বঙ্গবন্ধুর বর্নাঢ্য জীবনী ও ইতিহাস জানাতে

নওগাঁ জেলা প্রশাসনের অনুপ্রেরণার বাতিঘর নামে ব্যতিক্রমী গ্যালারী স্থাপন

 এম আর ইসলাম রতন,নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২০ ১২:৩৫ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৫১ বার।

সর্ব কালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই নামটির সাথে জড়িয়ে আছে বাঙালি জাতির আবেগ-অনুভূতি আর হাজারো ইতিহাস। নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজবিুর রহমান এর বর্নাঢ্য জীবনী ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতেই নওগাঁ জেলা প্রশাসন ” অনুপ্রেরণার বাতিঘর” নামে ব্যাতিক্রমী  এক গ্যালারী স্থাপন করেছে। ইতিমধ্যে গ্যালারী তরুণ প্রজন্মের নিকট আগ্রহ সৃষ্ঠি করেছ। তাই বই হাতে, জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জানতে ব্যাস্ত নতুন প্রজন্মসহ সব শ্রেনীর পেশার মানুষ। নওগাঁ ‘অনুপ্রেরনার বাতি ঘর’ চত্বরে এমনই ভিড় থাকে প্রতিদিন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রবেশ মুখের বাম দিকেই গড়ে তোলা হয়েছে এই গ্যালারী। যেখানে একটি ঘরে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী, যুদ্ধকালীন ইতিহাস ও তার পারিবারিক ইতিহাস জানাবার জন্য বইসহ রাখা হয়েছে বিভিন্ন উপকরন। প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষরা এখানে এসে খুঁজে ফিরেন জাতীর এই শ্রেষ্ঠ সন্তানকে। এছাড়াও এ চত্বরে বঙ্গবন্ধুকে জানার পাশাপাশি উপজেলা ভিত্তিক বিশ্রামাগার ও মা-শিশুদের জন্য ব্রেষ্ট ফিডিং কর্নার নির্মান, বঙ্গবন্ধুর নওগাঁ সফর ও প্রতিদিনের দৈনিক পত্রিকা রাখা হয়। 
লাল-সবুজ বাংলার প্রতি ইঞ্চিতেই জড়িয়ে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম। রয়েছে বর্ন্যাঢ্য ইতিহাস। আর সেইসব ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই নেওয়া হয়েছে এই উদ্যোগ। এখানে বই পড়তে আসা কয়েকজনের সাথে কথা হলে তাদের মধ্যে নওগাঁ সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী মহিবুল ইসলাম, আকতারুজ্জামান, পত্নীতলার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, ‘অনুপ্রেরনার বাতি ঘর’ - এ এসে আমাদের অনেক ভালো লাগছে। এখানে এসে বঙ্গবন্ধুর জন্ম, বঙ্গবন্ধুর বেড়ে উঠা, বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস, যুদ্ধকালীন ইতিহাস ও তার পারিবারিক ইতিহাসসহ অনেক কিছু জানতে পারলাম। যা আগে এত কিছু জানা ছিলো না। জানা থাকলেও সঠিক জানতাম না। তারা আরও বলেন, নতুন প্রজন্মর জন্য এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ন। তাই জেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। 
নওগাঁ সদর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো: মাহব্ুুবুর রহমান বলেন 
জেলা প্রশাসনের বাস্তবায়নে প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩ টি বাথরুম (নারী ও পুরুষ  আলাদা), ১১টি উপজেলার নামে ১১টি ড্রিল শেড,১৮টি স্টিলের বসার স্থান তৈরী করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক এবং মহিলা ও শিশুদের জন্য আলাদা শেড রয়েছে। শিশুদের জন্য একটি ভারসাম্য রক্ষা ও একটি দোলনা তৈরী করা হয়েছে। প্রথমে বিশ্রামাগারটি নাম দেয়া হয়ে ছিল প্রশান্তিরছায়া’। পরে সেই স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে অনুপ্রেরণার বাতিঘর”।
নওগাঁ সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ শরিফুল ইসলাম খাঁন বলেন জেলা প্রশাসক ও আদালত চত্তরে প্রবেশের মুলগেট থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দুরুত্ব প্রায় ২শ মিটার। জেলা প্রশাসকসহ সকল কর্মকর্তাকে মুল গেটের বাম দিকে দিয়ে প্রবেশ করতে হয়। গত এক বছর আগেও সেই বাম দিকটা ছিল জঙ্গলে ভরা। দিনের বেলাও সেখান থেকে শিয়াল বেরোতো। মানুষ সেখানে প্রসাব করতো। ছিল দূর্গন্ধময় স্থান। এক কথায় বলতে গেলে জঙ্গলটি ছিল খুবই দৃষ্টিকটু। সেখানে সুন্দর পরিবেশ করে বিশ্রামাগার তেরী পাশাপাশি ” বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনুপ্রেরণার বাতিঘর” নামে যে গ্যালারী স্থাপন করা হয়েছে তা প্রশংসার দাবি রাখে। এই উদ্যোগ যেমন আমাদের নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুকে জানতে এবং প্রকৃত ইতিহাস সর্ম্পকে অবগত করবে,ঠিক একইভাবে সাধারণ মানুষ স্বস্থিতে সেখানে বিশ্রাম নিতে পারবে। তাই জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগকে তিনি সাধুবাদ জানান।
জেলা প্রশাসনের এমন কাজকে স্বাগত জানিয়ে সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুন অল রশিদ বলেন, এমন কাজে খুশি জেলার মুক্তিযোদ্ধারাও। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মগ্রহন ,কিভাবে রাজনীতিতে আসা,তাঁর জীবনের ইতিহাসটা কি অনেকেই আমরা জানি না। নতুন প্রজন্ম ও সাধারন মানুষও জানে না। তাই এটা নতুন প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। 
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো: হারুন-অর-রশীদ জানান, মুজিব বর্ষে বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে এমন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তরুণ প্রজন্মের মাঝে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিনাশী চেতনাকে ছড়িয়ে দিতে, তাঁর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিতে এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে তারুণ্যকে উজ্জীবিত রাখতে স্থাপিত করা হয়েছে 'অনুপ্রেরণার বাতিঘর'। খোকা থেকে শেখ মুজিব, শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির পিতা, এই যে তাঁর সংগ্রামি জীবন সম্পর্কে জানতে পারবে ততবেশি নতুন প্রজন্ম দেশ প্রেমে জাগ্রত হবে ও বাংলাদেশকে ভালোবাসবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর উপর যত বই লেখা ও বঙ্গবন্ধুর লেখা বই আছে সেগুলো এখানে তুলে ধরা হয়েছে। এখানে ডিজিটাল ডিভাইস রাখা হয়েছে। এই ডিভাইসের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর উপর সবগুলো বই ডাউনলোড করে রাখা হয়েছে যাতে করে নতুন প্রজন্মরা এখানে এসে এগুলো পড়ে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে পারে। তাই নওগাঁবাসী ও নতুন প্রজন্মের জন্য আমরা ‘অনুপ্রেরনার বাতি ঘর’ নামে বঙ্গবন্ধুর এই গ্যালারী স্থাপন করা হয়েছে।