বগুড়া- ৫ আসনে

যমুনা তীরের মানুষের আস্থা নৌকায়

আমিনুল ইসলাম শ্রাবণ
প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০১৮ ১২:৩৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২২০ বার।

রাক্ষুসী যমুনা নদীর আক্রমনের শিকার হয়েছেন কৃষক জিন্দার আলী। নদীর পেটে ভিটা হারিয়ে ৩ বার পরিবর্তন করেছেন নিজের ঠিকানা। যমুনার সাথে যুদ্ধ করা এই কৃষকের স্বপ্ন এক সময় ডুবে যায় নদীর জলে। সময়ের ব্যবধানে জিন্দার আলীর স্বপ্ন গুলো জিন্দা (তাজা) হতে শুরু করেছে। বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের যমুনা তীরের এই কৃষক এবারের নির্বাচনে আস্থা রাখছেন নৌকায়।
কৃষক জিন্দার আলী জানান, রাক্ষুসী যমুনা নদী ভাঙ্গনের ফলে ৩ দফায় তার বসতভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। যমুনা সাথে যুদ্ধ করতে করতে বিদ্ধস্ত তাঁর পরিবার। নদী গর্ভে ভিটে হারিয়ে নতুন ঠিকানায় আশ্রয় নিয়ে স্বপ্ন পূরণ করা যায় না। সব স্বপ্ন গুলো যমুনার জলে ডুবে একটি স্বপ্ন তৈরী হয়। যদি যমুনার ভাঙ্গন রোধ হয়। জিন্দার আলী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়েছিলাম। আওয়ামী লীগের নেতারা কথা দিয়েছিল, ক্ষমতায় গেলে যমুনার হাত থেকে তাদের ভিটা রক্ষা করবে। কথা রেখেছে আওয়ামী লীগ। আগামী নির্বাচনেও তিনি আস্থা রাখছেন নৌকায়। 
ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের ভূতবাড়ী গ্রামের মোহর আলীর পেশায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি। যমুনা নদীর তীর থেকে মাত্র ২০০ ফিট অদূরে তার বাসত ভিটা। মোহর আলী বলেন, যুগ যুগ ধরে যমুনা তীরের মানুষের প্রত্যাশা ছিল, যমুনার ভাঙ্গন রোধ। যমুনার হাত থেকে অন্তত নিজের বসত ভিটা ও স্বজনদের কবর রক্ষা করা। সংসদ নির্বাচন এলে যমুনা তীরের মানুষ প্রার্থীদের কাছে ঘুরে ফিরে, এ দাবীটা করে আসছিল দীর্ঘদিন যাবত। ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত সংসদ সদস্য ছিলেন বিএনপির জিএম সিরাজ। কিন্তু যমুনার ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী কোন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারেননি তিনি। এজন্য ২০০৮ সালে আস্থা রেখেছিলাম নৌকায়। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে যমুনা নদীর ভাঙ্গন রোধে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ হয়েছে। যার কারনে আমার বাড়ীসহ ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়ন রক্ষা পেয়েছে যমুনার থাবা থেকে। 
বানিয়াজান গ্রামের চৈতন্য কুমার বলেন, যমুনার ভাঙ্গন রোধে বিএনপির কথার সাথে কাজের মিল ছিল না। দীর্ঘদিনে যমুনা তীরের মানুষের কাছে বিষয়টি প্রমানিত ছিল। এজন্য ২০০৮ সালে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়েছিলাম। চৈতন্য কুমার জানান, তার বাড়ী যমুনার তীরে। তীর সংরক্ষণ হওয়ায় তার বাড়ী এখনো ভাঙ্গনের শিকার হয়নি। নৌকা রক্ষা করেছে তার ভিটা। এবারের নির্বাচনেও চৈতন্য কুমার আস্থা রাখছেন নৌকায়। 
প্রসঙ্গত, এক দশকে ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নে যমুনা নদী শাসনে বর্তমান সরকার প্রায় ১৯৫ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। এতে বাঁধ ও স্পার সংস্কার, নতুন বাঁধ তৈরী এবং নদী খনন প্রকল্পের কাজ হয়েছে। তবে প্রায় ৫ কিলোমিটার যমুনা নদীর তীর সিসি ব্লক দিয়ে সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ হওয়ায় নদী ভাঙ্গন থেকে ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়ন রক্ষা পেয়েছে।