পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ

আত্রাইয়ে নাগর নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ভেসে গেল ১৫টি পরিবার

কাজী আনিুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ)
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১১:২৫ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১০৬ বার।

নওগাঁর আত্রাইয়ে নাগর নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ১৫টি বাড়ি পানির শ্রোতে ভেসে গেছে। গত কয়েকদিন থেকে অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার প্রায় ৮০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর সাথে সাথে বিলাঞ্চলের পানিও ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

উজানের পানি নেমে আসায় আহসানগঞ্জ, সমসপাড়া, কাশিয়াবাড়ি, চকশিমলা, বুড়িগঞ্জ হাটসহ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে মানুষের কেনা বেচাও বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার হাটকালুপাড়া ইউনিয়নের চকশিমলা, বড়শিমলা, সন্যাসবাড়িসহ ১৪ টি গ্রামের পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। কালিকাপুর  ইউনিয়নের ২৫ গ্রামের লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ ছাড়াও আহসানগঞ্জ ইউনিয়নের দমদমা, ঘোষপাড়া, আমপুর, দাঁড়িয়াগাথী, সিংসাড়া, থাঐপাড়া, পাঁচুপুর ইউনিয়নের বাঁকিওলমা, কাঁন্দওলমা, গোপালবাটি, মধ্যবোয়ালিয়া, জয়নাথপুর, মধুগুড়নই, পাঁচুপুরসহ ৮ ইউনিয়নের ২ শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

এদিকে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলার সাধনগর গ্রামে নাগর নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে প্রায় ১৫টি বসতবাড়ি ভেসে গেছে। এইক রাতে আত্রাই রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন ভরতেঁতুলিয়া গ্রামের রাস্তা ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। এতে করে ওই গ্রামের শতশত পরিবার আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। এ ছাড়াও বন্যাকবলিত বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ২০০ কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কাশিয়াবাড়ি স্লুইগেটে উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় আত্রাই-পতিসর সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে হাজার হাজার মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে।এ ব্যাপারে হাটকালুপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুস শুকুর সরদার জানান, এবারের প্রথম, দি¦তীয় ও তৃতীয় ধাপের বন্যায় উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে আমার ইউনিয়নটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ এবং পানিবন্দি হাজার হাজার মানুষ। তারা এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা এবং ত্রাণ তৎপরতা সচল রাখতে সকলের প্রতি তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন।

এদিকে বন্যাকবলিত মানুষদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ছানাউল ইসলাম উপজেলার বন্যাকবলিত বিভিন্ন গ্রামে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বন্যার্ত কোন মানুষ যেন অণাহারে বা অর্ধাহারে না থাকে। সে নির্দেশনা অনুযায়ী আমরাবন্যার্তদের সর্বাত্নক সহযোগিতা করছি। প্রয়োজনের আরও সহযোগিতা করা হবে। সেই সাথে স্থায়ীভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

এ পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আত্রাই উপজেলার বন্যার্ত বানভাসী মানুষের মাঝে যে পরিমান ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন অসহায় বানভাসী মানুষেরা।