বগুড়ায় পুলিশ সুপার আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ব্যাটালিয়ন স্কুল বিজয়ী

পুণ্ড্রকথা রিপোর্ট:
প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০১৮ ১৪:২৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৯২৮ বার।

বগুড়ায় পুলিশ সুপার আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পাবলিক স্কুল ও কলেজ বিজয়ী হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে হোটেল মম-ইন এ অনুষ্ঠিত তাৎক্ষণিক প্রীতি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় তারা প্রতিদ্বন্দ্বী বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল ও কলেজ দলের চেয়ে ১০ নম্বর বেশি পেয় বিজয়ী হয়।
নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার বহুমাত্রিক সেবার যথাযথ ব্যবহার বাড়ানোসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের আরও কার্যকর হতে সহায়তার জন্য নেওয়া ‘আস্থা’ নামে একটি প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিষয় ভিত্তিক ওই বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। নেদারল্যান্ড দূতাবাসের অর্থায়নে জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) ও বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সহযোগিতায় বগুড়ায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বেসরকারি সংস্থা গণ উন্নয়ন কেন্দ্র (জিইউজে)।

গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রকল্পটি পাইলট হিসেবে বগুড়াসহ বাংলাদেশের ৪টি জেলায় আস্থা’র কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। বগুড়ার তিন উপজেলা- সদর, নন্দীগ্রাম এবং সোনাতলার প্রতিটি ইউনিয়নকেই এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা, সিভিল সার্জন ডা. শামসুল হক, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার সিনিয়র সহকারি জজ জেসমিন আরা জাহান, ইউএনএফপি’এর ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ ইয়োরী কাটো, ও আইন ও শালিস কেন্দ্রের টিম লিডার খালেদা খানম। স্বাগত বক্তৃতা করেন জিইউকে’র নির্বাহী প্রধান এম. আব্দুস সালাম। অন্যান্যের মধ্যে বগুড়া জেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা শহিদুল হক, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম এবং ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশন-এর বগুড়া ব্যুরো প্রধান হাসিবুর রহমান বিলু বক্তৃতা করেন।

প্রকল্পের সঙ্গে প্রাসঙ্গিকভাবে বিতর্কের বিষয় নির্ধারণ করা হয়- ‘নারী ও শিশু নির্যাতন রোধে আইনের চেয়ে সামাজিক সচেতনতাই প্রধান’। বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল ও কলেজ বিষয়বস্তুর পক্ষে এবং আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পাবলিক স্কুল ও কলেজ বিপক্ষে তাদের যুক্তি তুলে ধরে। শ্রেষ্ঠ বক্তা হয়েছে বিজয়ী দলের দলনেতা আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া আফরিন জেরিন। বিতর্ক প্রতিযোগিতর আয়োজক বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা ফলাফল ঘোষণার পর উভয় দলের ৬ বিতার্কিকের হাতেই পুরষ্কার তুলে দেন।

প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুব্রত কুমার সাহা, বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মীর ত্বাইফ মামুন এবং বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন। মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন আল-আমিন।প্রতিযোগিতায় যারা অংশ নেয় তারা হলো: বগুড়া আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পাবলিক স্কুল ও কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্রী মারুফাতুন জান্নান, জান্নাত-ই-মাহজাবিন ও সাদিয়া আফরিন জেরিন এবং বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল ও কলেজের দশম  শ্রেণির জান্নাতুল ফেরদৌস, খায়রুন নাহার খুশি এবং আতিয়া ফারিয়া জিম। বিচারকরদের পক্ষ থেকে ড. মীর ত্বাইফ মামুন বলেন, বিতর্কের বিষয়বস্তু সময়োপযোগী। নারী ও শিশু নির্যাতন নির্মূল করতে হলে আইন এবং জনসচেতনতা-এই দুটোরই প্রয়োজন রয়েছে। তবে বিতর্কের বেলায় যেহেতু যুক্তি এবং তা খ-াতে পাল্টা যুক্তিকে গুরুত্ব দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে দু’ দলই ভাল বলেছে।
প্রকল্পটির উদ্বোধন শেষে সমাপনী বক্তৃতার আগ মুহুর্তে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা বিতর্ক প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করেন। ফলাফলে দেখা গেছে, বিজয়ী বগুড়া আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পাবলিক স্কুল ও কলেজ দল পেয়েছে ৬১ নম্বর। পক্ষান্তরে বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল ও কলেজ দল পেয়েছ ৫১ নম্বর।
পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বিতার্কিকদের আরও যুক্তি নির্ভর হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, ‘তোমাদের বক্তব্যে তথ্য এসেছে কিন্তু যুক্তির ধার তেমন ছিল না। ভবিষ্যতে তোমাদেরকে যুক্তি-পাল্টা যুক্তি এসবের প্রতি আরও যত্নবান হতে হবে।’