নওগাঁয় যৌতুকের দাবিতে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া গৃহবধুকে মামলা তুলে নিতে হুমকি

নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২০ ০৯:৫৭ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১২৯ বার।

নওগাঁর ধামইরহাটে ১০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতনের পর বাড়ি থেকে বের দেয়া হয়েছে শারমিন আক্তার নামে এক গৃহবধুকে। স্বামীর সংসারে ফিরে যেতে স্থানীয় ভাবে অনেক সালিশ বেঠক করেও কোন লাভ  হওয়ায় বাধ্য হয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন ওই গৃহবধু। পুলিশ গৃহবধুর স্বামী আব্দুল মমিনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠায়। এখন উল্টো মামলা তুলে নিতে ওই গৃহবধুসহ তার পরিবাররের সকলকে  
হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে পরিবারের সকলকে হত্যা করা হবে বলে ওই গৃহবধুর পরিবারের পক্ষ থেকে শনিবার থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে গত ২০১৯ সালে পরিবারিক ভাবে আগ্রাদ্বিগুন ইউনিয়নের শাহাজাহান আলীর এম এ  পাস মেয়ে মোছা. সারমিন আক্তারের সাথে বিয়ে হয় পার্শ্ববতী রামচন্দ্রপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে আগ্রাদ্বিগুন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল মমিনের সাথে। বিয়ের ৩মাস পর যৌতুকলোভী স্বামী আব্দুল মমিন মোটর সাইকেল দাবী করে, না দিতে পারলে শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন, গরীব বাবা মেয়ের সংসারে সুখের কথা চিন্তা করে দেড় লাখ টাকায় ১টি মোটরসাইকেল কিনে দেয়। এর মাস খানেক পর আবারও স্ত্রী সারমিনের নিকট ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে আব্দুল মমিন। যৌতুকের এত বড় অংকের টাকা দিতে না পারায় চলতি বছরের ২৯ মার্চ শশুর বাড়ীর লোকজন মারপিট করে স্বামীর বাড়ি থেকে বের করে দেয়। ওইদিন বাধ্য হয়ে  শাহাজাহান আলী তার মেয়েকে নিজ বাড়ীতে নিযে আসেন। সারমিন স্বামীর সঙসারে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে এলাকায় একাধিকবার বৈঠক হলেও স্ত্রীকে ফিরে নেওয়ার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত না হওয়ায় বাধ্য হয়ে সারমিন স্বামী ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে গত ২৫ এপ্রিল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায পুলিশ আব্দুল মমিন ও তার পিতা আব্দুস ছাত্তারকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠায়। সম্প্রতি শ্বশুর জামিনে বের হয়ে এসে তার কন্যা রওশন আরাকে সাথে নিয়ে সারমিনের বাবার বাড়িতে এসে মামলা তুলে  নেয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন সারমিন ও বাবা শাহাজান আলী।
স্ত্রী সারমিন জানান, আমার বাবা গরীর হিসেবে ৪ ভরি সোনা ও দেড় লাখ টাকা এনজিও  থেকে ঋণ করে দিয়েছে আমার সুখে জন্য, কিন্তু কপাল খারাপ যে এমন স্বামী পেয়েছি, আমার স্বামী অন্যত্র বিয়ে করলে নাকি ২৫ লাখ টাকা পাবে, তাই আমাকে তাড়াতে এই নির্যাতন’ ও যৌতুক দাবি।
এ বিষয়ে আগ্রাদ্বিগুন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেনজির আহমেদ জানান, যৌতুক ও নারী নির্যাতনের মামলা হওয়ায় সহকারী শিক্ষক আব্দুল মমিনকে ম্যানেজিং কমিটি সাময়িক বরখাস্ত করেছে।
তবে অভিযুক্ত শশুর আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘আমাকে যখন জেল খাটতে হয়েছে, তাহলেই সেই বউকে নিয়ে সংসার করা যাবে কি না ভাবতে হবে, আর আমরা কোন টাকা পয়সা চাইনি বা হুমকিও কাউকে দেইনি।
এ বিষয়ে ধামইরহাট থানার ওসি  মো. আবদুল মমিন জানান, ঘটনার বিষয়ে ধামইরহাট থানায় চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল একটি মামলা হয়েছিল, সেই প্রেক্ষিতে ১ নং আসামী এখনও হাজতে আছে, বাদীকে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে নতুন ভাবে অভিযোগ করে একটি জি.ডি দায়ের করেছে বাদী সারমিন আক্তার। হুমকির বিষয়ে খোজ খবর নেওয়া হচ্ছে।