আবারও মাঠে নেমেছে বিডি ক্লিনি-বগুড়া: ঝাড়ু হাতে অংশ নিলেন এক মুক্তিযোদ্ধা

পুণ্ড্রকথা রিপোর্ট:
প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০১৮ ০৯:১১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৮১১ বার।

এবার বগুড়া শহরের অভিজাত জলেশ্বরীতলা এলাকার সড়ক এবং ফুটপাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালিয়েছে স্বেচ্ছাসেববী সংগঠন ‘বিডি ক্লিন-বগুড়া’। শুক্রবার সকালে ওই সংগঠনের ৩২জন সদস্য জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের সামনে থেকে জলেশ্বরীতলা কালিমন্দির এলাকায় ঝাড়ু দিয়েছেন এবং সড়ক এবং ফুটপাতে পড়ে থাকা ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করে তা তুলে নিয়ে গেছেন।

এবারের পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অনেকের সঙ্গে বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী সরিফুল মাসুদও অংশ নিয়েছেন। আয়োজক সংগঠনের অন্যতম মুখপাত্র আকবর আহমেদ জানান, মুক্তিযোদ্ধা সরিফুল মাসুদ একাত্তরে যেভাবে অস্ত্র দিয়ে পাক বাহিনীকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করেছেন তেমনি এবার তিনি ঝাড়ু হাতে ময়লা পরিষ্কারে নেমেছেন। তাঁকে পেয়ে বিডি ক্লিন-বগুড়ার সদস্যরা দারুণ ‍উৎসাহিত। মুক্তিযোদ্ধা সরিফুল মাসুদ অনলাইন পত্রিকা ‘পুণ্ড্রকথাডটকমডটবিডি’র উদ্যোক্তা পরিষদের সভাপতি।

গত ২৯ জুন প্রথম বগুড়া শহরে প্রথম পরিচ্ছন্নতা কার্য্ক্রম শুরু করে বিডি ক্লিন-বগুড়া। ওইদিন সকাল ৯টায় শহরের কেন্দ্রস্থল সাতমাথা থেকে অভিযান শুরু হয় এবং বেলা ১১টায় দুই নম্বর রেল গেটে গিয়ে শেষ হয়। অভিযান শেষে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতি শুক্রবার তাদের এই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালানোর কথা বলা হয়।  শুধু সড়ক আর ফুটপাতই নয় স্কুল-কলেজ, খেলার মাঠেও তারা পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাবেন। পাশাপাশি পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে গণসংযোগ এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রমও তারা চালিয়ে যাবেন।

পুর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ৬ জুলাই শুক্রবার সকালে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেন বিডি ক্লিন-বগুড়ার স্বেচ্ছাসেবীরা। কথা ছিল জলেশ্বরীতলা কালিবাড়ি মোড় থেকে ইয়াকুবিয়া স্কুল পর্যন্ত পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানোর। কিন্তু এবার স্বেচ্ছাসেবীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় জজ কোটের সামনের সড়কে ঘোড়ার মোড় থেকে ইয়াকুবিয়া স্কুল পর্যন্ত অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী সকাল ৯টায় ঘোড়ার মোড় থেকে সবাই কাজে নেমে পড়েন। এ সময় একটি গ্রুপ আলতাফুন্নেখেলার খেলার মাঠ হয়ে ইয়াকুবিয়া স্কুলের দিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা শুরু করেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি শুরু হওয়ায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবনের সামনে থেকে কালিমাড়ি মোড় পর্যন্ত পরিচ্ছন্নতা চালিয়ে অভিযান শেষ করতে হয়।

ওই সংগঠনের মুখপাত্র আকবর আহমেদ বলেন, প্রথম দিন পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের খবর ও ছবি ফেসবুক এবং অনলাইন সংবাদপত্রে দেখার পর অনেকেই এই কাজে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে তাদের কাছে ফোন করেন। তাদের অন্যতম হলেন মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী সরিফুল মাসুদ। তিনি বলেন, সরিফুল মাসুদ অভিযানে অংশ নিয়ে সড়ক পরিষ্কারের পাশাপাশি নিজে বিভিন্ন দোকানে ও ফল বিক্রেতাদের সঙ্গে দেখা করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে তাদের উদ্বুদ্ধ করেন।

পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেওয়ার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করতে গিয়ে সরিফুল মাসুদ বলেন, আমি নিজে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে ভালবাসি। আমরা যদি প্রত্যেকেই এভাবে পরিচ্ছন্নতা অর্জন করতে পারি তাহলেই তো আমাদের চারপাশটা পরিচ্ছন্ন হয়ে উঠবে। বিডি ক্লিন-বগুড়ার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম আমার ভাল লেগেছে। যে কারণে আমি তাদের এই উদ্যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছি। শহরের সব নাগরিক যদি সপ্তাহের এই একটি দিন এভাবে অভিযানে অংশ নেন, তাহলে আমাদের প্রাণের এই বগুড়া শহর খুব দ্রুতই পরিচ্ছন্ন শহরে পরিণত হবে।

আকবর আহমেদ বলেন, আমাদের  এ কাজ করা দেখে নিশ্চয়ই আমাদের ছেলে-মেয়েরা  সড়কে, ফুটপাতে কিংবা যেখানে-সেখানে আবর্জনা ফেলবে না-এটাই আমাদের চাওয়া। এমনি করে আমাদের সদস্যদের আত্মীয়-স্বজন অবশ্যই সচেতন হবেন। আর এভাবেই  একদিন না একদিন আমরা বাংলাদেশকে ময়লা, আবর্জনা, জীবাণুমুক্ত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো।