লঞ্চডুবি: ২ বছরের ছেলেকে বুকে জড়িয়েই মায়ের মৃত্যু

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২০ ১৭:১৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৫৬৮ বার।

দীর্ঘদিন থেকেই ঢাকার এপ্যোলো হাসপাতালে ডাক্তার দেখানের কথা লৌহজংয়ের পাড়াগাও গ্রামের মারফি আক্তারের (২৮)। বুকের ব্যাথা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় সোমবার ২ বছরের ছোট্ট ছেলে তালহা ও ভগ্নিপতি মো. আলম (৪০) কে সঙ্গে নিয়েই ঢাকায় আসছিলেন মারফি। কিন্তু ঢাকা পৌছানের আগেই বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চ দুর্ঘটনায় ছেলেকে বুকে নিয়েই মারা যান সে।

দেশ রুপান্তর জানায়, সন্তানকে বুকের সাথে জড়িয়ে থাকা অবস্থাতেই মারফির লাশ উদ্ধার করা হয়। কিছুক্ষন পর ভগ্নিপতি মো. আলমের লাশও উদ্ধার করা হয়েছে।

মারফি'র ভাগ্নে মিলন গণমাধ্যমকে জানান, মারফি'র স্বামী বেলায়েতের (৩৮) গ্রামে মুদি দোকান আছে। এপ্যোলো হাসপাতালে অনেকদিন ধরেই ডাক্তার দেখানোর কথা তার। রবিবার রাত থেকে হঠাৎ বুকের ব্যাথা বেড়ে গেলে সোমবার বড় বোনের জামাই মো. আলমের সঙ্গে ছোট ছেলে তালহাকে নিয়েই ঢাকার পথে রওনা দেন তিনি। কিন্তু ভাগ্যের নির্মন পরিহাস, গন্তব্য অবধি পৌঁছুতেই পারলেন না মারফি আক্তার।

সোমবার সকালে মুন্সিগঞ্জের কাঠপট্টি থেকে মর্নিং বার্ড নামে একটি লঞ্চে ঢাকার সদরঘাটে আসছিলেন তারা। সদরঘাটের কাছাকাছি ফরাশগঞ্জ এলাকায় আসতেই পেছন থেকে এমভি ময়ূরী-২ পিছন থেকে মর্নিং বার্ড লঞ্চটিকে ধাক্কা দেয়। এতে সব যাত্রী নিয়েই মর্নিং বার্ড লঞ্চটি ডুবে যায়। অল্প কিছু যাত্রী সাঁতরে উঠতে পারলেও বেশিরভাগ যাত্রী তলিয়ে যায়।

টিভিতে লঞ্চ দুর্ঘটনার খবর দেখে মারফির পরিবারের স্বজনরা দ্রুতই ঘটনাস্থলে আসেন। বেলা ১২টার দিকে মারফির লাশ উদ্ধার করে ডুবরিরা। ছোট্ট শিশু তালহাকে হাত দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে রেখে ছিলেন মারফি। ওই অবস্থাতেই তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।

উপস্থিতরা জানান, হয়ত শিশুটিকে ছেড়ে দিয়ে নিজে বাঁচার চেষ্টা করলে বাঁচতেও পারতেন মা। 

এর কিছুক্ষণ পর আলমের লাশও উদ্ধার করে ডুবুরিরা। উদ্ধারের পর লাশ পাঠিয়ে দেওয়া হয় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মর্গে। 

সেখান থেকে স্বজনরা লাশ বুঝে নিয়ে লৌহজং পাড়াগাওয়ের উদ্দেশে রওনা দেন।

পুণ্ড্রকথা/জাআ