সংসদের মতো সিটিতেও সুষ্ঠু ভোট চান সিইসি

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৭:৩২ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১২২ বার।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনও সুষ্ঠু দেখতে চান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা।

আগারগাঁওয়ের নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়রের শূন্যপদে স্থগিত নির্বাচন, উত্তর ও দক্ষিণ সিটির নবগঠিত ৩৬টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে স্থগিত নির্বাচন এবং উত্তর সিটির ৯ ও ২১ নং সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের শূন্যপদে নির্বাচন উপলক্ষে রিটার্নিং অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের ব্রিফিং অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশ্যে সিইসি বলেন, আমরা চাই ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন আপনাদের পরিচালনায় সুষ্ঠু হবে, যেমনটি হয়েছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপনারা যে পরিশ্রম করেছেন, দক্ষতা দেখিয়েছেন এবং একটি সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন জাতির জন্য উপহার দিয়েছেন। সেজন্য আপনাদেরকে এবং আপনাদের মাধ্যমে আপনাদের যতো সহকর্মী আছেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন জায়গায় তাদের প্রতি আন্তরিকতা, অভিনন্দন থাকলো।

তিনি বলেন, ‘সচিবের স্বাক্ষরে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আচরণবিধিমালা আপনাদের কাছে পৌঁছে যাবে। এখানে ৩৩ বিধি রয়েছে, তার মধ্যে ৩০টি বিধির উপর আপনাদের দৃষ্টি ও নজর দিতে হবে। সেই বিধিগুলো প্রতিপালন কিভাবে হয়, সেটা যদি দেখতে পারেন তাহলে দায়িত্বপালন করা অনেকক্ষেত্রে সম্পন্ন হবে’। 

‘এখানে নির্বাচনে কে জয়ী হলো, সেখানে আপনাদের বিষয় নয়। আপনাদের বিষয় হলো আচরণবিধি তারা কিভাবে পালন করে সেটা দেখা। যাদেরকে জনগণ, ভোটার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। তিনি হবেন নির্বাচিত প্রতিনিধি’, যোগ করেন সিইসি। 

সিইসি বলেন, চারজন সহকর্মী কিন্তু একটা কমন কথা বলেছেন। আইনগত নির্বাচন করতে হবে। আপনাদের প্রতি যেমন মানুষের যে আস্থা, ভালোবাসা আছে, সেটি প্রয়োগ করেই এই নির্বাচনের আচরণবিধি কিভাবে প্রতিপালিত হয় তা দেখতে হবে। আপনারা জানেন যখনই ম্যাজিস্ট্রেটরা কোথাও গিয়ে আচরণবিধি মেনে চলার জন্য পরামর্শ দেন, তারা প্রার্থী বা যেই হোক না কেনো, সবাই কিন্তু অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে প্রতিপালন করেন। 

কেএম নূরুল হুদা আরো বলেন, সমস্যা হয় কাউন্সিলরদেরকে নিয়ে। কাউন্সিলররা এতো বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকেন, তারা কিন্তু, আইনকানুন অবনতির ক্ষেত্রে কোনো কোনো জায়গায় তাদের ভূমিকা থেকে যায়। তবে আপনাদের যে ক্ষিপ্রতা, নিরপেক্ষতা, আপনাদের বিচারিক মনোভাব নিয়ে যদি তাদের সামনে যান, দেখবেন প্রত্যেকে আপনাদের কথা শুনবে।

তিনি বলেন, আমি দেখেছি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়। কোনো কোনো জায়গায় একজন জুনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে কোনো প্রার্থীকে যদি জরিমানা করেছেন, প্রতিবাদ করেনি। সে যে দলেরই হোক না কেনো, জরিমানা দিয়ে ও ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ আর করবে না, এরূপ অঙ্গীকার দিয়ে গেছে। 

আমার সহকর্মীরা বলেছেন, আইনগত দৃষ্টিভঙ্গি ও বিচারিক মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। সেটা আপনাদের মধ্যে আছে একথায় আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। আপনারা যারা এখানে আছেন, তারা এদেশের যোগ্য নাগরিক। আপনাদের হাতে কোনো অনিয়ম হবে না এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। আপনারা কখনো, বিশেষ করে নিরপেক্ষতার ক্ষেত্রে আপনাদের আপোষ হবে নাম এ ব্যাপারে আমার কোনো সন্দেহ নেই। আপনাদের প্রতি মানুষের যে আস্থা, সম্মান, ভরসা সেই জায়গাটা আপনারা কখনোই তার সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করবেন না, সেটা আমি জানি, এমনটাই আশা করেন সিইসি।

তিনি বলেন, আমি বারবার বলেছি যে, দেশ আপনাদের হাতে ভবিষ্যতে গঠিত হবে। আপনাদের হাতে দেশ সম্পদশালী হবে, উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে, অগ্রযাত্রার দিকে এগিয়ে যাবে কোনো সন্দেহ নেই। আপনারা ছাড়া আর কেই-বা করবে। এই দেশের উন্নয়নের কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব কে নেবে। এখন যেখানে আছেন তার চেয়ে আপনাদের যোগ্যতার মাপকাঠিতে অনেক উপরে যাবেন, আরো বড় বড় দায়িত্ব নেবেন। সুতরাং আপনাদের এখনকার যে দায়িত্ব তা কখনো অবহেলার চোখে দেখবেন না।

অনুষ্ঠানে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।