বগুড়ায় সবজির দামে আগুন

আকতারুজ্জামান সোহাগ
প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২০ ১৩:০০ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৭৫৯ বার।

বগুড়ায় সবজির বাজার যেন আগুন লেগেছে। প্রতিটি সবজির দাম হু হু করে বাড়ছে। পিয়াজ-মরিচের সাথে পাল্লা দিয়ে এবার আলুতে যেন আগুন লেগেছে। সরকার খুচরা বাজারে আলুর দাম ৩০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও এখনো খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত ও দরিদ্রের মধ্যে চরম অসন্তোষ শুরু হয়েছে। আয়ের সাথে ব্যয়ের মিল না থাকায় সাধারণ মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে। তাদের মধ্যে চরম ও ক্ষোভ হতাশা বিরাজ করছে। সংসার কিভাবে চালাবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে। 

 

দাম ৩০ টাকা লেখা থাকলেও ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রির কারণ জানতে চাইলে রাজাবাজারের খুচরা ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম জানান, আমরা পাইকারী ৪৪-৪৫ টাকায় আলু কিনে আনছি আর বিক্রি করছি ৪৫-৫০ টাকায়। সরকার যে দাম বেধে দিয়েছে সেই দামে বিক্রি করলে আমাদের ক্ষতি হবে। আমরা লস দিয়ে তো আর বিক্রি করতে পারব না। 

 

ব্যবসায়ী হেলাল জানান, হিমাগার থেকে আলু কিনে আনতে ৪১ টাকা কেজি পড়ে যায়। দুই টাকা লাভে বিক্রি করতে হলে ৪৩ টাকা বিক্রি করতে হয়। আমরা তো লস দিতে পারবো না। তিনি জানান, সরকার যদি হিমাগারের বড় বড় ব্যবসায়ীদের দাম কমানোর নির্দেশ দেয় হবে অটোমেটিক বাজারে দাম কমে যাবে । 
 

এদিকে, বর্তমানে বাজারে আলু ছাড়াও সমস্ত জিনিপত্রের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পিয়াজ ৮৫ টাকা, কপি ৬০- ৭০ টাকা, মরিচ ১৮০ টাকা, বেগুন ৬০ -৭০টাকা, শসা ৪৫ টাকা, ঢেড়শ ৫০ টাকা, পটল ৭০ টাকা, করলা ৮০ টাকা,  লাউ ৪০-৪৫ টাকা, কচু ৩০ টাকা, বাধাকপি ৬০ টাকা, সিম ১০০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, পালং শাক ৬০ টাকা, লাল শাক ৪০ টাকা, পাটের শাক ৩০ টাকা, আদা ৮০- ১৬০ টাকা এবং রসুন ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে সাধারন মানুষের মধ্যে নাভিশ্বাস শুরু হয়েছে। 
 

দিনমজুর রিকশাচালক হাবিবুর জানান, দিনে কাজ করে ৪০০ টাকা রোজগার করি। সাতজনের সংসার। সবজি কিনতেই টাকা শেষ হয়ে যায়। আর চাল কিনব কি করে? চালের দামও বেশি। ভয়াবহ কস্টের মধ্যে দিনযাপন করতে হচ্ছে। সরকার যদি জিনিস পত্রের দাম না কমায় তা হলে আমাদের অর্ধাহারে দিন কাটাতে হবে।
 
আরেক ক্রেতা সুনির্মল কুমার জানান, যারা ছোটখাটো চাকরি, রিক্সা চালায়, দিনমজুরী করে তাদের কষ্টের শেষ নেই। যে আয় করে ব্যয় তার দ্বিগুণ হচ্ছে। ধারদেনা করে জীবন সংসার চালাতে হচ্ছে। এ অবস্থায় চললে সামনে আরো ভয়াবহ দুর্বিসহ ওঠবে সাধারণ মানুষের জীবনযাপন। 

 

বগুড়া জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক জানান, সবজির বাজার বিশেষ করে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের বেশি দাম না নেয়ার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।