এক কৈ মাছ মুখে রেখে আরেকটি ধরার চেষ্টা, অতঃপর...

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৭:১৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৪০ বার।

হাতে একটি কৈ মাছ। এমন সময় আরো একটি কৈ মাছ পায়ের কাছে কাদামাটির মধ্যে সুড়সুড়ি দিচ্ছে। সেটাকে ধরার লোভ কি আর সামলানো যায়! কিন্তু ওটাকে ধরতে গেলে তো হাতের কৈ মাছটাকে কোথাও রাখতে হবে। সঙ্গে তো কোনো মাছ রাখার পাত্রও নেই। তাহলে উপায়? মুহূর্তেই নুরুজ্জামানের মাথায় আসলো এক অভিনব উপায়। তিনি হাতের জ্যান্ত কৈ মাছটি মুখের মধ্যে পুরে দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরলেন। কিন্তু বিধি বাম! কৈ মাছ দাঁতের কামড়ে ব্যথা পেয়ে লাফালাফি শুরু করলো। ফলে দাঁতের ফাঁক দিয়ে গলে কিছুক্ষণের মধ্যেই কৈ মাছ গিয়ে আটকালো নুরুজ্জামানের গলায়।

শুরু হলো দৌঁড়াদৌড়ি। কবিরাজ ডাকো রে, বদ্যি ডাকো রে। কিছুতেই কিছু হলো না। পরে নুরুজ্জামানকে নিয়ে আসা হলো ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে নাক, কান, গলা বিভাগের প্রধান ডা.শফিক উর রহমানের তত্ত্বাবধানে নুরুজ্জামানের শ্বাসনালীতে অপারেশন করে বের করা হয় সেই কৈ মাছ। বর্তমানে নুরুজ্জামান শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.শফিক উর রহমান।

২৫ বছর বয়সী নুরুজ্জামান মূলত জেলে সম্প্রদায়ের লোক। তিনি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার টেকেরহাট এলাকার বাসিন্দা। গত শনিবার দুপুরে মাছ ধরতে গিয়ে তার গলায় কৈ মাছ আটকে যায়।

 

এ বিষয়ে ডা.শফিক উর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গলার সাথে যেহেতু শ্বাসনালী যুক্ত তাই আমরা প্রথমেই ট্রাকিওস্টোমি করে শ্বাসনালীটা বাইপাস করি। তারপর রোগীকে অজ্ঞান করে গলার ভেতর মেশিন দিয়ে কেটে কৈ মাছ বের করে আনি। কৈ মাছের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর কাঁটা উল্টো দিকে থাকে। এর কারণে শ্বাসনালী ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এজন্য আমার রোগীকে অজ্ঞান করি। পরে গলার নিচে সামনে একটা ছিদ্র করি। এটাকে ট্রাকিওস্টোমি বলে। এটা করে আমরা কৈ মাছটাকে বের করেছি। রোগী শঙ্কামুক্ত এবং এখন সে ভালো আছে। রোগীর কোনো সমস্যা নেই। সাত দিন পরে গলার সামনে আমরা যে ছিদ্র করেছি সেটা সেলাই করে বন্ধ করে দিবো। তাহলেই সে বাড়ি যেতে পারবে। তবে এই ঘটনা থেকে অবশ্যই সবাইকে সাবধান হতে হবে।