স্থানীয় সাংসদের অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ

রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ সড়কে বেহাল দশা, দূর্ভোগে মানুষের জনজীবন চরম পর্যায়ে

কাজী আনিছুর রহমান, রাণীনগন (নওগাঁ)
প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২১ ১২:১৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৮২ বার।

দরপত্রে ১ বছর আগে কাজ শেষ হওয়ার চুক্তিনামা থাকলেও এখনও সড়ক পাকা করণের কাজই শুরু হয়নি নওগাঁর রাণীনগর-আবাদপুকুর ও কালীগঞ্জ সড়ক প্রায় ২২ কিলোমিটার কালভার্টসহ সড়কের কাজ। যান্ত্রিক দুর্ভোগ আর ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে কারণে দূর্ঘটনার শঙ্কা নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে ছোট বড় যনবাহনগুলো।  অপরদিকে সড়কে ধুলাবালির কারণে কৃষি জমিতে ফসলের ক্ষতি আশঙ্কায় দিন পার করছেন স্থানীয় কৃষক ও পথচারীরা।

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এসপেক্টা ইঞ্জিনিয়ারিং নিমিটেড এবং ওয়াহেদ কনস্ট্রাকশান নিমিটেড দরপত্রের মাধ্যমে ২০ নভেম্বর ২০১৮ সালে পাকা সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু ১৯ নভেম্বর ২০১৯ সালে শেষ করার কথা থাকলেও এখনও সড়কে পাকা করণের কাজই শুরু করতে পারেনি প্রতিষ্ঠান দুটি। গেল দুই বছরে নির্মাণ কাজ নির্ধারিত শুরুর স্থান থেকে শেষ পর্যন্ত পূর্বের পিচঢালা সড়কে আস্করণ উঠিয়ে দেওয়ায় বর্তমানে ধূলা আর উঁচু নিচু সড়ক হওয়ায় যান্ত্রিক চলাচলে দূর্ভোগ চরমে। রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ সড়কে জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন ধান বোঝাই বিভিন্ন মালবাহী শত শত ভারী যানবাহন ট্রাক, ট্রাক্টর, মিনি ট্রাক, ভটভটি-লছিমন, টমটম, অটো ভ্যান মোটরবাইকসহ লাখো মানুষ প্রতিনিয়ত চলাচল করে থাকে। শুধু যানবাহনের ক্ষতিনা। যাত্রীদেরও অনেক কষ্ট সহ্য করে যানবাহনগুলোতে চলাচল করতে হচ্ছে দীর্ঘ ৩ বছর যাবত। পরিবহন চালকদের পূর্বে যেখানে ৪-৫ বার এই সড়ক দিয়ে যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে পারতেন। সেখানে এখন অসহনীয় সড়কের কারণে ১-২ বার যাতায়াত করতে পারছেন। এতে করে তারা আর্থিক সংকটে পড়ছেন এবং তাদের যানবাহনগুলোও অনেক ক্ষতি হচ্ছে বলে জানান তারা।

অপরদিকে সড়কে বেহাল অবস্থার কারণে যাত্রীদের ধুলাবালি ও ঝুাঁকুনির কারণে তাদের শারীরিক সমস্যা হয়ে থাকে বলে জানান চলাচলের যাত্রীরা। সড়কে ধুলায় পাশে থাকা সবুজ গাছগুলো যেন ধুলায় বাদামী বর্ণ ধারণ করে আছে। আর কৃষি জমিগুলো সড়কে ধুলার কারণে ফসলহানীর সম্ভাবনার আশংকায় দিন পার করছেন স্থানীয় কৃষকরা। সড়কে চলাচল পরিবহন চালক, যাত্রী ও স্থানীয়দের দাবী অতিসত্বর পাকা সড়ক নির্মাণের কাজ শেষ করে এমন দূর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে।

এদিকে সড়কে বেহাল অবস্থার কারণ জানতে নওগাঁ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (সওজ) সাজেদুর রহমান বলেন, নিদিষ্ট সময়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দুটি তারা কাজ শেষ করতে পারেনি। গত অর্থ বছরে করোনার কারণে পূর্বের পাওনা বকেয়া থাকলেও এই অর্থ বছরে তা পরিশোধ করা হয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দুটিকে। তিনি আরো জানান, বকেয়া পরিশোধ করার পরও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দুটি তাদের গাফিলাতির কারণে এখনও কাজ শুরু করেনি। এই বিষয়ে সড়ক বিভাকের উর্ধতন কর্মকর্তা দ্রুত কাছ শেষ করার জন্য চুড়ান্ত নোটিশ প্রদান করা হয়েছে প্রতিষ্ঠান দুটিকে। যদি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দুটি কাজ শুরু না করে জরিমানাসহ তাদের কাজ বাতিল করে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ করে সড়কের নির্মাণের কথা জানান নওগাঁ সড়ক বিভাগের এই কর্মকর্তা।

এতে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন হেলাল। তিনি জানান, সড়কে চলাচলে ব্যক্তিদের ধুলার কারণে চেনার উপায় থাকেনা। এলাকার মানুষের সুবিধার জন্য অতি দ্রুত সড়কে কাজ শুরু করতে সংশ্লিষ্টদের অবগত করা হয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে রাণীনগর-আবারপুকুর ও কালীগঞ্জ সড়কের কাজ শেষ হলে এলাকার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ উপকৃত হবে বলে জানান এই সাংসদ।

এদিকে নওগাঁর রাণীনগর-আবাদপুকুর ও কালীগঞ্জ সড়কের নির্মাণ কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিফ করেননি। ১৪ কোটি ১১ লক্ষ ১০ হাজার ৭ শত ৮৩ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হওয়া কালভার্টসহ সড়কের কাজ সময় শেষ হওয়ার সময়কাল শেষ হয়ে গেছে অনেক আগেই। কিন্তু সড়কের পাকাকরণের কাজ শুরু হয়নি এখনও। বর্তমানে দূর্ভোগের দিন পার করছেন এলাকার মানুষগুলো। এমন দূদর্শা ও দূর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতে সংশ্লিষ্টদের নিকট এর সু-ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন  এলাকাবাসী।