যেভাবে দিলীপ কুমার হয়ে উঠলেন আজকের এআর রহমান

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২০ ০৮:১৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৪৮ বার।

নয় বছর বয়সেই বাবাকে হারিয়ে দারুণ অর্থকষ্টে পড়েছিলেন দিলীপ কুমারের পরিবার। সঞ্চয় যা ছিল অসুস্থ্য বাবার চিকিৎসা করাতেই তা শেষ। বাবার অবর্তমানে ছোট ভাইবোন আর মা'কে নিয়ে অভাবের সাথে শুরু হয় দিলীপের নতুন এক যুদ্ধ। 

বাবা আরকে শেখর ছিলেন মালয়লম সিনেমার একজন সুরকার। মাত্র ৪৩ বছর বয়সেই মারা যান তিনি। বাবার সঙ্গে মাঝে মাঝে কিবোর্ড বাজাতেন ছোট্ট দিলীপ। বাবার কাছ থেকে পাওয়া সংগীতের ওই দীক্ষাটুকুই সম্বল ছিল কিশোর দিলীপের।

অর্থকষ্ট কিছুতেই তাদের পিছু ছাড়ছিল না। মায়ের অনুমতি নিয়ে তাই লেখাপড়া ছাড়লেন কিশোর দিলীপ। নিজেকে পুরোপুরি নিয়োজিত করলেন সংগীতের জগতে।

বাদযন্ত্রের প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল কিশোর দিলীপের। ১১ বছর বয়সেই তালিম নেয়া শুরু করেন বাদ্যযন্ত্রের প্রখ্যাত ওস্তাদ মাস্টার ধনরাজের কাছে। একসময় নিজস্ব গানের দলও গড়ে তুললেন কিশোর দিলীপ। এ ছাড়া পয়সার জন্য নিজের শহর মাদ্রাজের (চেন্নাই) বিভিন্ন ব্যান্ডেও কিবোর্ড বাজানো শুরু করলেন তিনি। কিন্তু সংসারের অভাব অনটন তাতেও যাচ্ছিলো না।

দিলীপ করছিলেন অর্থের খোঁজ আর তার মা কস্ত্তুরী পরিবারের শান্তির খোঁজে ছুটছিলেন বিভিন্ন ধর্মস্থানে। বিভিন্ন ধর্মের প্রতি তাদের পরিবারের আগে থেকেই ছিল যথাযথ সম্মানবোধ ও উদার মনোভাব।

জীবনের এমনই এক কঠিন সময়ে পূর্ব পরিচিত এক সুফিসাধক তাদের পাশে দাঁড়ালেন। বৃদ্ধ ও অসুস্থ এই সুফিসাধকের সংস্পর্শেই দিলীপের সমস্যা জর্জরিত পরিবার শান্তির হদিস পায়।

পরবর্তীতে সুফিবাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ১৯৮৬ সালে কস্তুরী তার সন্তানদের নিয়ে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম হন। নাম নেন করিমা।

অন্যদিকে নতুন নামের পরামর্শ নিতে দিলীপ ছুটে যান জ্যোতিষীর কাছে। জ্যোতিষী গণনা করে বললেন, ‘আবদুল রহমান’ বা ‘আবদুর রহিম’ এর মধ্যে যে কোনো একটি নাম তার জন্য শুভ হবে।

১৯ বছরের দিলীপের কাছে ‘রহমান’ নামটিই পছন্দ হলো। মা বললেন, নামের আগে ‘আল্লারাখা’ কথাটা রাখতে। মায়ের কথাও রাখলেন রহমান। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই তরুণ হয়ে উঠলেন সংগীত জগতের দিকপাল ‘এআর রহমান’। আজ এ নামটি নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান।

এআর রহমানের সুরে তাই বারবার ফিরে এসেছে সুফিগানের প্রভাব। খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছেও এআর রহমান নিজের মায়ের অবদানকে ভুলেননি। এখনও সব কৃতিত্বের জন্য মায়ের ভুমিকাকেই বড় করে দেখেন তিনি। (আনন্দবাজার পত্রিকা থেকে সংকলিত)

পুণ্ড্রকথা/জাআ