শজিমেকে ৫০ শয্যার নতুন ওয়ার্ড চালু

বগুড়ায় করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার সুযোগ বাড়লো

পুণ্ড্রকথা রিপোর্ট
প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২০ ০৫:০৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১১৬৯ বার।

বগুড়ায় কোভিড-১৯ আক্রান্তদের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এবার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপতালেও ৫০ শয্যার ‘করোনা ওয়ার্ড’ চালু করা হলো। শজিমেক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নতুন ওই ওয়ার্ডে সাধারণ ৪৫টি শয্যা এবং বাকি ৫ শয্যা নিয়ে একটি ইনটেনসিভ কেয়ার (আইসিইউ) ইউনিট গড়ে তোলা হয়েছে। রোববার সকালে নতুন ওই ইউনিট চালু হওয়ার পর ২৪ ঘন্টার মধ্যে সেখানে করোনা আক্রান্ত ১৩জনকে ভর্তি করা হয়েছে।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ার ১৯ দিনের মাথায় ২৬ মার্চ বগুড়ায় ২৫০ শয্যার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালকে করোনা আক্রান্ত এবং উপসর্গযুক্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা হয়। যেহেতু করোনা উপসর্গ এবং আক্রান্তদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ দূরত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক তাই ২৫০ শয্যার ওই হাসপাতালকে ১২০ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট হিসেবে গড়ে তোলা হয়। পরবর্তীতে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ভেন্টিলেটর সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন ৮ শয্যার ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটও (আইসিইউ) স্থাপন করা হয়।
গত ২৮ জুন পর্যন্ত জেলায় মারাত্মক ছোঁয়াচে ওই ভাইরাসে ২ হাজার ৭৮২জন আক্রান্ত হয়েছেন। শুরুতে বগুড়ায় সংগ্রহ করা নমুনা রাজশাহী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা করা হতো। তবে করোনা উপসর্গযুক্ত মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকায় পরবর্তীতে ২০ এপ্রিল প্রথমে বগুড়া সরকারি শজিমেক এবং ৩১ মে বেসরকারি টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের (টিএমসি) পিসিআর ল্যাবে করোনা সনাক্তরণ শুরু হয়। উভয় ল্যাবে প্রতিদিন ১৮৮টি করে ৩৭৬টি নমুনা পরীক্ষা করা যায়। 
তবে বগুড়ায় করোনা উপসর্গযুক্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন গড়ে ৫০০টি করে নমুনা সংগ্রহ করতে হচ্ছে। যে কারণে পরীক্ষার ফলাফল পেতে বিলম্ব হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী ২৮ জুন পর্যন্ত ২ হাজার ৪৯৬টি নমুনা পরীক্ষার অপেক্ষায় পড়ে আছে। ওইদিন পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৭ হাজার ৭১৭টি আর পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে ১৫ হাজার ২২১টির। ফলাফল বিলম্বিত হওয়ায় নমুনা প্রদানকারীদের মধ্যে যারা পজিটিভ হয়ে আছেন রিপোর্ট না পাওয়ার কারণে তারা স্বাভাবিক চলাচল অব্যাহত রেখে নিজেদের অজান্তেই অন্যদেরও সংক্রমিত করছেন। আর এভাবেই বগুড়ায় করোনা আক্রান্তদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সেখানে করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। ১২০ শয্যার করোনা আইসোলেশন ইউনিটে ২৯ জুন সকাল পর্যন্ত ১২৯ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। আর ৮ শয্যার আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন ৫জন। মোহাম্মদ আলী হাসপতাালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. এটিএম নুরুজ্জামান সঞ্চয় জানান, জেলার একমাত্র সরকারি হাসপাতাল হওয়ার কারণে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে এখন শজিমেক হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ড চালু হওয়ায় মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের চাপ কিছুটা হলেও কমবে। তিনি বলেন, ‘যেসব রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন সেই রোগীগুলোকেই আমরা মেডিকেলের করোনা ওয়ার্ডে পাঠাবো।’
বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ জানান, তাদের ৫০ শয্যার করোনা ওয়ার্ডে রোগীদের চিকিৎসা প্রদানের জন্য ১০জন চিকিৎসক, ১৬জন নার্স এবং আরও ১৬জন স্বাস্থ্যকর্মীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এক সপ্তাহ পর পর নতুন চিকিৎসক নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা পালাক্রমে করোনা ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করে যাবেন।’