স্বাস্থ্য বিভাগের আশঙ্কা

বগুড়ায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে

পুণ্ড্রকথা রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২০ ১২:০৯ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৮৮১ বার।

গেল এক সপ্তাহের পরিসংখ্যান বলছে বর্তমানে বগুড়ায় প্রতিদিন গড়ে ৩৭জন করে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হচ্ছেন। তবে আগামীতে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের আশঙ্কা।
স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বগুড়ায় গত ১ এপ্রিল প্রথম এক ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। সেই থেকে ২ জুন পর্যন্ত ৬৩দিনে ৪৪৯জন আক্রান্ত হয়েছেন। যা রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলার মধ্যে সর্বোচ্চ। রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় করোনার আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৪৫। যার ৪২ দশমিক ৯৬ শতাংশই বগুড়ার বাসিন্দা। 
করোনার হটস্পট বগুড়ার সাধারণ মানুষের পাশাপাশি চিকিৎসক ও নার্সসহ স্বাস্থ্য বিভাগের ২৬জন এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার এক কর্মকর্তাসহ ওই বাহিনীর ৪১জন সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন।
রাজশাহী বিভাগের অন্য জেলার মধ্যে বগুড়ার পরেই করোনার সংক্রমণ বেশি জয়পুরহাটে। সেখানে ২ জুন পর্যন্ত মোট ১৮৭জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর পরেই রয়েছে নওগাঁ। সেখানে মোট ১৩২জন আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া পাবনায় ৪৯জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫৪জন এবং রাজশাহী, নাটোর ও সিরাজগঞ্জ জেলায় এ পর্যন্ত ৫৮জন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। 
বগুড়ায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত ২১ এপ্রিল জেলাকে লকডাউন বা অবরুদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকার কথা চিন্তা করে সরকারের পক্ষ থেকে ১০ মে সারাদেশে দোকান-পাট ও মার্কেটগুলো খুলে দেওয় হয়। অবশ্য সীমিত পরিসরে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনা-বেচার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও বগুড়ায় অনেক ক্ষেত্রেই তা মানা হয়নি। যে কারণে খোলার ৩ দিনের মাথায় ১৩ মে বগুড়ার সবচেয়ে বড় বিপনী বিতান নিউমার্কেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে আবার ১৮ মে খুলে দেওয়া হয়।
বগুড়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এ জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা মূলত ঈদুল ফিতরের দু’দিনের মাথায় ২৭ মে থেকে বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করেছে। ১ এপ্রিল থেকে ২৬ মে পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৯০জন। কিন্তু ২৭ মে একদিনেই আক্রান্ত হন ৫০জন। সেই থেকে  ২ জুন পর্যন্ত ৭দিনে ২৫৯জন আক্রান্ত হয়েছেন। অর্থাৎ মোট জেলায় মোট আক্রান্তের ৫৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র এক সপ্তাহে।
জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন বগুড়াকে রাজশাহী বিভাগে করোনার ‘হটস্পট’ উল্লেখ করে জানিয়েছেন, মূলত দু’টি কারণে এ জেলায় করোনার সংক্রমণ বেড়েছে। একটি হলো ১০ মে মার্কেট ও দোকান-পাট খুলে দেওয়া এবং দ্বিতীয়টি হলো ঈদের ছুটিতে রাজধানী ঢাকাসহ বড় বড় শহর থেকে মানুষের ফিরে আসা। তিনি বলেন, এখন যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তারা কোন না কোনভাবে মার্কেট ও দোকান-পাট থেকে সংক্রমিত হয়েছেন। তবে ঈদের ছুটিতে যারা এসেছেন তাদের সংক্রমণের চিত্রটি পাওয়া যাবে আর ক’দিন পর। কারণ ভাইরাসটি পিক হতে ৮/১০দিন সময় লাগে। সেই সময়টা এলে আক্রান্তের সংখ্যা বর্তমানের চেয়ে আরও বাড়তে পারে বলেই আমরা আশঙ্কা করছি।’