৭১’এর ছবি [চতুর্থ পর্ব]

সাজিয়া আফরিন সোমা
প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৮:৪০ ।
শিল্প ও সাহিত্য
পঠিত হয়েছে ৪৫৬ বার।

 

নাহিলের তাড়াহুড়া দেখে হিরন বিরক্ত,কি হয়েছে এতো পারাপারি তাড়াতাড়ি কেনো? সারাদিন তো পরে আছে। মনে হচ্ছে এখনই জয়েন করবি তুই!!!

নাহিলঃ এটা ছাড়াও তো আমার অন্য কাজ আছে,এটা নিয়ে বসে থাকলে তো হবে না। চল এবার,এমনিতেই এসেছিস দেরিতে।

হিরনঃ কোথায় যাবি এখন ?

নাহিলঃ এতো জানতে হবে না শুধু সাথে থাকবি।

হিরনঃ কাল বললে তো আমি আরও আগে বেরুতাম। কে জানে আজ তোর এমন তাড়া শুরু হবে!

নাহিলঃ এখনও সময় আছে,অসুবিধা হবে না। চল এবার বেরিয়ে পরি।

সোবহান আলীর স্ত্রী ব্যস্ত ভোর থেকেই। দুপুরেই ছেলে আর তার সাথে কয়েকজন আসবে,ছবি কিছুই জানতে চায়নি ছেলের বিষয়ে। আর জানতে চায়ও না। এদিকে কাজের ভিতরই সোনহান আলীর স্ত্রী তাগাদা দিচ্ছে ছবিকে একটু তৈরি হতে। ছবি কান দিচ্ছে না ওসবে। সে রিনিকে খাওয়ানো আর গল্প শুনানোতেই ব্যস্ত।

সোবহান আলীও এদিক ওদিকে দৌড়াদৌড়িতে ব্যস্ত। মেয়েটার একটা ব্যবস্থা করতে পারলে তার মাথা হালকা হয়।

শেষ পর্যন্ত ছবি সবার জেদে একটা মিষ্টি কালারের শাড়ি পরেছে,তেমন কোন সাজগোজ ছবির পছন্দ না। শেষ কবে সেজেছিলো সেটা আর মনে পরে না।

আজ সাব্বিরের কথা খুব মনে পরছে ছবির! ছবিকে শাড়িতে সাব্বির খুব পছন্দ করতো। তার পরেও শাড়ি পরতে দেখলেই বলতো এভাবে সব সময় শাড়ী পরবি না তো স্নিগ্ধা!

স্নিগ্ধা ভেংচি কেটে বলতো,তুমি বললেই আমি শুনবো কেনো? সাব্বির বলতো স্নিগ্ধা এভাবে নিজেকে জাহির করিস না। সবাইকে এটা বুঝাতে হবে না যে তুই বিয়ের যোগ্য হয়েছিস। একটু সময় দে আমাকে, পড়াটা শেষ করার।

স্নিগ্ধাঃ তুমি পড়েই যাও,আমার কোন দায় পরেনি তোমার জন্য বসে বসে বুড়ি হবো।

সাব্বিরঃ দেখিস একদিন আমার কথাই তোর বেশী মনে পরবে।

কিন্তু স্নিগ্ধা মনে মনে চাইতো সাব্বিরের জন্য অনন্তকাল অপেক্ষা করতে। কারন সে তো জানে তার মনের কোথাও একটু কিন কিন করে উঠে ওকে দেখলে। নাকের উপর বিন্দু বিন্দু ঘাম এসে জমা হয় সাব্বির ওর দিকে তাকালে। বিকেলে স্নিগ্ধা বাড়ির সামনে বসে থাকতো যদি একটু দেখা পায় তার!

পাশের বাড়ির ভাবীর ডাকে ছবি একটু চমকিয়ে উঠে। ছেলে আলাদা করে আগে কথা বলতে চায় ছবির সাথে,তাই ছবির ঘরেই ছেলের ভাবী আর ছেলেকে আনা হয়েছে।

- আমার বিষয়ে নিশ্চয় জেনেছেন?

- হ্যা জানি আপনার একটা মেয়ে আছে। তো আপনাদের ছাড়াছাড়ি টা কবে হয়েছে? আপনি হয়ত ভুল জেনেছেন অথবা আপনাকে ভুল জানানো হয়েছে। আমাদের কোন ছাড়াছাড়ি হয়নি। আর সেটা হওয়ারও কোন সুযোগ নাই।

- আমাকে একটু পরিষ্কার করে বলবেন, আপনার মেয়ে বা তার বাবার বিষয়ে?

(চলবে..)