বগুড়ায় করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ২০০ তে ঠেকলো

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২০ ০৬:১৭ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৩২০ বার।

বগুড়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ২০০ তে গিয়ে ঠেকলো। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার রাতে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ইসরাজুল হক (৭০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর মধ্য দিয়ে গেল ৬ মাসে জেলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা দুই শতকে পৌঁছালো। এর ফলে জেলায় করোনায় মোট আক্রান্তের বিপরীতে মৃত্যুর হার দাঁড়ালো ২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এছাড়া জেলায় ২০ নভেম্বর পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৫৩০জন এবং এর বিপরীতে সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ৮৬৩জন। 


বগুড়ায় গত ১ এপ্রিল ঢাকাফেরত রংপুরের এক বাসিন্দার শরীরে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সনাক্ত হয়। আর জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ২২ মে রাতে। ঢাকাফেরত সাবেক সাংসদ কামরুন নাহার পুতুল করোনা উপসর্গ নিয়ে ওইদিন রাতে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি হন। নমুনা সংগ্রহের কয়েক ঘন্টা পর রাত সোয়া ১১টার দিকে তিনি মারা যান। স্বাস্থ্য বিভাগ পরবর্তীতে জানায়, সাবেক সাংসদ কামরুন নাহার পুতুল করোনা পজিটিভ ছিলেন।


জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মে মাসে মাত্র ১জনের মৃত্যু হলেও পরবর্তী জুন মাস থেকে মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটা লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে এবং তা আগস্ট মাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। জুন মাসে করোনায় ৫১জনের মৃত্যু হয়। এরপর জুলাই ও আগস্ট মাসে ৫২জন করে আরও ১০৪জন মারা যান। অর্থাৎ ওই তিন মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট ১৫৫ মানুষের মৃত্যু হয়। শুধু মৃত্যুই নয় জুন মাসে করোনায় আক্রান্তের হারও ছিল সর্বোচ্চ প্রায় ৬০ শতাংশ। এমনকি আক্রান্তদের মধ্যে ২১ জুন একদিনে সর্বোচ্চ পাঁচজনের মৃত্যু হয়। তবে সেপ্টেম্বর থেকে মৃত্যুর সংখ্যা হ্রাস পেতে শুরু করে। ওই মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় মোট ২৭জন মারা যান। এরপর অক্টোবর মাসে ১০জন এবং ২০ নভেম্বর পর্যন্ত ৭জনের মৃত্যু হয়েছে।
 

 

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পরীক্ষা বিবেচনায় গেল অক্টোবর মাসে করোনার সংক্রমণ কম ছিল। ১ অক্টোবর ১১৫টি নমুনা পরীক্ষায় মাত্র ৫ জনের শরীরে  করোনা ভাইরাসের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে। অর্থাৎ আক্রান্তের হার ছিল ৪ দশমিক ৩৪। অবশ্য নভেম্বরের শুরু থেকে করোনার সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে। সর্বশেষ গত ২০ নভেম্বর পরীক্ষা বিবেচনায় আক্রান্তের হার ছিল ২৬ দশমিক ২১। ওইদিন ১০৩টি নমুনা পরীক্ষায় ২৭জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। এদের মধ্যে ২৫জনই  বগুড়া সদরের বাসিন্দা। বাকি দু’জনের একজনের বাড়ি শিবগঞ্জ এবং আরেকজন শেরপুরের বাসিন্দা।
 

 

বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন জেলায় করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেছেন, স্বাস্থ্যবিধি অর্থাৎ মাস্ক পড়া, নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা- এগুলো অনেকে অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছিলেন। কিন্তু কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে সেগুলো আর মানতে চাইছেন না। ফলে করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। ডা. মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন সকলকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমাদেরকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে-এর কোন বিকল্প নেই।’