আর্জেন্টিনা কাঁদাবে না হাসাবে? বাঙালির মনে উৎকণ্ঠা!

জুবায়ের হাসান:
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০১৮ ১৫:১৯ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৪২৯ বার।

২৬ জুনের নিশুতি রাতে নির্ঘুম ভাবনা। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে বেবাক আর্জেন্টাইন সমর্থকদের চোখ থাকবে টিভি পর্দার ওপরে। কচি-কাঁচা ভক্তরা ততক্ষণে ঘুমিয়ে পড়বে। বিহান বেলায় ঘুম ঢুলু চোখে স্কোর লাইনটা তারা জানতে চাইবে। আর্জেন্টিনা হেরে গেলে সান্তনা দেবার জন্য বাবা হয়ত তাদেরকে বলবেন, ‘রেফরিটা খুব বজ্জাত ছিল’। শুধু এ কথাতেই কান্না থামানোর নিশ্চয়তা দেয়া যায় না। পাহাড়ের কান্নায় নদী সৃষ্টি হয়। মেঘের কান্নায় বৃষ্টি নামে। বৃক্ষের কান্নায় আসে রস-রাবার। কিন্তু বেদনার কান্নায় কি পাওয়া যাবে? বিষন্নতাকে ঝেরে ফেলে মন হালকা করার চেষ্টা বোধ হয়।
ইচ্ছে করলে মনের আর্শিতে আর্জেন্টিনাকে বিজয়ী কল্পনা করা যায়। কিন্তু দু’ নয়নে সে ছবি ভেসে উঠতে চায় না। আর্জেন্টিনা দলের চাঁদ-সিতারা আজো কি জ্বলে উঠবে না? প্রথম ম্যাচেই আইসল্যান্ডের কাছে বিষম খেয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে একদম জল চুবানি। তাহলে মেসির জারিজুরি কী শুধু বার্সালোনার জন্যে? নাইজেরিয়ার বিপক্ষে আজকে (২৬-০৬-১৮) তাঁর কারিকুরি কী একটুও দেখা যাবে না? সেই চিরচেনা মনোহারী আর্জেন্টিনার কী বিস্ফোরণ ঘটবে না?
আর্জেন্টিনাকে ঘিরে বাঙালির কতই না ভাবালুতা! গ্যালারিতে বসে ম্যারাডোনা বড্ড নস্টালজিক হয়ে পড়েন। বিবাগী সমর্থকরা আকাশ পানে চেয়ে জয়ের প্রার্থনা করেন। তাঁরা শেষ দুই ম্যাচ দেখে বেদনায় বিধুর হয়েছেন। আজও কী সেটারই পুনরাবৃত্তি?
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে যা কিছু করার মেসিকেই করতে হবে। এজন্য তাঁর উচিত হবে আকাশ পানে না তাকিয়ে দিগন্তে চোখ মেলানো। দিগন্ত রেখায় দূরত্বের শেষ আছে, সেখানে আসমান-জমিনে চুম্বিত মিলন হয়েছে। সুতরাং দিগন্তে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে লক্ষ্যটাকে দূরে নয় বরং বেশ কাছেই মনে হবে।
ক্রিকেটের মত লিত্যি লিত্যি ফুটবল খেলা হয় না। চার বছর পর আবার যখন দেখা হবে মেসি তখন আর থাকবে না। তাই জয় নিয়ে দুর্ভাবনায় না থেকে ভাল খেলা উপহার দেয়াটাই মেসির প্রধানতম কাজ। তাহলে চার বছর পর কেন, ১৬ বছর পরও মানুষ মনে রাখবে। খারাপ খেললে উদিনকার কথাও মানুষ ভুলে যায়। তাই আজকে (২৬-০৬-১৮) মেসি শুধু মাঠের এক মুরাত খাড়া হয়ে থাকলে লাভ হবে না। কড়া মার্কিং এড়ানোর জন্যে মাঠের এই মুরা ঐ মুরা সবমুরাতেই দাপিয়ে বেড়াতে হবে। সুখ সাগরের মাঝে মেসি অনাবিল ভেলা ভাসিয়ে বিহ্বল থাক-এই প্রত্যাশায় থাকলাম। [email protected]