নওগাঁয় বিরল প্রজাতির ধূসর বর্ণের নীলগাই নামে একটি বন্য প্রাণী আটক: উৎসুক জনতার ভীড়

নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারী ২০১৯ ১৩:৫৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৫৯৫ বার।

নওগাঁর মান্দায় বিলুপ্তপ্রায় বিরল প্রজাতির একটি বন্যপ্রাণীকে আটক করেছে এলাকাবাসী। ধুসর বর্নের এই প্রানীটি মঙ্গলবার উপজেলার জোতবাজার এলাকা থেকে আটক করার পর উপজেলা নিবাৃর্হী অফিসারের নিকট সোর্পদ করা হয়। এটিকে নীলগাই (পুরুষ) বলে চিহ্নিত করেছেন রাজশাহীর বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগের পরির্দশক জাহাঙ্গীর কবির। ওইদিন সন্ধ্যায় প্রাণীটি রাজশাহীর বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগের নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন স্থানীয় উপজেলা নিবাৃহী অফিসার খন্দকার মুশফিকুর রহমান। 
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার জোতবাজার এলাকায় উদ্দেশ্যহীনভাবে ছোটাছুটি করছিল প্রাণিটি। দেখতে পেয়ে গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা ধাওয়া দিলে প্রাণ বাঁচাতে প্রাণিটি পুকুরে নেমে পড়ে। পরে সেটিকে কৌশলে আটক করা হয়েছে। পরে সেটিকে বেঁধে রেখে মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পুলিশ কর্মকর্তাসহ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে খবর দেন স্থানীয়রা।
উপজেলা প্রানীসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তা ডাঃ শায়লা শারমিন জানান ঘটনা জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাণীটিকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষন সহ প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। তিনি বলেন এর আগে বরেন্দ্র অঞ্চলে এধরনের প্রাণী কখনো দেখা যায়নি।
নওগাঁ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা উত্তম কুমার জানান, এটি প্রায় বিলুপ্ত নীলগাই । নীলগাই ভারতের কিছু অঞ্চলে রয়েছে। সম্ভবত দলছুট হয়ে ভারত থেকে সীমান্ত পেরিয়ে পথ ভুলে করে বাংলাদেশের লোকালয়ে প্রাণিটি চলে এসেছে। 
মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাণিটিকে উদ্ধার করে উপজেলা প্রশাসনের নিকট হস্তান্তর করা হয়। এসময় প্রাণীটিকে দেখার জন্য উৎসুক জনতা ভীড় করে। 

প্রাণবৈচিত্র বিষয়ক গবেষক পাভেল পার্থ জানান, নীলগাই বিলুপ্ত প্রায় বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণি। গতবছরের ৫ সেপ্টেম্বর ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলার যাদুয়ার গ্রাম থেকে একটি নীলগাই উদ্ধার করেছিল বনবিভাগ। তিনি বলেন, পৃথিবী ব্যাপি বিরল বন্যপ্রাণিদের অবৈধভাবে পাচার ও বিক্রির একটি বড় বাজার রয়েছে। বাংলাদেশেও বিভিন্ন সময়ে বিরল বন্যপ্রাণি পাচারের সময় আটক করেছে প্রশাসন। এই নীলগাইটিও পাচারের জন্য নেয়ার সময় ছুটে যেতে পারে বলে আমি শঙ্কা প্রকাশ করছি। এটির সুষ্ঠু তদন্ত হওয়ার দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি। গবেষক পাভেল পার্থ আরও বলেন, পার্বত্য অঞ্চল কিংবা শালবন যেখানে খাদ্য শৃঙ্খল ও নিরাপদ বিচরণ অঞ্চল রয়েছে এমন এলাকায় প্রাণিটিকে ছেড়ে দেয়া যেতে পারে। 
ইউএনও খন্দকার মুশফিকুর রহমান জানান, সংবাদ পেয়ে প্রাণিকে দ্রুত উদ্ধারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রাণিটিকে হেফাজতে নেয়ার জন্য রাজশাহীর বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।  
রাজশাহীর বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগের পরির্দশক জাহাঙ্গীর কবির জানান, নীলগাইটিকে হেফাজতে নিয়ে আগে চিকিৎসা দেয়া হবে। এরপর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানান তিনি।