বগুড়া নিউ মার্কেট খুললেও স্বাস্থ্যবিধির কারণে আবারও বন্ধ হতে পারে

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১৮ মে ২০২০ ০৯:০২ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৩১৬ বার।

বগুড়ার সবচেয়ে বড় বিপনীবিতান ‘নিউ মার্কেট’ আবার খুলেছে। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি মোকাবেলায় ‘স্বাস্থ্যবিধি মানা হবে’- জেলা প্রশাসনকে এমন নিশ্চয়তা দিয়ে সোমবার সকাল থেকে পুরো দমে কেনা-বেচা শুরু করেছেন ওই মার্কেটের দোকানিরা। তবে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে প্রশাসনকে দেওয়া স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার সেই আশ্বাস ক্রেতা-বিক্রেতাদের কেউই শতভাগ মানতে পারছেন না। এ কারণে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কয়েকটি দোকানে জরিমানাও করেছেন। বগুড়ার জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ জানিয়েছেন, যদি দেখা যায় স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না তাহলে নিউ মার্কেট আবারও বন্ধ করে দেওয়া হবে।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রায় দেড় মাস বন্ধ থাকার পর গত ১০ মে সারাদেশের ন্যায় বগুড়ার নিউ মার্কেট খুলে দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য বিধি মেনে সীমিত আকারে কেনা-কাটা করার জন্য সরকারি নির্দেশনা থাকলেও কেউ তা না মানায় তিনদিনের মাথায় ১৩ মে দুপুরে প্রশাসনের নির্দেশে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে বগুড়ার অন্যসব বিপনীবিতান খোলা রেখে শুধু নিউ মার্কেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে নাখোশ হন দোকানিরা। তাই সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনার আবেদন নিয়ে নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতির নেতৃত্ব জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন।
এমন পরিস্থিতিতে গত ১৭ মে রোববার বগুড়া জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বৈঠকে বসেন। সেখানে নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ মানবিক কারণে তাদের মার্কেট খুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এ সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে কেনা-কাটা করা হবে- এমন নিশ্চয়তা চাওয়া হলে নিউ মার্কেট মালিক সমিতির পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানানো হয়।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নিউ মার্কেটের বিভিন্ন প্রবেশ পথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ সম্বলিত ব্যানার লাগানো হয়েছে। তাতে ‘মাস্ক ও গøাভস ছাড়া মার্কেটে প্রবেশ নিষেধ’ কথাটি লেখা রয়েছে। তবে বাস্তবতা হলো- অনেকেই সেই নির্দেশনা মানছেন না। মার্কেটে প্রবেশকারীদের সিংহভাগ লোকের হাতে গøাভস নেই। কেনা-কাটা করতে আসা লোকজনকে প্রবেশপথে জীবাণুনাশক মিশ্রিত পানি স্প্রে করা হলেও দোকানগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাউকেই সামাজিক দূরত্ব রক্ষায় কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। সব দোকানের সামনেই গাদাগাাদি অবস্থা।  
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রে জিএম রাশেদুল ইসলাম সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নিউ মার্কেট ঘুরে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে কেনা-বেচার প্রমাণ পেয়েছেন। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে ৫টি দোকান এবং ভোক্তা অধিকার আইন অমান্য করায় আরও একটিসহ মোট ৬টি দোকানে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘মার্কেটে একাধিক গেট থাকায় বিপুল সংখ্যক লোক ঢুকে পড়ছে এবং তাদের মুখে মাস্ক নেই। সে কাররেণ আমরা নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দকে বলেছি তারা যেন একটি গেট দিয়ে লোকজনদের প্রবেশ করান এবং আরেকটি গেট দিয়ে বের করে দেন। আর স্বাস্থ্যবিধিগুলো আরও কঠোরভাবে মেনে চলেন।’
অবশ্য নির্বাহী ম্যাািজস্ট্রেটের অভিযানের পর পরই মার্কেটের বেশ কয়েকটি প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে ভিড়ও কিছুটা কমে যায়। বগুড়া বৃহত্তর নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাশেদ জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনা- বেচার জন্য তারা প্রত্যেক দোকান মালিককে অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটা যাতে শতভাগ নিশ্চিত করা যায় সেজন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ বগুড়ার জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ বলেন, ‘যদি ব্যবসায়ীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনা- বেচা করতে না পারেন তাহলে আমরা নিউ মার্কেট আবারও বন্ধ করে দেব।’