বগুড়া শহর সাফাই: শুক্রবার এলেই ঝাড়ু হাতে বেড়িয়ে পড়েন সবাই!

মুজাহিদুল ইসলাম জাহিদঃ
প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০১৮ ১৫:০৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২৭৪৭ বার।

শুক্রবারের সকালটা একটু অন্যরকম হয়েই ধরা দেয় বগুড়াবাসীর কাছে। এদিন বিশ থেকে ছেষট্টি- প্রজন্মের ব্যবধান ভুলে সবাই ঝাড়ু হাতে বেড়িয়ে পড়েন শহরের কোন না কোন সড়কে। শুধু সড়কই পরিষ্কার নয় ফুটপাতের জঞ্জালও সাফ করে বেশ যত্নের সাথে। ‘বিডি ক্লিন-বগুড়া’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হয়ে ১৩ জুলাই শুক্রবারও যথারীতি শহরের ব্যস্ততম সাতমাথা-ইয়াকুবিয়া সড়কে নেমেছিলেন তারা। সকাল ৯টা থেকে এক ঘন্টার পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ওই সড়ক আর ফুটপাত রীতিমত ঝকঝকে-তকতকে হয়ে ওঠে।

তরুণদের সঙ্গে এবারও ঝাড়ু হাতে মাঠে নেমেছিলেন ৬৬ বছর বয়সী মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী সরিফুল মাসুদ। ‘পুণ্ড্রকথাডটকমডটবিডি’-কে তিনি বলেন, ‘শুক্রবার সকালটা আমি এখন অন্যভাবে উদযাপন করি। আমি শহর সাফাইয়ে কাজে নেমেছি-এটা ভাবতেই ভাল লাগে। আমার শহরকে আমি পরিচ্ছন্ন হিসেবে দেখতে চাই। যে কারণে পুরো একটি সপ্তাহ অপেক্ষায় থাকি, কবে শুক্রবার আসবে আর সকাল ৯টা বাজবে। যতদিন বাঁচবো ততদিন এ কাজ আমি চালিয়ে যেতে চাই। আশাকরি আমাদের মৃত্যুর পর ভবিষ্যত প্রজন্ম এই কাজটি এগিয়ে নিয়ে যাবে।’

গত ২৯ জুন প্রথম বগুড়া শহরে প্রথম পরিচ্ছন্নতা কার্য্ক্রম শুরু করে বিডি ক্লিন-বগুড়া। ওইদিন সকাল ৯টায় শহরের কেন্দ্রস্থল সাতমাথা থেকে অভিযান শুরু হয় এবং বেলা ১১টায় দুই নম্বর রেল গেটে গিয়ে শেষ হয়। অভিযান শেষে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতি শুক্রবার তাদের এই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালানোর কথা বলা হয়।  শুধু সড়ক আর ফুটপাতই নয় স্কুল-কলেজ, খেলার মাঠেও তারা পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাবেন। পাশাপাশি পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে গণসংযোগ এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রমও তারা চালিয়ে যাবেন। পরবর্তীতে গত ৬ জুলাই দ্বিতীয় দফায় শহরের অভিজাত জলেশ্বরীতলা এলাকায় সড়ক এবং ফুটপাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হয়। ওইদিন বিডি ক্লিন-বগুড়ার সদস্যরা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের সামনে থেকে জলেশ্বরীতলা কালিমন্দির এলাকায় ঝাড়ু দেন এবং সড়ক এবং ফুটপাতে পড়ে থাকা ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করে তা তুলে নিয়ে যান।
সংগঠনের অন্যতম মুখপাত্র আকবর আহমেদ জানান, ‘বিডি ক্লিন-বগুড়া’র পরিচ্ছন্নতা অভিযানের প্রতি শহরবাসীর আগ্রহ বাড়তে শুরু করেছে। যে কারণে প্রত্যেক শুক্রবার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছেন এবং পরিচ্ছন্নতা কাজে অংশ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি সবার সহযোগিতায় আমরা খুব দ্রুতই এ শহরকে পরিচ্ছন্ন একটা শহর হিসেবে গড়ে তুলতে পারবো।’