নওগাঁয় যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর মৃত্যু

নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২০ ১৩:৫৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৭৬ বার।

নওগাঁর মান্দা উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের পারশিমলা গ্রামে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের শিকার মৌসুমি আক্তার(৩০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত গৃহবধুর রামেক হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে ওইদিন বিকেলে মৌসুমীর লাশ তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে। নিহত মৌসুমী ওই গ্রামের মিজানুর রহমানের স্ত্রী ও পাশের চকচোঁয়ার গ্রামের আফজাল হোসেনের মেয়ে বলে জানা গেছে। 
জানা গেছে জেলার মান্দা উপজেলার কশব ইউনিয়নের চকচোঁয়ার গ্রামের আফজাল হোসেনের মেয়ে মৌসুমী আক্তারকে প্রায় ১২ বছর আগে একই উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের পারশিমলা গ্রামের ইসাহাক আলীর ছেলে মিজানুর রহমান বিয়ে করে। তাদের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের সময় আফজাল হোসেন নগদ টাকাসহ বেশকিছু আসবাবপত্রও প্রদান করে জামাইকে। তবে বিযের পর থেকে আরো যৌতুকের জন্য মিজানুর রহমান মাঝে মধ্যেই মৌসুমীকে নির্যাতন করে আসছিল।
নিহত মৌসুমীর পিতা আফজাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন বিয়ের সময় নগদ টাকাসহ মূল্যবান উপহার সামগ্রী দেওয়ার পরেও জামাই সন্তষ্ঠ ছিল না। বিয়ের কিছু দিন যেতে না যেতেই আরও যৌতুক দাবি করে মিজানুর রহমান মৌসুমীর উপর নির্যাতন চালায় । মেয়ের সুখের বিষয় চিন্তা করে পরে আরো ৫০ হাজার টাকা দেই জামাইকে। কিন্তু মিজানুর আরো ১ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে বসে। সেই টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশের পর থেকে মিজানুর, মৌসুমীর উপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এর একপর্যায় মিজানুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা মিলে মৌসুমীর উপর গত বুধবার অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এসময় মৌসুমী জ্ঞান হারিয়ে ফেললে গ্রামবাসী তাকে উদ্ধার করে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওইদিন রাতেই মৌসুমীকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
সেখানে চিকিৎসাধীন থাকার ৫দিন পর মৌসুমী মারা যায়। এদিকে ঘটনার পর থেকে মিজানুর রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছেন। 
এদিকে এ বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে নিহত মৌসুমীর পিতা আফজাল হোসেন বলেন মেয়ের চিকিৎসা নিয়ে রাজশাহী অবস্থানের কারেন থানায় মামলা করা সম্ভব হয়নি। তবে খুব দ্রুতই নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দাযের করা হবে। 
এব্যাপারে নওগাঁর মান্দা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তারেকুর রহমান সরকার বলেন ঘটনা জানতে পেরেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এরপরেও বিষয়টি খোজঁ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা নেয়া হবে।