বের হতে বাধা দেন। এ নিয়ে ছাত্রীরা তর্কে জড়িয়ে পড়েন নিবাসের মালিক।

“এক পর্যায়ে ছাত্রীনিবাসের মালিক ছাত্রীদের ভেতরে রেখে মুল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়।”

এসআই জাহাঙ্গীর আলম জানান, খবরটি ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ ও গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় শতাধিক ব্যক্তি ও ছাত্রীনিবাসের মালিক এক হয়ে পুলিশকে বোঝানোর চেষ্টা করে।

“এ সময় পুলিশ পাঁচ ছাত্রীকে তালাবন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার করে। পরে ওই পাঁচ ছাত্রী বই, কাপড়-চোপড়সহ বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা দেন।”

এই ছাত্রীনিবাসে প্রায় ৫০ জন ছাত্রী থাকেন বলে এসআই জাহাঙ্গীর জানান।  


শিউলী ছাত্রনিবাসের তত্ত্বাবধায়ক রেনু বেগম বলেন, “বাড়ির মালিক রমজান আলীর সঙ্গে কথা বলে অন্যান্য মালিকদের সঙ্গে নিয়ে তালা ঝুলিয়েছিলাম।”
ছাত্রীনিবাসের এক মালিক মো. মাছুম বলেন, “আমরা ছাত্রীনিবাসের মালিকরা এক হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগাম দুই মাসের ভাড়া ছাড়া কাউকে বই কাপড়-চোপড় নিয়ে বাড়ি যেতে দেব না। তাই সবাই মিলে ভাড়া না দেওয়ায় তালাবন্ধ করা হয়।

ওই ছাত্রীনিবাসের ছাত্রী বীথি আরও বলেন, “মে মাস পর্যন্ত ভাড়া পরিশোধ করা হয়েছে। আগাম আরও দুই মাসের ভাড়া চায়। করোনাভাইরাসের সময় বিভিন্ন ছাত্র ও ছাত্রীনিবাসের মালিকরা জোট হয়ে এভাবে নির্যাতন করছে। ভাড়াও তারা বেশি নেয়।”

জহুরুলনগরের একটি ছাত্রীনিবাসের মালিক আসলাম আলী বলেন, এটা অমানবিক। আজিজুল হক কলেজের আশেপাশে প্রায় ৫শটি ছাত্র ও ছাত্রীনিবাসের ১০ হাজারের মতো শিক্ষার্থী থাকেন। করোনাভাইরাসের সময় বেশিরভাগ মালিক এরকম করছে।