ইসির সার্ভারে ভুয়া এনআইডি আপলোড করে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে আত্মসাৎ

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২১ ১৩:৩০ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৪৩ বার।

প্রথমে কোনো একটি ব্যাংকের শাখাকে টার্গেট করত একটি প্রতারক চক্র। পরে সেই শাখাটিতে যেত লোন নেওয়ার জন্য। ফ্ল্যাটের বিপরীতে লোন নেওয়ার আবেদন করে। পরে ব্যাংক কর্মকর্তারা সেই ফ্ল্যাট পরিদর্শনে যান। কর্মকর্তারা যাওয়ার আগেই প্রতারকরা কোনো একটি ফ্ল্যাট বিক্রির সাইনবোর্ড ঠিক করে রাখে।

পরে সেখানে ব্যাংক কর্মকর্তাদের পরিদর্শনে নিয়ে যায় প্রতারকরা। পরবর্তীতে প্রতারকরা সেই ফ্ল্যাট বিক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) কপি নিয়ে আসে। সেই এনআইডির ছবি পরিবর্তন করে ভুয়া এনআইডি তৈরি করে ব্যাংকে জমা দেয়। পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সেই এনআইডি নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে যাচাই করে সঠিক দেখতে পেয়ে লোন অনুমোদন করে দেয়।

ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, ট্রেড লাইসেন্স ও টিন সার্টিফিকেট তৈরি করে এভাবে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে আত্মসাৎ করা একটি প্রতারক চক্রকে চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ।  গত ২ মার্চ রাজধানীর খিলগাঁও এবং রামপুরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় একটি প্রাইভেটকারও উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেফতাররা হলো- আল আমিন ওরফে জামিল শরীফ (৩৪), খ ম হাসান ইমাম ওরফে বিদ্যুত (৪৭), আবদুল্লাহ আল শহীদ (৪১), রেজাউল ইসলাম (৩৮) ও শাহ জামান (৩৯)। 

বুধবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার। 

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, এই চক্রের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র বিভাগের নিম্নপদের কয়েকজন কর্মচারী জড়িত রয়েছে। আমরা বিষয়টি এনআইডি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা ইতোমধ্যে ৪৪ জন কর্মচারীকে বহিষ্কার করেছে। বহিষ্কার হওয়ার আগে এদের কেউ কেউ এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে জড়িত হয়ে কাজ করেছে।

পুলিশ জানায়, গত ৭ ডিসেম্বর ও ১২ ডিসেম্বর একটি বেসরকারি ব্যাংক পক্ষ থেকে রাজধানীর খিলগাঁও এবং পল্টন থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় একটি ফ্ল্যাটের নামে ৮৫ লাখ টাকা লোন নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়। 

পরে মামলা দুটির তদন্তভার পায় গোয়েন্দা পুলিশ। গোয়েন্দা পুলিশের খিলগাঁও জোনাল টিম জানতে পারে, এই চক্রটি পেশাদার প্রতারক চক্র। তারা ভুয়া এনআইডি, ট্রেড লাইসেন্স ও টিন সার্টিফিকেট তৈরি করে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করে। প্রথমে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিপ্লব নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। 

গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, ভুয়া এনআইডি তৈরির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের নিম্নপদের কিছু কর্মচারী জড়িত। তাদের সহযোগিতায় ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করা হয়। ঋণ দেওয়ার সময় যখন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করে ওই সময়কালে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র সাময়িকভাবে সার্ভারে আপলোড করা হয়। পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই-বাছাই শেষ হলে ইসির সার্ভার থেকে সরিয়ে ফেলা হয় সেই ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্রটি।