ব্রাজিল-জার্মানি-আর্জেন্টিনা: শ্রেষ্ঠত্বের পতন!

জুবায়ের হাসান:
প্রকাশ: ১৮ জুন ২০১৮ ১২:৩৯ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৩৫৬ বার।

দিন কারো সমান যায় না। সর্বত্রই দিন বদলের পালায় ঢেউ লেগেছে। সবাই চাইছে নিজে বদলে যেয়ে অপরকে বদলাতে। লৌহকপাট ভেঙ্গে লোপাট করার নেশায় মত্ত হয়েছে মানুষ। প্রযুক্তি পৃথিবীকে এক বিরাট গ্রামে পরিণত করেছে। এখন আর কেউ ছেড়ে কথা বলবে না। বিশ্ব রাজনীতিতে ইঙ্গ-মার্কিন-ফরাসি ত্রয়ের মোড়লীপনায় রাশিয়া-চীন-ভারত-তুরস্ক যেমন করে ভাগ বসাতে চাইছে তেমনি করে ব্রাজিল-জার্মানি-আর্জেন্টিনার প্রভুত্বকে উড়িয়ে দিতে অপরাপর দেশ ডিনামাইটের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। আর তাতে রাশিয়ায় খেলতে আসা সেরাদের শ্রেষ্ঠত্বের পাহাড়গুলো একে একে ধসে পড়তে শুরু করেছে।  আমরা দেখতে পাচ্ছি যেন কোন এক আজব দেশে অবাক করা খেলা শুরু হয়েছে। সেই আজব দেশে এক নতুন ফুটবল পরাশক্তির সম্মিলিত জোট আভির্ভূত হতে চলেছে। সাবাশ! এই নবীন-নতুন, সবুজ-অবুঝকে আমরা সানন্দে স্বাগত জানাই। অভিনন্দন সুইস-আইস-মেক্সিকানদের। আসুন রবি ঠাকুরের সাথে সুর মিলিয়ে বলি-

“হেথা হতে যাও পুরাতন,
হেথায় নতুন খেলা আরম্ভ হয়েছে।
আবার বাজিছে বাঁশি, আবার উঠিছে হাঁসি,
বসন্তের বাতাস বয়েছে।”

আমরা জানি রবি ঠাকুরের এই আহবান খুব সহজেই পালিত হবার নয়। আমাদের রক্ত-মাংস-হাড্ডিতে মিশে আছে জিঘাংসা, প্রতিশোধ, পরনিন্দা, পরশ্রীকাতরতা, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও ঐতিহ্যের বড়াই। সর্বোপরি নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করার প্রবণতা। এ সবই ২০০ বছরের ঔপনিবেশিক শাসনের কুপ্রভাব, যাকে বলে ‘কলোনিয়াল ইফেক্ট’। এটারই বাস্তব প্রমাণ আর্জেন্টিনা সমর্থক হলে, ব্রাজিল যারই বিপক্ষে খেলবে তাকেই সমর্থন করবে। আবার, ব্রাজিলের সমর্থক হলে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। এমন দ্বিদলীয় দ্বান্দ্বিকতার প্রতি অন্ধ সমর্থনই প্রকৃত ফুটবলপ্রেমী হতে বাধা দেয়। তাই আবারও রবি ঠাকুরের আহবনে ফিরে যাই:

‘আয়রে নতুন আয়, সঙ্গে করে নিয়ে আয়,
তোর সুখ তোর হাসি গান
ফোটা নব ফুলচয়, ওঠা নব কিশলয়,
নবীন বসন্ত আয় নিয়ে।
যে যায় সে চলে যাক- সব তার নিয়ে যাক,
নাম তার যাক মুছে দিয়ে”