ব্রেক্সিটের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ আজ

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারী ২০১৯ ০৫:৩৫ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৫০ বার।

যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ত্যাগ বা ব্রেক্সিট ইস্যু ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হতে যাচ্ছে আজ। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ ইস্যুতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে। এতে দেশটির এমপিরা ইইউ’র সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির অনুমোদন দিলে এ নিয়ে চলমান বিতর্কের অবসান ঘটবে। সমঝোতার মধ্য দিয়ে ইইউ ছাড়বে যুক্তরাজ্য। আর শেষ পর্যন্ত তারা চুক্তি প্রত্যাখ্যান করলে এ বিতর্ক, এ নিয়ে অনিশ্চয়তা আরও দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকবে।

২০১৯ সালের ২৯ মার্চের মধ্যে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হয়ে যাওয়ার কথা। বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক কেমন হবে তা নিয়ে জোটটির সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছেন থেরেসা। সে ব্রেক্সিট চুক্তি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অনুমোদন করানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

মঙ্গলবারের এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ২০১৮ সালের ১১ ডিসেম্বর। তবে এমপিরা চুক্তিটি প্রত্যাখ্যান করতে পারেন, এমন আশঙ্কায় শেষ মুহূর্তে তা স্থগিত করা হয়।

দীর্ঘ প্রায় এক মাস পর মঙ্গলবার সেই ভোটগ্রহণের প্রাক্কালে এ নিয়ে এমপিদের সতর্ক করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তির সমালোচকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এ চুক্তি প্রত্যাখ্যান করা হলে একটি চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের ঝুঁকি তৈরি হবে।

বিরোধী দল লেবার পার্টির এমপিরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে মঙ্গলবারের ভোটাভুটিতে ‘লজ্জাজনক পরাজয়ের’ মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছেন। লেবার নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন।’ তবে সমালোচকদের প্রতি ফের চুক্তিটি বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন থেরেসা মে। তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি ও নিরাপত্তার সুরক্ষায় ব্রেক্সিট ইস্যুতে এমপিদের ভূমিকা ইতিহাসে লেখা থাকবে।

চুক্তির বিপক্ষে ভোট দেবে লেবার পার্টিসহ অন্য বিরোধী দলগুলো। এর পাশাপাশি থেরেসা মে’র নিজ দল কনজারভেটিভ পার্টিরও প্রায় শখানেক এমপি চুক্তির বিপক্ষে ভোট দেবেন। ইতোমধ্যেই পার্লামেন্টে নানা প্রস্তাব উত্থাপন ও পাসের মাধ্যমে ব্রেক্সিট কার্যকরে সরকারের ক্ষমতা অনেকটাই সীমিত করে ফেলতে সমর্থ হয়েছেন বিরোধীরা।

মঙ্গলবারের ভোটাভুটিতে পার্লামেন্ট চুক্তি প্রত্যাখ্যান করলে তিন দিনের মধ্যে বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপনের সুযোগ পাবেন প্রধানমন্ত্রী। পার্লামেন্ট সেটিও প্রত্যাখ্যান করলে হাঁটতে হবে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের পথে। তবে বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন এরইমধ্যে চুক্তির বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার কথা জানিয়ে বলেছেন, পার্লামেন্ট চুক্তি পাসে ব্যর্থ হলে তার দল অবিলম্বে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানাবে। সেক্ষেত্রে মধ্যবর্তী নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ী দলের হাতেই যাবে ব্রেক্সিট কার্যকরে নতুন করে সমঝোতা শুরুর অধিকার।

এ চুক্তি চূড়ান্ত করা নিয়ে বার বারই হোঁচট খেয়েছেন থেরেসা মে। ব্রেক্সিট চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে মতবিরোধকে কেন্দ্র করে পদত্যাগ করেছেন দুইজন ব্রেক্সিট বিষয়ক মন্ত্রী। অন্য মন্ত্রণালয়েরও কয়েকজন সরে দাঁড়িয়েছেন। পদত্যাগ করেছেন খোদ ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনও।

প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে-ও স্বীকার করেছেন, ইইউ’র সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি শতভাগ যথার্থ নয়। তিনি বলেন, ‘এটি নির্ভুল নয়। কিন্তু যখন ইতিহাস লেখা হবে তখন লোকজন এই পার্লামেন্টের সিদ্ধান্তের দিকে তাকাবে। তখন তারা প্রশ্ন তুলবে, ব্রেক্সিট ইস্যুতে ভোটাভুটির সময়ে আমরা অর্থনীতি ও নিরাপত্তা সুরক্ষা রেখে গিয়েছি কিনা।’

সবকিছুর পর ব্রেক্সিটের বিষয়ে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। এখন সবাই পার্লামেন্টের সেই সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছেন। সূত্র: বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান।